বিশ্বজমিন
ভেনিজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট পদের বিরোধী প্রার্থী দেশ ছাড়লেন
মানবজমিন ডেস্ক
(১ মাস আগে) ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, ৩:১৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৬ পূর্বাহ্ন
ভেনিজুয়েলার সরকার বলেছে, বিরোধী দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী এডমুন্ডো গঞ্জালেস দেশ ছেড়েছেন। তিনি স্পেনে আশ্রয় চাইবেন। এর আগে পর্যন্ত তিনি পলাতক ছিলেন। কারণ, জুলাইয়ে সেখানে যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় তার ফল নিয়ে বিরোধীরা আপত্তি তুলেছিল। এরপর গঞ্জালেসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। দেশটিতে সরকার নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন কমিশন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকেই প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
ভেনিজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রড্রিগুয়েজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে বলেছেন, কয়েকদিন আগে রাজধানী কারাকাসে স্পেনের দূতাবাসে স্বেচ্ছায় অবস্থান নিয়ে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় চেয়েছেন গঞ্জালেস। তিনি স্পেন সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট আরও জানান, গঞ্জালেস নিরাপদে কারাকাস ছেড়ে যেতে রাজি হন। তারপর তিনি দেশ ছেড়েছেন।
স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেজ বলেছেন, নিজেই অনুরোধ করে দেশ ছেড়েছেন গঞ্জালেস। তিনি স্প্যানিশ এয়ার ফোর্সের একটি বিমানে আরোহন করেছেন। ভেনিজুয়েলার সব নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকারের প্রতি স্পেন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গঞ্জালেসকে স্পেনে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হবে।
এডমুন্ডো গঞ্জালেসের একজন আইনজীবী বার্তা সংস্থা এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন যে, স্পেনের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন গঞ্জালেস। তবে এ বিষয়ে আর বিস্তারিত জানাতে পারেননি তিনি। তিনি দেশ ছাড়ার পর ভেনিজুয়েলার নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা রাজধানী কারাকাসে আর্জেন্টিনার দূতাবাস ঘিরে ফেলে। সেখানে প্রেসিডেন্ট মাদুরোর বিরোধী ৬ জন রাজনীতিক আশ্রয় নিয়েছেন।
ভেনিজুয়েলার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, ওই দূতাবাসের ভিতর থেকে সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
গত ২৮শে জুলাই ভেনিজুয়েলায় নির্বাচন হয়। তাতে কর্তৃপক্ষ বিজয়ী ঘোষণা করে প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে। সেই থেকে নতুন করে রাজনৈতিক সংকটে দেশটি। বিরোধীদের দাবি, এডমুন্ডো গঞ্জালেস ব্যাপক ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন এমন তথ্যপ্রমাণ তাদের কাছে আছে। তারা ইন্টারনেটে এ বিষয়ক বিস্তারিত টালি প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায় বেশ ভালভাবে মাদুরোকে পরাজিত করে গঞ্জালেস বিজয়ী হয়েছেন। কারাকাস ভোটের ডাটা বিস্তারিত প্রকাশ না করা পর্যন্ত মাদুরোকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, বেশ কিছু লাতিন আমেরিকার দেশসহ অনেক দেশ।
নির্বাচনের পর কমপক্ষে ২৪০০ মানুষকে আটক করেছে প্রেসিডেন্ট মাদুরোর সরকার। জাতিসংঘ বলছে, এর মধ্য দিয়ে তারা সেখানে ভীতির এক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ৩০শে জুলাই থেকে আত্মগোপনে ছিলেন এডমুন্ডো গঞ্জালেস। সরকারের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিকদের বক্তব্য, বিবৃতির পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে তিনি আত্মগোপন করেন। সরকারি রাজনীতিকরা বলেন, গঞ্জালেসকে জেলে ঢুকানো উচিত। এটর্নি জেনারেলের অফিস প্রেসিডেন্ট মাদুরোর প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ। তারা গঞ্জালেসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে। এছাড়া আরও গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
৭৫ বছর বয়সী গঞ্জালেস এ বছর মার্চের আগে তেমন পরিচিত ছিলেন না। ওই সময় প্রধান বিরোধী জোট তাকে তাদের প্রার্থী হিসেবে নিবন্ধিত করে। বিরোধী দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে প্রথমে বাছাই ছিল ক্যারিশমাটিক মারিয়া কোরিনা মাচাডো। প্রাইমারিতে তিনি শতকরা ৯৩ ভাগ ভোট পান। কিন্তু অবস্থা বেগতিক দেখে সরকার নিয়ন্ত্রিত কর্তৃপক্ষ তাকে সরকারি দায়িত্বে নিষিদ্ধ করে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ফলে বিরোধীদেরকে একজন বিকল্প প্রার্থী বাছাই করতে হয়।
বিরোধীদের আরও একজন প্রার্থীকে নিষিদ্ধ করা হয়। তখন তারা এনমুন্ডো গঞ্জালেসের নাম প্রস্তাব করে। তাকেও নিষিদ্ধ করা হতে পারে এমন আশংকায় গঞ্জালেসকে বিরোধীরা ব্যাকগ্রাউন্ডে রাখে। অন্যদিকে তার পক্ষে জনগণের কাছে ভোট চেয়ে সারাদেশে প্রচারণা চালান মিস মাচাডো।