খেলা
ক্রিকেট বোর্ডে সুশাসন ফেরানোর দাবি
স্পোর্টস রিপোর্টার
৭ আগস্ট ২০২৪, বুধবারআন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল নিয়ম অনুসারে নির্বাচিত বোর্ড সভাপতি ও পরিচালকদের দিয়ে চলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যে কারণে সরকার পরিবর্তন হলেও আইসিসি’র চাহিদামতো বোর্ড সভাপতি হতে হবে নির্বাচিত। তাই এখনো বিসিবি’র পুরনো কমিটিই বহাল আছে। যদি বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন পদত্যাগ করে বোর্ড ভেঙে দেন তবেই নতুন নির্বাচনের সুযোগ আসবে গঠনতন্ত্র অনুসারে। তবে জরুরি পরিস্থিতিতে বর্তমান বোর্ডের কেউ উপস্থিত না থাকলেও অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে বিসিবি পরিচালিত হতে পারে। পরে তারা নির্বাচন আয়োজন করবে। এখন পর্যন্ত বিসিবি’র বর্তমান পরিচালক ও সভাপতির কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বারবার তাদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও কোনো প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে গতকাল বিসিবিতে হাজির হয়েছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবু। তার নেতৃত্বে বিসিবিতে প্রবেশ করে একটি মিছিলও। সেখানে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল। তারা সেখানে বেশ কিছুক্ষণ বোর্ড কক্ষে আলোচনা করেন। দৈনিক মানবজমিনকে তিনি জানান, তারা বিসিবি ও বাংলাদেশ ক্রিকেটে সুশাসন চান। তাদের দাবি যে সরকারই আসুক যেন ক্রিকেট বোর্ডে সুন্দর ও দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ ফিরে আসে। দেবব্রত পাল বলেন, ‘আমরা আজ বিসিবিতে এসেছিলাম। আমাদের সঙ্গে ক্রিকেটার ছাড়াও যারা দীর্ঘ ১২ বছর বিসিবি’র বর্তমান কমিটির নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তাদের সঙ্গেও কথা বলেছি। আমরা চাই যে সরকারই আসুক বা তারা যে বিসিবিতে সুশাসন ফিরিয়ে আনে ও ক্রিকেটকে দুর্নীতিমুক্ত রাখার সব ব্যবস্থা করেন। এতে করে ছাত্র-জনতা যে অভ্যুত্থানে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের যে নতুন স্বপ্ন তৈরি হয়েছে তার প্রতিফলন ঘটে।’
ছাত্র-জনতার তুমুল গণআন্দোলনের মধ্যে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পদত্যাগের পর দেশ পরিচালনায় গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরপর থেকে গুঞ্জন উঠেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বড় পরিবর্তন নিয়েও। নতুন সরকারের অধীনে ভবিষ্যতে কি হবে বিসিবিতে? তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। গতকাল বিসিবির সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের ক্লাব কর্মকর্তা। তাদের নিয়ে আসা ব্যানারে বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার কথা লেখা ছিল। ব্যানারে তারা নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন ‘ক্রিকেট সংগঠক’ হিসেবে। তাদের দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এতদিন বিসিবিতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। এসবের সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।
বিসিবি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবুর ও দেবব্রত পালের নেতৃত্বে গতকাল মিছিলটি বিসিবি’র সামনে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করে। সেখানে ছিলেন পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ, প্রাইম দোলেশ্বরের যুগ্ম-সম্পাদক মুশতাক হোসেন, মোহামেডানের কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম, জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন, বিসিবি’র সাবেক দুই কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান ও বোরহান উদ্দিনসহ আরও অনেকে। সেই সময় রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘২০১২ সালের পর আবার বিসিবিতে এসেছি। এসেছিলাম বিসিবি’র প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলতে। কিন্তু তাকে পাইনি। আমাদের দাবি, বিসিবি থেকে অযোগ্য সংগঠকদের সরিয়ে এখানে যোগ্য ক্রিকেট সংগঠকদের নিয়ে আসতে হবে।’ মিছিল নিয়ে আসা সংগঠকরা বিসিবি’র সভাকক্ষে গিয়ে বসেন। সেখানে তাদের সঙ্গে ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক দুই অধিনায়ক মিনহাজুল আবেদীন ও হাবিবুল বাশার। মিনহাজুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিসিবিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হোক।’ আর হাবিবুলের কথা, ‘সুদিনের আশা করছি।’ বিসিবি প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আাবেদিন নান্নুর সঙ্গে হাবিবুল বাশার টানা ৮ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। জাতীয় দলের নির্বাচক হিসেবে তাদের অধ্যায় শেষ হলো এই ১২ই ফেব্রুয়ারি। নির্বাচক হিসেবে তারা এখন সাবেক হলেও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করেনি বিসিবি। টাইগারদের সাবেক দুই অধিনায়ককে বিসিবিতে নতুন ভূমিকায় দায়িত্বপালন করছিলেন। অভিযোগ রয়েছে নির্বাচক থাকাকালীন তারা স্বাধীনভাবে দল নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে পারতেন না।