ঢাকা, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, সোমবার, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ রজব ১৪৪৬ হিঃ

শরীর ও মন

আলোচনা সভায় বক্তারা

তামাকের কারণে দেশের সাড়ে ৭ কোটি বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত

স্টাফ রিপোর্টার

(৫ মাস আগে) ১৫ জুলাই ২০২৪, সোমবার, ৬:৫৭ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০১ পূর্বাহ্ন

mzamin

দেশে ধূমপানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তামাকের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হন ৭ কোটি ৬২ লাখ মানুষ। এরমধ্যে ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করে এবং ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হন।

সোমবার রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনে (বিএমএ) আয়োজিত ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের পূর্বেই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশান অব দ্য রুরাল পুয়র (ডরপ) ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডরপের উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান।

বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের আর্থিক ও যেসব স্বাস্থ্য ক্ষতি হয় তা তুলে ধরে সভায় বলা হয়, দেশের ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ বা প্রাপ্তবয়স্ক ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করে। পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ । তামাকের ব্যবহারে পঙ্গুত্ব বরণ করে ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ। বিশ্বজুড়ে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর প্রধান আটটি কারণের ৬টির সঙ্গেই তামাক জড়িত। বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী তামাক ব্যবহারকারীদের তামাকজনিত রোগ যেমন ফুসফুসে ক্যান্সার হবার ঝুঁকি ৫৭ শতাংশের বেশি। এছাড়া তামাকজনিত অন্যান্য ক্যান্সার হবার ঝুঁকি ১০৯ শতাংশের বেশি। টোব্যাকো অ্যাটলাসের ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী তামাক ব্যবহারের কারণে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। অর্থাৎ প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ মারা যায়। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৮ সালের তথ্যে বছরে মোট মৃত্যুর ১৯ শতাংশ তামাকের কারণে হয়ে থাকে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ব্যয়ের পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, অথচ একই সময়ে (২০১৭-১৮) তামাকখাত থেকে সম্পূরক শুল্ক ও মূসক বাবদ অর্জিত রাজস্ব আয়ের পরিমাণ মাত্র ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। নীট ব্যায় প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা।

অনুষ্ঠানে ৬টি দাবি উপস্থাপন করা হয়। এগুলো হলো-ধূমপানের নির্ধারিত এলাকা বিলুপ্ত করা। বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন বন্ধ করা। তামাক কোম্পানির সিএসআর বন্ধ করা। খুচরা শলাকা ও তামাকদ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করা। ই-সিগারেট বা এইচটিপি নিষিদ্ধ করা। প্যাকেটে / কৌটায় সচিত্র সতর্কবার্তার আকার ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ করা।

 

সভায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের (বিএমএ)-এর মহাসচিব ডা. মো. এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশই অসংক্রামক রোগের কারণে ঘটছে। আর এই অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার। তাই এই অকাল মৃত্যু ঠেকাতে অবিলম্বে বিদ্যমান আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।

অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাবেক চেয়ারম্যান ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশননের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, আইনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তামাক কোম্পানিগুলো সিএসআর-এর নাম করে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। অন্যদিকে আধুনিকতার টোপ দেখিয়ে-সিগারেটের মতন নিত্য নতুন পণ্য তরুণদের হাতে তুলে দিয়ে বাজার সম্প্রসারণ করছে তারা। এই আগ্রাসন ঠেকানোর জন্য আইনকে শক্তিশালী করার আর কোন বিকল্প নেই।

হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম’র সভাপতি রাশেদ রাব্বির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সমাপনী বক্তব্য রাখেন ডরপের প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা এএইচএম নোমান, লীড পলিসি এডভাইজার, সিটিএফকের সাবেক সচিব এবং বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, টাঙ্গাইল জেলা সমিতির সভাপতি ড. মো. ইব্রাহীম হোসেন খান, হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল প্রমুখ।


 

শরীর ও মন থেকে আরও পড়ুন

শরীর ও মন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status