ঢাকা, ২১ জুন ২০২৫, শনিবার, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

হামলা, ভাঙচুর মারধরের অভিযোগে পুলিশের মামলা

স্টাফ রিপোর্টার
১৪ জুলাই ২০২৪, রবিবার

কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাধা, হামলা ও মারধরের অভিযোগে মামলা হয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনের পরিবহন বিভাগের ড্রাইভার খলিলুর রহমান বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলাটি করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। মামলায় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে  পুলিশের এপিসি ২৫-এর সামনের দুটি এসএস স্ট্যান্ড, বনেটের উপরে বামপাশে রেডিও এন্টেনা এবং ডানপাশের  পেছনের চাকার মার্টগার্ড এবং ওয়াটার ক্যাননের লুকিং গ্লাস ভাঙার অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন কর্মসূচির সময় কোনো ধরনের হামলা বা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের আলটিমেটাম দিয়েছেন। 

এজাহারে বাদী বলেছেন, গত ১১ই জুলাই কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ব ঘোষিত আন্দোলনের কর্মসূচি ছিল। সে মোতাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে অজ্ঞাতনামা ছাত্ররা জড়ো হন। পরে বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে তারা স্লোগান দিয়ে শাহবাগ মোড়ের দিকে আসতে থাকেন। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করেন। সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করে শাহবাগ মোড়ে পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন ও পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি এবং কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের এলোপাতাড়ি মারধর করে সাধারণ জখম করেন। তারপর তারা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে যেতে থাকেন। তখন তাদের বুঝিয়ে শুনিয়ে আবারো শাহবাগ মোড়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসার সময় বিএসএমএমইউর পাশে নিরাপদ স্থানে রাখা এপিসি-২৫ ও ওয়াটার ক্যাননের চারদিকে ঘেরাও করে অনেক আন্দোলনকারী উঠে উদ্যাম নৃত্য শুরু করেন এবং ওয়াটার ক্যানন ড্রাইভারকে গাড়ি থেকে জোরপূর্বক বের করার চেষ্টা ও গতিরোধ করেন। ফলে এপিসি-২৫-এর সামনের দুটি এসএস স্ট্যান্ড, বনেটের উপরে বামপাশে রেডিও এন্টেনা এবং ডানপাশের পেছনের চাকার মার্টগার্ড এবং ওয়াটার ক্যানন, বামপাশের লুকিং গ্লাস ভেঙে পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ছাত্রদের বুঝিয়ে শুনিয়ে এপিসি-২৫ ও ওয়াটার ক্যানন থেকে নামিয়ে আনে এবং পরিবেশ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে পানির বোতল, টেপটেনিস বল ও ইটের টুকরো ছুড়ে মারেন। যাতে অনেক পুলিশ সদস্য আঘাতপ্রাপ্ত হন। একপর্যায়ে অজ্ঞাতনামা ছাত্ররা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাহবাগের আন্দোলনে যোগদান করে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বারডেম হাসপাতালের গেটের ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশকে আহত করেন এবং বিভিন্নস্থানে দৌড়াদৌড়ি করে সেখানে অবস্থান নেন ও পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কটূক্তি করতে থাকেন। ছাত্ররা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা এবং শাহবাগ থানায় ছাত্রদের ধরে নিয়ে গেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করে এবং পুলিশকে মারার জন্য তেড়ে আসেন ও পুলিশকে বিভিন্ন ভয়ভীতি এবং হুমকি প্রদান করে শাহবাগ মোড় ত্যাগ করেন।

এদিকে, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গতকাল নিজ কার্যালয়ে বলেছেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্য কেউ ইন্ধন দিতে পারে, ঘটনাটি অন্যদিকে ধাবিত করারও চেষ্টা চলছে। তাই কেউ যদি আদালতের আদেশ না মানে, আন্দোলনের নামে জানমালের ক্ষতি করে, সড়ক অবরোধ করে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে যৌক্তিক কাজ সেটাই করা হবে। তিনি বলেন, কোটা শুধু বাংলাদেশে নয় অনেক দেশেই প্রচলন রয়েছে। কোটার বিরোধিতা করে কিছু লোক, কিছু শিক্ষার্থী রাস্তায় আন্দোলন করছে। এরই মধ্যে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি নিয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সুপ্রিম কোর্ট সবার ভরসাস্থল। আদালতের নির্দেশনা সবার মেনে চলা উচিত। কিন্তু কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে না গিয়ে তারা বিভিন্ন সড়কে বসে সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। অনেক জায়গায় গাড়িতে তারা হাত দিচ্ছে এবং একটি মামলাও রুজু হয়েছে।  তিনি বলেন, কেউ যদি মনে করে আদালত মানবে না, পুলিশের কথা মানবে না, তাহলে আমাদের করার কী আছে? আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে ক্ষমতা আমরা সেটাই করবো। কারণ আন্দোলনরতরা যদি জানমালের ক্ষতি করে, সড়ক অবরোধ করে এবং মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে যৌক্তিক কাজ সেটাই করা হবে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অন্য কেউ ইন্ধন দিচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে কিনা, ঘটনাটি অন্যদিকে ধাবিত করার চেষ্টা চলছে কিনা এসব নিয়ে ডিবির টিম ও পুলিশ কাজ করছে। কেউ যদি হাইকোর্টের নির্দেশনা না মেনে আন্দোলনের নামে সড়কে নেমে অবরোধ করে গাড়িতে হামলা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে তবে আমরা ধরে নিতে পারি অনুপ্রবেশকারীরাই এসব কাজ করছে।

 

পাঠকের মতামত

সেই পুরনো কৌশলে বাগে আনার চেষ্টা।

দয়াল মাসুদ
১৪ জুলাই ২০২৪, রবিবার, ৮:৫২ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status