বাংলারজমিন
সেতু ভেঙে রড নিয়ে গেছেন ঠিকাদার, ভোগান্তিতে লাখো মানুষ
আজাহারুল ইসলাম রাজু, ধামরাই (ঢাকা) থেকে
১১ জুলাই ২০২৪, বৃহস্পতিবারঢাকার ধামরাইয়ের ছোট কালামপুর-দেপাশাই কারাবিল এলাকার মধ্যবর্তী বংশী নদীর ওপর নতুন সেতু করে দেয়ার কথা বলে নির্মিত সেতুটি ভেঙে কয়েকটন রড নিয়ে গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ২২ মাস আগে সেতুটি ভাঙা হলেও এখনো নতুন সেতুর কাজ শুরু করা হয়নি। এতে কয়েক গ্রামের লাখো মানুষ নদী পারাপারে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। তবে ওই ঠিকাদার বিকল্প হিসেবে একটি বাঁশের সাঁকো বানিয়ে দিলেও তা পারাপারে মুত্যেুর ঝুঁকিতে রয়েছে।
জানা গেছে, ধামরাইয়ের সুতিপাড়া ইউনিয়নের ছোট কালামপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে সোমভাগ ইউনিয়নের দেপাশাই কারাবিল এলাকার মধ্যবর্তী বংশী নদীর ওপর প্রায় ১৫-১৬ বছর আগে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতু দিয়ে ট্রাকসহ সকল প্রকার যানবাহন ও কয়েকটি গ্রামের সাধারণ মানুষ চলাচল করতেন। হঠাৎ করেই ওই সেতুটি ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০২২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি ৫ কোটি ৩৮ লাখ ৬৬ হাজার ৩৫৮ টাকা ব্যয়ে ৭২ মিটার দৈর্ঘ্য একটি সেতু নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ পান মেসার্স কামারজানী-আনোয়ারা (জেভি) নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৩ সালের ২৪শে জুন সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও গত রোববার পর্যন্ত সেতুর কাজই শুরু করেনি। তবে প্রায় ২৩ মাস আগে পুরনো সেতুটি ভেঙে পাশেই একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আর ভাঙা সেতুর রড সরকারি খাতে জমা না দিয়ে তা নিয়ে যান ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এখন ওই বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন দেপাশাই, কারাবিল, ভালুম, শৈলান, পথহারা, আলোকদিয়া, চাপিল, নওগাঁও, কালামপুর, গোয়ালদী, কাশিপুরসহ ১২-১৩টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। বর্তমানে বাঁশের সাঁকোটি মাঝখানে ধসে পড়েছে। এখন পারাপারে চরম ঝুঁকি রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, আমাদের চলাচলের জন্য ঝুঁকিমুক্ত ভালো সেতুটি ভেঙে ফেলেছে ঠিকাদার। এখন আমরা প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষ চলাচল করতে পারছি না। আর কবে হবে নতুন সেতু তাও বুঝতে পারছি না। সব মিলে আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি। কারণ সেতু শুরু করার আগেই মেয়াদ শেষ হয়েছে বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সেতুটির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বলেন, কাজটি শুরু করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অনেকবার বলা হয়েছে কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু না করায় তার টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে। এখন নতুন করে টেন্ডার দিয়ে দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা প্রকৌশলী তরুণ কুমার বৈদ্য বলেন, পুরাতন সেতু ভেঙে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরকারিভাবে কোনো টাকা জমা করেনি। তবে এ সেতু ভেঙে রডের টাকা দিয়ে বিকল্প বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেন তারা। তিনি আরও বলেন, কাজ না করায় ওই ঠিকাদারের টেন্ডার বাতিল করা হয়েছে। আর বাঁশের সাঁকো নষ্ট হলে ওই ঠিকাদার ঠিক করবে বলে জানান তিনি।