শেষের পাতা
কুড়িগ্রামে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার উপরে
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে
২২ জুন ২০২৪, শনিবারকুড়িগ্রামে তিস্তা, দুধকুমার, ব্র্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীসহ ১৬ নদীর পানি প্রতিদিন বেড়েই চলছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি হয়েছে। গতকাল তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি ফুলবাড়ীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এর ফলে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন কাঁচাসড়কসহ উঠতি ফসল।
গতকাল কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাফসান জানি জানান, বিকাল ৩টায় দুধকুমার নদের পাটেশ্বরী পয়েন্টে পানি সামান্য কমে এখন বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি ২৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং ধরলা নদীর পানি ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অন্য সবগুলো নদ-নদীর পানিও বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে, নদীর পানি বাড়ার কারণে তিস্তা ও ধরলা নদীসহ অন্য নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন কাঁচাসড়ক। ডুবে গেছে বাদাম, পাটক্ষেত, ভুট্টা, মরিচ ও শাক-সবজি ক্ষেতসহ বিভিন্ন উঠতি ফসল। এসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিপাকে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, দুর্যোগকবলিত মানুষের সংখ্যা ৪ হাজার। একইসঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে ১৪৪ মে. টন জিআর চাল এবং নগদ ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ত্রাণ হিসাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তা বিতরণের প্রস্তুতি চলছে। নতুন করে ঢাকা থেকে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকা, ৯ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার এবং ৫০০ মে. টন চাল। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (ওয়েস্ট রিজিওন) একেএম তাহমিদুল ইসলাম উলিপুরের বেগমগঞ্জসহ বিভিন্ন ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি বলেন, একদিকে বন্যা আর একদিকে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার সবচেয়ে বেশি বিধ্বংসী ভাঙন প্রবণ। নদী ভাঙন প্রতিরোধে চলমান কার্যক্রম পরিদর্শনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিরসনে কি কি উদ্যোগ নেয়া যায় তা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিবেচনা করবে।