দেশ বিদেশ
যুদ্ধবিরতিতে রাজি হামাস, জর্ডানে সম্মেলন
মানবজমিন ডেস্ক
১২ জুন ২০২৪, বুধবারজাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ অনুমোদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিতে রাজি হয়েছে গাজার যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাস। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা বলেছেন হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি। তা সত্ত্বেও রাফায় সামরিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তারা গাজার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে আকাশ পথে হামলা চালাচ্ছিল। এতে শিশুসহ কমপক্ষে ৮ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ৭ই অক্টোবর থেকে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৩৭,১২৪। এ অবস্থায় জর্ডানে ‘এ কল ফর অ্যাকশন’ শীর্ষক আরব নেতাদের সম্মেলন শুরু হয়েছে। এতে যোগ দিয়েছে ৭৫টি দেশ। সেখানে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল সিসির পর ভাষণ দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরাঁ। তিনি বলেছেন, গাজায় যে গতিতে এবং যে মাত্রায় রক্তপাত ঘটানো হয়েছে তা কল্পনার অতীত। এ সম্মেলনে আরব নেতাদের সঙ্গে যোগ দেয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের। ওদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ইসরাইল মেনে নেবে না বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান। তিনি বলেছেন, অর্থহীন ও সমাধানহীন কোনো আলোচনায় অংশ নেবে না তার দেশ। এই আলোচনাকে ভিন্নখাতে নিয়ে যেতে পারে হামাস। জর্ডানের ডেড সী’র পাড়ে চলমান গাজা বিষয়ক সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, মহাসচিব হিসেবে আমার বিগত সময়ে গাজার মতো এত দ্রুতগতিতে এবং এত বিপুল পরিমাণ রক্তপাত ও হত্যাকাণ্ড দেখিনি।
ইসরাইলি সেনাদের বহুবার হামলায় গাজার মোট জনসংখ্যার শতকরা ৭৫ ভাগ বা কমপক্ষে ১৭ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তিনি বলেন, গাজার কোনো স্থানই নিরাপদ নেই। পরিস্থিতি অবর্ণনীয়। জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি সংকটময় অবস্থার চেয়েও খারাপ। গাজার হাসপাতালগুলো ধ্বংসস্তূপ। মেডিকেল সরবরাহ ও জ্বালানি সংকট তীব্র। এমনকি এর অস্তিত্বই নেই অবস্থায়। গাজার ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনির জন্য পর্যাপ্ত পানীয় পানি নেই। তারা ভয়াবহ অনাহারের মুখে। কমপক্ষে ৫০ হাজার শিশুর মারাত্মক অপুষ্টির চিকিৎসা প্রয়োজন। সম্মেলনে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি বলেন, ফিলিস্তিনিদের তাদের মর্যাদা ফিরে পাওয়া প্রয়োজন। গাজায় ফিলিস্তিনিরা হত্যাকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ এবং অনাহারে ভুগছে। তারা অবরুদ্ধ হয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা চান, তাদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য আমরা নতুন আশা দেখাই। শান্তিতে বসবাস করার অধিকার প্রয়োজন তাদের। আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় বিচার পাওয়ার অধিকার আছে তাদের। এসবের ওপর তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনা উচিত। গাজায় মানবিক সংকটে সম্মিলিত জবাব কি হবে সেখানে কীভাবে মানসম্পন্ন প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হবে, সেখানকার প্রয়োজন শনাক্ত হবে এবং কীভাবে তাদের প্রতিশ্রুতিতে সাড়া দিতে হবে- সেই লক্ষ্য নিয়ে এই সম্মেলন। এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকার কথা কাতারের নেতা, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট এবং জর্ডানের রাজার। সেখানে ব্লিনকেন উপস্থিত হলে সবার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন। এখান থেকেই গাজা সংকটের একটি সমাধান বেরিয়ে আসতে পারে।