দেশ বিদেশ
কালোটাকা সাদা করার সুযোগে নতুন করদাতা কমবে: আইবিএফবি
স্টাফ রিপোর্টার
১২ জুন ২০২৪, বুধবারকালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হলে সাধারণ মানুষ নতুন করে করদাতা হতে চাইবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। গতকাল আইবিএফবি আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আবদুল মজিদ বলেন, এবারের বাজেটেও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে, যা আগেও ছিল। তবে এবার বলা হয়েছে, টাকা সাদা করলে কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না। ফলে নানারকম প্রশ্ন উঠছে। কালোটাকা থাকলে প্রশ্ন উঠবেই, এটাই স্বাভাবিক। তবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থাকলে সাধারণ মানুষ নতুন করে করদাতা হতে চাইবে না। অর্থনীতিতে উত্তরণ না ঘটলে ২০২৬ সালে আমরা বিপদে পড়ে যাবো মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, এজন্য এখনই সংস্কার করে অর্থনীতির উন্নতি ঘটানো প্রয়োজন। আগে প্রতিবছর বাজেট বাড়তো ১২-১৩ শতাংশ, এবার যা কমে হয়েছে ৪-৫ শতাংশ। এবারের বাজেট পরোক্ষ করমুখী হয়ে গেছে। প্রত্যক্ষ কর আদায়ের ব্যাপারে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। প্রত্যক্ষ কর না বাড়লে বৈষম্য কমবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আইবিএফবি সভাপতি হুমায়ূন রশিদ বলেন, অর্থনীতি কী অবস্থায় আছে তা আমরা প্রতিনিয়ত বুঝতে পারছি। দেশের অর্থনীতিতে এখন ক্রান্তিকাল যাচ্ছে। ব্যবসা সহজীকরণে বাধা হয়ে আছে দুর্নীতি। বাজেটে সংস্কারের পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন ছিল, কিন্তু এমন কোনো নীতিমালা আমরা বাজেটে পাইনি। তিনি বলেন, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা আগের মতো সাড়ে ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু চলতি বছর মে মাসে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশে। মূল্যস্ফীতির এই হার কমিয়ে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরতেই হবে। তা না হলে সাধারণ মানুষের কষ্ট ও ভোগান্তি বাড়বে।
রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য অর্জন করাও চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করে আইবিএফবি। এ নিয়ে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বিশাল রাজস্ব সংগ্রহ করা হবে সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। এমনিতেই দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকসহ রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়া বিশ্বব্যাপী বিরাজমান কঠিন পরিস্থিতির কারণে চাপের মুখে রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নীতি প্রণয়ন ও রাজস্ব আহরণের কার্যপদ্ধতিতে সংস্কার আনা জরুরি। সেই সঙ্গে কর-জিডিপি’র অনুপাত বাড়ানোর জন্য করের আওতা ও অনলাইনভিত্তিক সেবা বৃদ্ধি এবং উপজেলা পর্যন্ত কর অফিস বিস্তৃত করা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান খান, সহ-সভাপতি লুৎফুন্নিসা সৌদিয়া খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।