খেলা
‘শোকস্তব্ধ’ পাকিস্তানের বাঁচা-মরার লড়াইয়ে প্রতিপক্ষ কানাডা
সৌরভ কুমার দাস
১১ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার
প্রথম ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিত হারের পর ভারতকে বিপক্ষেও জিততে পারেনি পাকিস্তান। টানা দুই হারে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রীতিমতো কোনঠাসা হয়ে পড়েছে গত আসরের রানার্সআপরা। তবে হার নিয়ে বসে থাকার সময় নেই দলটির। আজ নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে কানাডার মুখোমুখি হচ্ছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়। আসরে টিকে থাকতে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই পাকিস্তানের।
ভারতের বিপক্ষে রোববার জয়টাকে স্রেফ হাত থেকেই ফেলে দেয় পাকিস্তান। নাসিম শাহ ও মোহাম্মদ আমিরের দুর্দান্ত বোলিংয়ে আগে ব্যাটিং করা ভারত অলআউট হয় মাত্র ১১৯ রানে। সেটা তাড়া করতে নেমে একপর্যায়ে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৬ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৪০ রান। আধুনিক ক্রিকেটে এর চেয়ে সহজ লক্ষ্য আর কি-ই বা হতে পারে। অথচ শেষ পর্যন্ত এই ম্যাচও ৬ রানে হারে বাবর আজমের দল। টানা দুই হারে পাকিস্তান এখন খাদের কিনারায়। আজ কানাডা ও শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড। আসরে টিকে থাকতে এই দুই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র যদি আয়ারল্যান্ডকে হারায় সেক্ষেত্রে তখনই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে বাবরের দলের। আবার যুক্তরাষ্ট্র বাকি দুই ম্যাচ হারলে পাকিস্তান বাকি দুই ম্যাচ জিতলেও তাকিয়ে থাকতে হবে রান রেটের দিকে। আপাতত শেষ দু’টি ম্যাচ জিততে চান পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। তিনি বলেন, ‘আমাদের শেষ দু’টি ম্যাচ জিততেই হবে, তবে তার আগে আমরা নিজেদের সঙ্গে বসবো এবং ভুলটা কোথায় করেছি সেদিকটা নিয়ে আলোচনা করবো। কিন্তু আমরা এখন শেষ দু’টি ম্যাচের দিকে তাকিয়ে রয়েছি।’ ভারতের বিপক্ষে একপ্রান্তে ব্যাটাররা ফেরার মিছিলে যোগ দিলেও থিতু হয়েছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। কিন্তু ৪৪ বলে ৩১ রান করা এই ব্যাটার জাসপ্রিত বুমরাহকে অহেতুক মারতে গিয়ে উইকেট ছুড়ে দেন। যদিও এরপরও ম্যাচ পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণেই ছিল কিন্তু অদ্ভুত উপায়ে সেই ম্যাচই হেরে যায় তারা। এদিকে কানাডা ২ ম্যাচ খেলে ১টি জয় পেয়েছে। প্রথম ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে হারলেও পরের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের স্বাদ পায় দেশটি। ফলে কানাডাও পাকিস্তানের জন্য সহজ প্রতিপক্ষ হবে না। বিশেষ করে প্রথম দুই ম্যাচে হারের পর পাকিস্তান শিবির রীতিমতো বিধ্বস্ত। যদিও গত বিশ্বকাপেও প্রথম দুই ম্যাচ হেরেছিল তারা। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্রের টানা দুই জয়ই পাকিস্তানের পথ আরও কঠিন করে দিয়েছে। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে আজকের ম্যাচের ভেন্যু নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই আয়ারল্যান্ডকে ১২ রানে হারায় কানাডা। আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রান সংগ্রহ করে কানাডা। এরপর দারুণ বোলিংয়ে তাদের ১২৫ রানে আটকে রাখে সাদ বিন জাফরের দল। ৫৪ রানেই ৪ উইকেট হারায় কানাডা। এরপর শুরুর ধাক্কা সামলে নিয়ে ৭ উইকেটে ১৩৭ রান করে দলটি। রান তাড়ার শুরুতেই কানাডার বোলিংয়ে তালগোল পাকিয়ে বসে আয়ারল্যান্ড। ৫৯ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে আইরিশরা। সেখান থেকে ৪১ বলে ৬২ রানের জুটি গড়ে আইরিশদের প্রতিযোগিতায় ফেরায় ডকরেল-অ্যাডাইর জুটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কানাডার ডেথ ওভারের বোলিংয়ে কোনো জবাব খুঁজে পাননি দুই আইরিশ লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান। ডকরেল ২৩ বলে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন, অ্যাডাইরের ৩৪ রান আসে ২৪ বলে। এই ম্যাচে কানাডার চেয়েও পাকিস্তানের জন্য বড় প্রতিপক্ষ প্রথম দুই ম্যাচের হার। শুরুর ধাক্কা সঙ্গে আসরে টিকে থাকার চাপ, এমন ম্যাচে ইতিহাস, ঐতিহ্য ও শক্তিতে পিছিয়ে থাকা কানাডাও পাকিস্তানের জন্য বড় প্রতিপক্ষ হয়ে যেতে পারে।