খেলা
রাজমিস্ত্রি’ শাওনের নতুন রেকর্ড
স্পোর্টস রিপোর্টার
২৫ মে ২০২৪, শনিবারতীব্র গরমে রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম। দাবদাহের মাঝে খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। এমন পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ। যেখানে অংশ নিচ্ছে ১০-২০ বছরের কিশোর-কিশোরী। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই আসরে প্রথম দিনে জাতীয় রেকর্ড গড়েছে কুড়িগ্রামের কিশোর মো. শাওন। এক সময় ফুটবল খেলত সে। কিন্তু কুড়িগ্রামের কোচ শফিকুল ইসলামের পীড়াপীড়িতে অ্যাথলেটিক্সে চলে আসে শাওন। প্রথম বারের মতো শেখ কামাল জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে ১৫০০ মিটার দৌঁড়ে পাঁচ বছর আগের রেকর্ড ভাঙ্গে সে। শাওন সময় নেয় চার মিনিট ১৪.১২ সেকেন্ড। ২০১৮ সালে চার মিনিট ১৯.২০ সেকেন্ডে আগের রেকর্ডটি গড়েছিল নড়াইলের বিজয় মল্লিক। নতুন রেকর্ড গড়তে কত কষ্টই না করতে হয়েছে শাওনকে। এমনকি রাজমিস্ত্রীর কাজ পর্যন্ত করতে হয়েছে তাকে। বাবা মোফাসসেল হক পেশায় একজন কৃষক। দিন চুক্তিতে অন্যের জমিতে চাষ করে চার ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়েই সংসার চালান তিনি। তবে সময় বিশেষে বাবাকেও কৃষি কাজে সহযোগিতা করে শাওন।
রেকর্ড গড়ে শাওন বলে, ‘বাবা অনেক কষ্ট করেন। তাই উনাকে আমি সহযোগিতা করি। চার ভাইয়ের মধ্যে আমি বড়। তাই বাবাকে সহযোগিতা করতেই হয়।’ তবে সংসার চালাতে কষ্ট হয় বিধায় নিজের বাড়তি খাবারের জন্য আর বাবাকে চাপে ফেলতে চায় না শাওন। তাই শুক্রবার ও শনিবার দিনে সাড়ে তিনশ টাকা করে চুক্তিতে এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করে শাওন। সেই টাকা দিয়েই নিজের বাড়তি পুষ্টির খাবার কিনে সে। পাঁচগাছি দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র শাওন। আগে ১০০ ও ২০০ মিটার স্প্রিন্টে খেলতে গিয়ে দম হারিয়ে ফেলেছিল। তাই ১৫০০ মিটার দৌড়কেই বেছে নেয় শাওন, ‘আমি ১০০ ও ২০০ মিটার স্প্রিন্টে দম পেতাম না। তাই ১৫০০ মিটারে খেলছি। এতে তৃপ্তি পাই। অনুভূতিও ভালো।’ নতুন রেকর্ড গড়ায় দশ হাজার টাকা প্রাইজমানি পেয়েছে শাওন। এই অর্থ দিয়ে নিজে পুষ্টিকর খাবার খেতে চায় কুড়িগ্রামের এই অ্যাথলেট।