মৌলভীবাজারে বাহিরে কর্মী ও উৎসুক জনতার ভিড়, ভোটার নেই চা বাগান এলাকাতেও

অধিকাংশ কেন্দ্রের বাহিরে প্রার্থীর সমর্থক, কর্মী ও উৎসুক জনতার ভিড়। আর কেন্দ্রের ভেতরে ভোটারের লাইন একদমই ফাঁকা। চা বাগান অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেও কম ভোটার।
কদমহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ মাসুদ রান জানান, ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার এক হাজার ৮১১ জন। সকাল সাড়ে ৮টা ১৫ মিনিটে ভোট পড়েছে ৬-৭ টা। রাজনগর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আজাদুর রহমান জানান, ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার দুই হাজার ৫৮০ জন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই কেন্দ্রে ভোট পড়ে  ৩০-৩৫টি। টেংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার কাজী নাদিমুল হক জানান, ওই কেন্দ্রের মোট ভোটার দুই হাজার ৯৬৮ জন। সকাল ১১ টার দিকে ভোট পড়ে ৬০-৭০টি। শহীদ সুদর্শন উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আতিকুর রহমানের তথ্যমতে, ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার দুই হাজার ৯৪৯ জন। সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ভোট পড়ে ২৩৪ টি। কামরচাক সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার নাঈম সারোওয়ার মহসীন জানান, মোট ভোটার চার হাজার ১৫৯ জনের মধ্যে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ভোট পড়ে প্রায় ৭৫০টি।

মাথিউরা চাবাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. জিল্লুর রহমান জানান, ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার দুই হাজার ১৬৮ জন। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ভোট পড়ে প্রায় ৩৫০টি।  রাজনগর চা বাগান বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার রঞ্জিত কুমার দাস জানান, ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার চার হাজার ৫৬০ জন। ১২টি বুথে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়ে প্রায় ৮১২ টি।  দক্ষিণ গড়গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো: আব্দুল হান্নান জানান, ভোটার মোট তিন হাজার ৯৪৯ জন। দুপুর ২টায় ভোট পড়ে এক হাজার ৭৪৭টি।

কাউয়াদিঘি হাওর বেষ্টিত রাজনগর উপজেলা নির্বাচনে ভোটের শুরু থেকে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ঘুরে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে। নির্বাচনের দিনক্ষণ শুরু থেকে এমনটি জানিয়েছিলেন ভোটাররা। ভোটের প্রচার প্রচারণার শুরু থেকেই ভোটারদের মাঝে যেমন আমেজহীনতার দৃশ্য ছিল লক্ষণীয়। তেমনি ভোটের দিনও মিলে এমন বাস্তবতা। জেলায় ৭টি উপজেলার মধ্যে ৮ই মে ১ম ধাপে ভোট সম্পন্ন হয় ৩ উপজেলাতে- কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা। ২য় ধাপে জেলার রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদরে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও আইনি জটিলতায় মৌলভীবাজার সদরে ভোট হচ্ছেনা। তাই জেলায় ২য় ধাপে কেবল ভোট হচ্ছে রাজনগর উপজেলায়।

হাওর নদী আর প্রবাসী ও পর্যটন অধ্যুষিত চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের ৩টি উপজেলায় উপজেলায় ভোটের দিনে ব্যতিক্রম দৃশ্য ছিল কেবল চা বাগানে। চাবাগান এলাকার ভোট কেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকে নারী ও পুরুষ ভোটারের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক উল্লেখযোগ্য। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভোটার উপস্থিতি। যেমনটি দেখা যায়নি রাজনগরের ৮টি চা বাগানে। দুপুর ২টা পর্যন্ত অন্যান্য নির্বাচনের চাইতে কম ভোটার উপস্থিতি চোখে পড়ে চা বাগান এলাকায়। কাউয়াদিঘি হাওর পাড়ের ভোট কেন্দ্র ও সমতলের ভোট কেন্দ্রগুলোতেও নেই ভোটারের লম্বা লাইন। ভোটের দিন চা শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হলেও অন্যান্য নির্বাচনের মতো ভোট দিতে তেমন আগ্রহী হতে দেখা যায়নি ভোটারদের। চা বাগানের ভোটকেন্দ্রগুলোতে ঘুরে কোথাও নারী-পুরুষ ভোটারদের সারিবদ্ধ লম্বা লাইনের দেখা মিলেনি। তবে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ভাবে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ চলছে। সকালের সবকটি কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি একেবারেই কম থাকলেও দুপুরে দিকে কিছুটা বাড়ে।

রাজনগর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৫ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে ৪ জনসহ মোট ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। রাজনগরে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ জন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান খান (কাপ পিরিচ প্রতীক), সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আহমদ বিলাল (আনারস প্রতীক), সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য রওনক আহমদ অপু (মোটরসাইকেল প্রতীক)। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তারা হলেন মো: আব্দুল কাদির ফৌজি (টিউবওয়েল প্রতীক), মহিম দে মধু (উড়োজাহাজ প্রতীক), মো: আব্দুল হাকিম (চশমা প্রতীক), সঞ্জয় দেবনাথ (বই প্রতীক) এবং জবলু তালুকদার (তালা প্রতীক)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তি চক্রবর্তী (কলস), সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডলি বেগম (পদ্মফুল), লুৎফুল নাহার (বৈদ্যুতিক পাখা) ও সুমাইয়া সুমি (ফুটবল প্রতীক)।

উপজেলা নির্বাচন অফিস উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৬৭টি কেন্দ্রের মোট ৪৭০টি ভোট কক্ষে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫শত ৫৫ জন ভোটার। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯৬ হাজার ১৪৯ জন ও নারী ভোটার ৯১ হাজার ৪০৩ জন।