খেলা
আরেকটি বসুন্ধরা মোহামেডান ফাইনাল
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৫ মে ২০২৪, বুধবারদেশের ফুটবলে দুই বড় শক্তি বসুন্ধরা কিংস ও আবাহনী লিমিটেড। এই দুই দলের লড়াই হওয়ার কথা রীতিমতো আগুন ঝরানো। কিন্তু দিন দিন কিংস-আবাহনী লড়াইটা হয়ে উঠছে একপেশে। চলতি মৌসুমে চার সাক্ষাতেই আবাহনীকে হেসে খেলে হারিয়েছে বসুন্ধরা। গতকাল গোপালগঞ্জে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালটা ৩-০ ব্যবধানে জিতে ট্রেবল জয়ের আরও কাছে পৌঁছে গেল পঞ্চম লীগ শিরোপা নিশ্চিত করা বসুন্ধরা। এর আগে স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে মোহামেডানকে হারিয়েছিল কিংস। ট্রেবল জিততে ২২শে মে ময়মনসিংহে ফাইনালে তাদের হারাতে হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানকে। ক’দিন আগেই প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা ঘরে তুলেছিল কিংস। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে গতকাল শুরু করে দলটি। যদিও ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগটি আবাহনী তৈরি করে সপ্তম মিনিটে।
গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণকে একাও পেয়েছিলেন, কিন্তু বিস্ময়করভাবে দূরের পোস্ট দিয়ে মেরে বসেন স্টুয়ার্ট কর্নেলিয়াস। পঞ্চদশ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট হয় কিংসের। আক্রমণের শুরু ছিল ডোরিয়েল্টনের ক্রস থেকে। বক্সের উপর থেকে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শেখ মোরসালিন বাড়ান রাকিবকে; এই ফরোয়ার্ডের বাম পায়ের শট ড্রপ খেয়ে ছুটছিল গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল বরাবর, কিন্তু তিনি তালগোল পাকিয়ে বল গ্লাভসে নিতে পারেননি। সে সময় মোরসালিন সামনে থাকলেও আলগা বল পাঠাতে পারেননি পোস্টে। ১৮তম মিনিটে হাফ-চান্স তৈরি করে প্রতিযোগিতার রেকর্ড ১২ বারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। জামাল ভূঁইয়ার কর্নারে মিলাদ শেখ সুলেমানির হেড যায় বাইরে। এর দুই মিনিট পর গোল হজম করে বসে দলটি। মিগেল ফিগেইরার বাড়ানো বল ধরে আক্রমণে ওঠেন রাকিব। এই ফরোয়ার্ডের পাস প্রথম স্পর্শে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন রবিনিয়ো।
আবাহনীর ডিফেন্ডাররা তখন ডোরিয়েল্টনের পাহারায় ছিলেন ব্যস্ত! দ্বিতীয়ার্ধেও আধিপত্য করতে থাকে কিংস। আবাহনী পারছিল না তেড়েফুঁড়ে বেরিয়ে আসতে। ৫৬তম মিনিটে রিমন হোসেনের আড়াআড়ি ক্রসে পা ছোঁয়াতে গোলমুখে ছুটে গেলেও বলের গতির সঙ্গে পেরে ওঠেননি ফিগেইরা। ৬০তম মিনিটে জামালকে তুলে রহিম উদ্দিনকে নামান আবাহনী কোচ আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানি। কিন্তু আকাশি-নীলদের খেলায় ফিরেনি ধার। বরং ৭১তম মিনিটে আবাহনী ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় রাকিবের আড়াআড়ি ক্রসে ডোরিয়েল্টন হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করলে। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে বক্সের একটু উপর থেকে রবিনিয়োর ফ্রি-কিক ফেরালেও গ্লাভসে জমাতে পারেনি সোহেল। আলগা বল ছুটে গিয়ে টোকায় জালে জড়িয়ে দেন বদলি ফরোয়ার্ড ইব্রাহিম। অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায় কিংসের জয়। হতাশাময় মৌসুম কাটানো আবাহনী খুঁজে পায়নি ঘুরে দাঁড়ানোর পথ।
গত স্বাধীনতা কাপে তাদের পথচলা থেমেছিল সেমি-ফাইনালে কিংসের বিপক্ষে হেরে। প্রিমিয়ার লীগ টেবিলে তারা এ মুহূর্তে আছে তৃতীয় স্থানে। এবার ছিটকে গেল ফেডারেশন কাপের সেমি-ফাইনাল থেকে। মৌসুম জুড়েই লড়াই হচ্ছে কিংস ও মোহামেডানের মধ্যে। স্বাধীনতার কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল; কিংস জিতেছিল ২-১ গোলে। প্রিমিয়ার লীগ জিতে নেয়া কিংসকেও যা একটু চাপে রেখেছিল মোহামেডান, যদিও শেষ পর্যন্ত ব্রুজনের দলকে আটকাতে পারেনি তারা। এবার ফেডারেশন কাপেও দেখা হচ্ছে দুই দলের। মোহামেডানের সামনে সুযোগ ফেডারেশন কাপের রেকর্ড শিরোপাজয়ী আবাহনীর (১২টি) পাশে বসার। কিংস থাকবে তৃতীয় ট্রফির খোঁজে।