ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

স্বামী আছেন, তবুও পাচ্ছেন বিধবা ভাতা

মোহা. ইমরান আলী, শিবগঞ্জ (চাঁপাই নবাবগঞ্জ) থেকে
৭ জুলাই ২০২২, বৃহস্পতিবার

চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সুবিধাভোগী কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিধবা নয়, তবুও অনেকে পাচ্ছেন বিধবা ভাতার সুবিধা। স্বামী বেঁচে থাকা অবস্থায় টাকার বিনিময়ে দেয়া হয়েছে বিধবা ভাতার কার্ড। ঘটনাটি ঘটেছে শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের কান্তিনগর গ্রামে।  সরজমিন দেখা গেছে, আনসার সদস্য শওকাত আলীর স্ত্রী ছবিয়ারা বেগমের নামে রয়েছে বিধবা ভাতার কার্ড। তার বই নং ৮৭৭, ব্যাংকিং হিসাব নং ১৭৪১৭২। তিনি বলেন এক মেম্বারের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক থাকায় তার মাধ্যমে কার্ডটি করে নিয়েছি। কোনো টাকা দেয়নি। তার স্বামী শওকাত আলী জানান, কার্ড হয়েছে তাতে কি হয়েছে? আরও কতজন কত কি করছে তার হিসাব নেই। একই গ্রামের ফাহসান আলীর স্ত্রী মিলিয়ারা বেগমও পেয়েছেন বিধবা ভাতার কার্ড।

বিজ্ঞাপন
তিনি ৩ বারে ৬ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। তার স্বামী ফাহসান আলী জানান, আমি বেঁচে থাকা অবস্থায় কীভাবে আমার স্ত্রীর নামে বিধবা ভাতার কার্ড হয়েছে তা জানি না। তার বই নং ৮৭৮, ব্যাংকিং হিসাব নং ১৭৪৭৪৮। একরাম আলীর স্ত্রী মোসাঃ চিরল বেগম জানান, আমি আমার মায়ের বিধবা ভাতার কার্ডে নমিনি হিসেবে ছিলাম। তার মৃত্যুর পর আমাকে কার্ডটি দিয়েছে। তবে তিনি স্বীকার করেন যে আমার স্বামী বেঁচে আছেন। তিনিও তিনবারে ৬ হাজার টাকা পেয়েছেন। কাউকে কোনো টাকা দেয়ার কথা অস্বীকার করলে তার প্রতিবেশী কয়েকজন মহিলা জানান, মেম্বারকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। একইভাবে একই গ্রামের বিধবা ভাতার কার্ড পেয়েছেন আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী জোগো বেগম, রোজলুর স্ত্রী পানতারা বেগম, জিয়ারুলের স্ত্রী। তবে আহাদের স্ত্রী এমালী বেগম ও মজিবুর রহমানের স্ত্রী কাচু বেগম জানান, আমরা এখনো বই পাইনি। কার্ডধারীদের সঙ্গে কথা বলার সময় তারা বলেন, আমাদেরকে সাবেক মহিলা মেম্বার সাহেলা বেগমের মাধ্যমে কার্ড করে দিয়েছেন। অনেকেই জানান, শুধু  ৩নং ওয়ার্ডেই স্বামী বেঁচে থাকার পরও প্রায় ৫০টি  বিধবা ভাতার কার্ড করা হয়েছে এবং তারা সবাই ৩-৪ বার করে টাকা উত্তোলন করেছে। ভুক্তভোগী এক বিধবা জানান, ২১ বছর আগে আমার স্বামী মারা গেছে। ১৯ বছর কেউ খোঁজ নেয়নি। তিন বছর আগে মেম্বারকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। এক বছর আগে বই পেয়েছি এবং এখন টাকা পাচ্ছি। এ ব্যাপারে সাবেক মহিলা মেম্বার সাহেলা বেগমের সঙ্গে কথা বললে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে পরিবর্তনের কয়েকটি কার্ড করে দেয়ার কথা স্বীকার করেন। বর্তমান মোবারকপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মিঞা বলেন, আমি ইতিমধ্যে ৩টি অবৈধ বিধবা ভাতার কার্ড বাতিল করেছি। এখনো তদন্ত করছি। যখন যেটা অবৈধ কার্ডের সন্ধান পাবো, সেটি তখনই বাতিল করবো। শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার দাস বলেন, সারা উপজেলায় প্রায় ৫৬ হাজার সুবিধা ভোগীর কার্ড রয়েছে। যা তদন্ত করা আমাদের জন্য খুব কষ্টকর। তবে অভিযোগ পেলে তৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তিনি আরও বলেন, আমরা বার বার সুবিধাভোগীদের তালিকা চেয়ে ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের বা চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছি। তাদের দেয়া তালিকা পেলেই আমরা অনুসন্ধান চালিয়ে অবৈধগুলোকে বাতিল করবো এবং ভবিষ্যতে যেন আর কেউ ভুয়া সুবিধাভোগীর কার্ড করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবো।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

সিন্ডিকেট চক্রের ঈদ বাণিজ্য/ ট্রেনের ১০৫৩ টাকার এসি চেয়ার ২৫০০

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status