ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম পাতা

দর-দাম করছেন ক্রেতারা

নাজমুল হুদা
৬ জুলাই ২০২২, বুধবার
mzamin

কোরবানির ঈদ ঘিরে রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে বাড়ছে ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাটে পশু আসতে   শুরু করেছে। ইতিমধ্যে হাটে ছোট, বড়, মাঝারি সব ধরনের পশু উঠেছে। এসব পশু দেখতে অনেকেই হাটে আসছেন। তবে এখনো জমে ওঠেনি পশুর হাট। হাটের বড় গরুগুলো সবাইকে আকর্ষণ করলেও ক্রেতাদের আগ্রহ কম। দু’একজন ক্রেতা হাটে এলেও সেভাবে দাম করছেন না। এখন হাটে গরুর দামও হাঁকানো হচ্ছে অনেক। ক্রেতাদের কাছে এই দাম তুলনামূলক অনেক বেশি মনে হচ্ছে।  মঙ্গলবার সরজমিনে রাজধানীর বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং (আফতাবনগর) পশুর হাটে এসব চিত্র দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুরো পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাটে গরু নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা। তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। গরু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিক্রেতারা। মাঝেমধ্যে খাবার খাওয়াচ্ছেন। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধারণ মানুষ হাটে এসে গরু দেখে যাচ্ছেন। দাম জানতে চাইছেন।  

এই হাটে সুলতান, শাহেন শাহ, ব্লাক ডায়মন্ড, খোকাবাবু, কুমিল্লার কিংসহ বিচিত্র নামের সব বড় গরু উঠেছে। ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। সাধারণ মানুষকেও এই বড় গরুগুলো আকৃষ্ট করছে। তবে কোনো ক্রেতাকে বড় গরু ক্রয় করার জন্য দামাদামি করতে দেখা যায়নি। সাধারণ মানুষ হাট ঘুরে দেখছেন আর দাম জেনে যাচ্ছেন।  আফতাবনগর হাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি নুরুল হক আকাশ জানান, আফতাবনগর রাজধানীর অন্যতম বড় পশুর হাট। প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে হাটের পরিধি। এখানে ক্রেতাদেরও উপচেপড়া ভিড় থাকে। ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতারা তাদের চাহিদামতো পশু কিনতে পারেন এখান থেকে। এখন পর্যন্ত এখানে ১৫ হাজার গরু এসেছে। এই হাটে ৫০ হাজার গরুর উপরে বিক্রি হয়। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত হাটে গরু আসতে থাকবে। এখন পর্যন্ত এই হাটে আনুষ্ঠানিক বিক্রি শুরু হয়নি। তারপরও ২৭টি গরু বিক্রি হয়েছে। পাবনার চাটমোহর থেকে খোকাবাবু নামে ফ্রিজিয়ান জাতের বড় একটি গরু আফতাবনগর হাটে নিয়ে এসেছেন নজরুল ইসলাম। প্রায় তিন বছর তিনি এই গরুটি লালন-পালন করেছেন।

 হাটে তার গরু দেখতে মানুষের ভিড় জমছে। তিনি দাম হাঁকাচ্ছেন ১২ লাখ টাকা। নজরুল বলেন, এই গরুতে প্রায় ২৮-৩০ মণ মাংস হবে। গরুটি খুব যত্ন করে লালন-পালন করেছি। প্রতিদিন আমার ৮০০ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এখনো হাট জমেনি তাই ক্রেতা নেই। আশা করি, আমি ১০ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো। পাবনার আতাইকোলা থেকে ব্লাক ডায়মণ্ড নামের একই জাতের আরেকটি গরু হাটে এনেছেন সোহেল আহমেদ। তার গরু ৮ লাখ টাকা বিক্রি করতে চান তিনি। দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ৪টি গরু কিনেছিলেন ইব্রাহিম খলিল। এরপর সেগুলো নয় মাস লালন-পালন করেন। নয় মাসে ৪টি গরু পালন করতে তার ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। এই টাকাও দোকানে বকেয়া রয়েছে। সোমবার সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থেকে গরুগুলো বিক্রির উদ্দেশ্যে আফতাবনগর হাটে এনেছেন তিনি। প্রতিটি গরু তিনি এক লাখ ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। তবে আশানুরূপ ভালো দামে গরু বিক্রি করতে না পারলে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন না বলে জানান তিনি। ইব্রাহিম বলেন, বাজার ভালো হলে ঋণ পরিশোধ হবে, নইলে বাড়িঘর বিক্রি করে ঋণ শোধ দিতে হবে। গত বছর কোরবানিতেও ৪টি গরু এনেছিলাম। তখন ২ লাখ টাকা ধরা খাইছি। 

কিছু সঞ্চয় ছিল তা দিয়া ঋণ দিয়েছি। এবার লস হলে বাড়িঘর বিক্রি ছাড়া উপায় থাকবে না। ঈদের দুই-তিনদিন পরেই ঋণ শোধ করা লাগব।  মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা শফিক হক আফতাবনগর হাট ঘুরে দেখছেন। তিনি বলেন, গরু পরে নিবো। আজ এমনি দেখতে এলাম। কয়েকটা গরুর দামও জিজ্ঞাসা করলাম। মনে হচ্ছে, দাম অনেক বেশি বলছেন ব্যাপারীরা। বড় গরুগুলো ১০ লাখ টাকার উপরে বলছেন। এত দাম হওয়ার কথা না। রামপুরা পশ্চিমপাড়া থেকে সিয়াম আহমেদ হাট ঘুরে দেখছেন। তিনি দেড় লাখ টাকার মধ্যে একটি গরু কিনবেন। তাই গরুর দাম দেখে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, এখনো গরুর দাম বোঝা যাচ্ছে না। ঈদের দু’দিন আগে বোঝা যাবে দাম কেমন যাবে? এখন সবাই একটু বেশি বেশি দাম বলছেন।

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

   

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status