বাংলারজমিন
আলোচিত জেম হত্যা মামলা যাচ্ছে সিআইডিতে
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
(১০ মাস আগে) ৯ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ৪:০৪ অপরাহ্ন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক যুবলীগ নেতা খাইরুল আলম জেম হত্যার এক বছরেও চার্জশিট দিতে পারেনি পুলিশ। অবশেষে এ মামলার তদন্তভার যাচ্ছে সিআইডিতে। মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মানবজমিনকে বলেন, মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তরে পুলিশের হেডকোয়ার্টার থেকে নির্দেশ এসেছে। হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। সিআইডির দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তার কাছে মামলার নথি হস্তান্তর করা হবে। মামলাটির গুরুত্ব বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি চাঁপাইনবাবগঞ্জ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মামলাটির নথি সিআইডিকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। সদর থানা থেকে মামলার নথি বুঝে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। মামলাটি এখন তদন্ত করবেন সিআইডির পরিদর্শক মো. আব্দুল হান্নান।
গত রোববার বিকেলে সাবেক যুবলীগ নেতা খাইরুল আলম জেমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ইফতার, দোয়া মহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে খাইরুল আলম জেম হত্যার বিচার না পেলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে পদত্যাগ করার হুঁশিয়ারি দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওদুদ। এ সময় তিনি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জেম হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দেয়া না হলে সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন। আবদুল ওদুদ বলেন, প্রকাশ্যে কুপিয়ে জেম হত্যার এক বছর হয়ে গেল। এ মামলা যেন দীর্ঘায়িত হয়, সে জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র যদি দ্রুত দেয়া না হয় এবং তা নিয়ে যদি কোনো ষড়যন্ত্র করা হয়, কোনো আসামির যদি নাম বাদ দেওয়া হয়, তবে ঈদের পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে যেকোনো দিন বা যেকোনো সময় মানববন্ধন করা হবে। জেম হত্যার বিচার না পেলে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সংসদ থেকে পদত্যাগ ঘোষণা করব। সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদের এমন বক্তব্যের পর থেকে জেম হত্যা মামলা আবার আলোচনা শুরু হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মিন্টু রহমান বলেন, পুলিশের সদর দপ্তরের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দেয়া হয়েছে। তবে মামলার নথিপত্র এখনো হস্তান্তর করা হয়নি। মামলার তদন্তে অনেক অগ্রগতিও আছে। ১৪ জন গ্রেপ্তার, ৫ আসামির আদালকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছর ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের উদয়ন মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও জেলা যুবলীগের সাবেক সহশ্রমবিষয়ক সম্পাদক খাইরুল আলম (৪৮)। তার বাড়ি শিবগঞ্জ পৌরসভার মর্দনা গ্রামে। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে বসবাস করতেন। নিহত জেম সংসদ সদস্য ওদুদের ঘনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন। এ ঘটনায় ওই বছরের ২২ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোখলেসুর রহমান প্রধান আসামি করে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত খাইরুলের ভাই মনিরুল ইসলাম। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত হাতুড়িও। আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিও দিয়েছে।