বুয়েট ভর্তিতে ফাইয়াজের ইচ্ছা মা দোটানায়

ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের পিটুনিতে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বুয়েটে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে বুয়েটে ভর্তি বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি পরিবার। 

বৃহস্পতিবার রাতে বুয়েটের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে ৪৫০তম মেধা স্কোর অর্জন করে যন্ত্রকৌশল বিভাগে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন ফাইয়াজ। এই সংবাদ জানার পর তার প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার সকালে কুষ্টিয়া শহরস্থ নিজ বাড়িতে উপস্থিত সাংবাদিকদের আবরার ফাইয়াজ বলেন, ‘ভাইয়ার (আবরার ফাহাদ) ইচ্ছানুযায়ী বুয়েটে চান্স পাওয়াটা ছিল আমার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। রেজাল্ট শুনে খুশি হয়েছি, তবে ভর্তি হবো কিনা তা পারিবারিক সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত হবে। 

এ বিষয়ে নিহত আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘আবরার ফাইয়াজ মেধা তালিকায় ৪৫০তম স্থান অধিকার করেছে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে তিনি ভর্তি হতে পারবেন। তবে বুয়েটে বড় ছেলেকে ভর্তি করে পরিবার যে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে, সেই নির্মম কষ্ট ও যন্ত্রণার মধ্যে নতুন করে আর পড়তে চায় না। ফাইয়াজকে তো কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি করেছি। ওখানেই ভালো। এক সময় যে আবেগের বশে বড় ছেলেকে বুয়েটে ভর্তি করিয়েছিলাম সেই আবেগ শঙ্কায় পরিণত হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, ‘চার বছর আগে অনেক স্বপ্ন, আবেগ নিয়ে ফাহাদকে বুয়েটে ভর্তি করে ওর প্রয়োজনীয় সব আসবাবপত্র কিনে নিজ হাতে ওকে হলে তুলে দিয়ে এসেছিলাম। অথচ বছর না ঘুরতেই ওই হল থেকে ছেলের লাশ বেরিয়ে এলো।

কোনো মা নতুন করে তার আরও সন্তানকে ওই মৃত্যুকূপে ঠেলে দিতে পারে না। আমিও পারবো না। বুয়েটের সেই নিরাপত্তার পরিবেশ নিশ্চিত করবে কে? সেই ভরসায় আমার ফাইয়াজকে ওখানে আমি ভর্তি করবো?’ এখনো যেহেতু আবরার হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তদের দণ্ড কার্যকর হয়নি। সে কারণে নিরাপত্তার বিষয়টি আমার কাছে প্রধান শঙ্কার কারণ হওয়ায় ওখানে ফাইয়াজকে ভর্তি করাবো কিনা এটাই প্রশ্ন জাগছে।’ তিনি এখন কেবলই তার হারিয়ে যাওয়া সন্তানের রেখে যাওয়া স্মৃতি আঁকড়ে থাকতে চান। 

ফাইয়াজের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ‘গাজীপুরে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে (আইইউটি) কম্পিউটার সায়েন্সে ফাইয়াজকে ভর্তি করিয়েছি। বুয়েটে ভর্তি করানো হবে কিনা, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি।’