ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯ শাবান ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

সিলেটে প্রতিমন্ত্রীর সংবর্ধনায় ছাত্রলীগ কর্মীদের ভাঙচুর

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
৩ মার্চ ২০২৪, রবিবারmzamin

সিলেটে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীর সংবর্ধনাস্থলে ছাত্রলীগের ক্ষুব্ধ কর্মীরা ভাঙচুর চালিয়েছে। তারা সংবর্ধনাস্থলের সামনে থাকা চেয়ার ভাঙচুর করে ক্ষোভ দেখিয়ে চলে যায়। এ নিয়ে গতকাল বিকালে নগরের চাঁদনীঘাট এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে; পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ফের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। পুলিশও মোতায়েন করা হয় এলাকায়। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, এমপি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গতকাল বিকালে নগরের চাঁদনীঘাট এলাকায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। গত কয়েকদিন ধরে এ সংবর্ধনার আয়োজন চলছিল। বিকাল ৩টা থেকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানও শুরু হয়। 

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ এবং পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সিলেট যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সব গ্রুপের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে যোগদান করেন। 

উপস্থিত নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন- জেলা আওয়ামী লীগের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়ে যোগ দেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট-৩ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব এবং সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রঞ্জিত সরকার। এর মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সংবর্ধনা মঞ্চে বসার স্থান পেলেও দুই এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব ও এডভোকেট রঞ্জিত সরকারকে প্রথমে স্থান দেয়া হয়নি। পরে নেতারা চেয়ার এনে তাদের বসার জায়গা করে দেন। 

উপস্থিত ছাত্রলীগ কর্মীরা জানিয়েছেন- মেয়র সহ দুই এমপি মঞ্চে থাকলেও তাদের বক্তৃতার সুযোগ দেয়া  হয়নি। এ ছাড়া সংবর্ধনাস্থলে ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকলেও তাদের পরিচয় করে দেয়া হয়নি। তারা জানিয়েছেন- সংবর্ধনাস্থলে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা প্রধান অতিথির সময় কম থাকার অজুহাত দেখিয়ে  সেখানে মেয়র ও দুই এমপিকে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেননি। হঠাৎ করে সংবর্ধিত অতিথি প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীকে বক্তব্য দিতে বলা হয়। পরে প্রধান অতিথিও বক্তব্য রাখেন। 

এতে সামনে থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পর অতিথিরা যখন মঞ্চ থেকে নেমে যাচ্ছিলেন তখন ছাত্রলীগের টিলাগড় গ্রুপের কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সামনে থাকা চেয়ার ভাঙচুর করে। এ সময় সংবর্ধনাস্থলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উপস্থিত নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, ছাত্রলীগের নেতারা শতাধিক চেয়ার ভাঙচুর করে। এতে করে সংবর্ধনাস্থলে বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখা দেয়। পরে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল সেখানে এলে ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা সেখান থেকে চলে যায়। 

এদিকে বিকালে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তৃতা করেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। তবে; ওই সময় সংবর্ধিত অতিথি প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী সহ অন্যরা প্রধান অতিথিকে এগিয়ে দিতে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থান করছিলেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি আশফাক আহমদ মানবজমিনকে জানিয়েছেন- প্রধান অতিথির সময় কম থাকায়  তাকে আগেই বক্তব্য দেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়। এতে অনেকেই মনে করেছিলেন অনুষ্ঠান শেষ। এ কারণে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বাইরে হট্টগোল হয়েছে। তবে এতে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি। তিনি বলেন- প্রধান অতিথি সহ অতিথিদের বিদায় দিয়ে ফের সন্ধ্যা পর্যন্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলেছে। এতে স্থানীয় নেতারা বক্তৃতা করেছেন। সংবর্ধিত অতিথিও শেষদিকে এসে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি। 

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মজির উদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন- সংবর্ধনা অনুষ্ঠান যথারীতি চলেছে। যারা অতিথি হিসেবে এসেছিলেন তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়েছে।  জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি সফল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল বলে জানান তিনি। এদিকে সিলেটের কোতোয়ালি থানার ওসি মইন উদ্দিন শিপন জানিয়েছেন-সংবর্ধনাস্থলের অদূরে কিছু যুবক একত্রিত হয়ে বিচ্ছিন্ন ঘটনার চেষ্টা করেছিল। পুলিশ যাওয়ার পরপরই তারা চলে যায়। সেখানে বড় কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানান ওসি। সংবর্ধনা মঞ্চে থাকা কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন- সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মেয়র সহ দু’এমপিকে বক্তৃতা দেয়ার সুযোগ না দেয়ায় মঞ্চেই  জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের ওপর ক্ষোভ দেখান মেয়র আনোয়ার ও এমপি রঞ্জিত সরকার।  ক্ষোভ দেখিয়ে অতিথিদের সঙ্গে তারা যখন চলে যাচ্ছিলেন তখনই তাদের অনুসারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চেয়ার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে।  
 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status