খেলা
বার্সাকে বিদায় করে সেমিফাইনালে পিএসজি
রেফারির ওপর ক্ষোভ জাভির
স্পোর্টস ডেস্ক
১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবারপিএসজির মাঠ থেকে জয় নিয়ে ফিরলেও নিজেদের মাঠেই হেরে গেল বার্সেলোনা। দুই লেগের অগ্রগামিতায় তাদের হটিয়ে চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিফাইনালে পা রাখলো প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)। এই ম্যাচে ডিফেন্ডার রোনাল্ড আরাউহো লাল কার্ড দেখেন। এই এক লাল কার্ডই ম্যাচ থেকে বার্সাকে ছিটকে দিয়েছে বলে মনে করেন দলটির কোচ জাভি হার্নান্দেজ। যদিও পিএসজির কোচ লুইস এনরিকে বিশ্বাস করেন এগুলো না ঘটলেও জয় পেতেন তারা। মঙ্গলবার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ঘটনাবহুল ম্যাচে বার্সেলোনাকে ৪-১ গোলে হারায় পিএসজি। এর আগে প্রথম লেগে পিএসজির মাঠ থেকে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে ফেরা বার্সেলোনা দুই লেগ মিলিয়ে হারে ৬-৪ গোলে। এদিন ঘরের মাঠে দ্বাদশ মিনিটে বার্সা এগিয়ে যায় রাফিনহার গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে ব্যবধান তখন দুই গোলের। তবে এরপর বড়সড় ধাক্কা খায় কাতালান ক্লাবটি ৩০তম মিনিটে পিএসজির বারকোলাকে বিপজ্জনকভাবে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন বার্সেলোনার ডিফেন্ডার রোনাল্ড আরাউহো। এরপরই যেন ছন্দ হারিয়ে ফেলে বার্সা। পাল্টা দাপট দেখায় পিএসজি, দুটি গোল করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ম্যাচ শেষে রেফারির উপর ক্ষোভ উগড়ে দেন জাভি। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষুব্ধ। ওই লাল কার্ডই খেলার ভাগ্য গড়ে দিয়েছে।
১১ বনাম ১১ লড়াইয়ের সময় আমরা খুবই গোছানো ছিলাম। লাল কার্ড সবকিছুই বদলে দিয়েছে পুরোপুরি। রেফারি খুবই বাজে ছিল। আমি তাকে বলেছি, সে ধ্বংসাত্মক ছিল। লড়াইটাই শেষ করে দিয়েছে সে। রেফারিদের নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি না আমি, কিন্তু এটা না বলে উপায় নেই। আমার মাথায় ঢুকছে না (এই সিদ্ধান্ত)। ১০ জনের দল হয়ে পড়া কখনোই ভালো কিছু নয় এবং খেলাটাই বদলে যায় এটির পর। এই ম্যাচ নিয়ে যত কথাই বলি, লাল কার্ডই সবকিছুর প্রতীকী।’ তিনি আরও বলেন, ‘খুবই হতাশাজনক ব্যাপার যে, গোটা মৌসুমের কঠোর পরিশ্রম এভাবে শেষ হয়ে গেল রেফারির একটি বাজে সিদ্ধান্তে। গোটা ম্যাচই ১১ জনের সঙ্গে ১১ জনের লড়াই দেখতে চেয়েছিলাম। ওই লাল কার্ড অপ্রয়োজনীয় ছিল।’ একই ম্যাচে লাল কার্ড দেখেন জাভি নিজেও। দ্বিতীয়ার্ধে ইলকাই গিন্দোয়ানকে করা পিএসজির মার্কিনিহোসের একটি চ্যালেঞ্জে রেফারি পেনাল্টি না দেওয়ায় টাচলাইনের পাশে বোতলে লাথি মারায় তাকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। লাল কার্ড দেখানো হয় গোলকিপিং কোচ হোসে রামন দে লা ফুয়েন্তেকেও। নিজের লাল কার্ড নিয়ে অবশ্য আপত্তি নেই জাভির, ‘ওটা আমার ভুল ছিল, আমি দোষ করেছি।’
তবে ম্যাচে কয়েকবার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে না পারার আক্ষেপ আছে বার্সেলোনা কোচের। জাভি বলেন, ‘আমাদের সুযোগ ছিল সমতায় ফেরার। কিন্তু গিন্দোয়ানের শট পোস্টে লেগেছে। ওই লাল কার্ডের আগে ২-০ গোলে এগিয়ে যেতে পারতাম আমরা, রবের্ত লেভানডোভস্কির শট একটু ওপর দিয়ে চলে গেছে।’ এদিকে জয়টাকে নিজেদের প্রাপ্য বলেই মনে করেন পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে। বার্সেলোনার হয়ে ট্রেবল জেতা এই কোচ বলেন, ‘রেফারিদের নিয়ে কথা বলি না আমি। ঘটনাটি পরে আর দেখা হয়নি আমার, সরাসরিই যতটুকু দেখেছি। তবে রেফারিদের কখনোই বিচার করি না আমি। নিজের যা নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেদিকেই মনোযোগ দেই। ম্যাচটি খুব ভালোভাবে শুরু করেছিলাম আমরা। এরপর ইয়ামালের দারুণ খেলা থেকে গোল করে ওরা এগিয়ে যায়। গত লেগে পরাজয়টা আমাদের আমাদের প্রাপ্য ছিল না এবং আজকেও পিছিয়ে পড়া প্রাপ্য ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘তবে ছেলেদের বিশ্বাস ও নিজেদের ওপর আস্থা ছিল দুর্দান্ত। সেটি থেকেই আমরা ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি। লাল কার্ড অবশ্যই ভূমিকা রেখেছে ম্যাচে। তবে এরপরও তো জানতে হবে যে এই ধরনের ম্যাচ কীভাবে খেলতে হয় এবং কীভাবে ভুল না করা যায়। আমি সত্যিই বিশ্বাস করি, ওই লাল কার্ড না হলেও আমরা জিততাম। যদিও তা প্রমাণ করার উপায় নেই আমার।’