শেষের পাতা

সিলেট বিএনপি’র কাউন্সিলে নিয়ম পরিবর্তন, নানা সংশয়ে প্রার্থীরা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে

১৫ মার্চ ২০২২, মঙ্গলবার, ৯:৪৬ অপরাহ্ন

কাউন্সিল সামনে। ২১শে মার্চ। প্রস্তুতি শুরু। এরই মধ্যে গতকাল জারি হলো নতুন তিন নির্দেশনা। এতে আটকা পড়ছেন অনেক প্রার্থী। প্রচারণায় হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়েছেন তারা। এ নিয়ে কথা বলা হচ্ছে দলের উচ্চ পর্যায়ে। তবে- নির্দেশনাটি গতকাল থেকে কার্যকর করা হয়েছে। জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবনের মৌখিক নির্দেশে তিনি এই নির্দেশনা জারি করেছেন। গতকাল সকালে টেলিফোনে এ নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান তিনি। নতুন ওই তিন নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- ‘১. সিলেট পর্যায়ে বিএনপি’র অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতা জেলা কাউন্সিলের কোনো পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। ২. মহানগর বিএনপি’র কোনো পর্যায়ের কোনো সদস্য জেলা কাউন্সিলের কোনো পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। ৩. কোনো উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা কাউন্সিলে কোনো পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।’ আড়াই বছর পর হচ্ছে সিলেট জেলা বিএনপি’র কাউন্সিল। কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। এরই মধ্যে বলা হয়েছে; ভোটার হবেন ১৮১৮ জন। ফলে প্রার্থীদের গলদঘর্ম অবস্থা। গোটা জেলায় ছুটে ছুটে হয়রান প্রার্থীরা। এরপরও তারা খুশী। কিন্তু নতুন নির্দেশনা অনেক প্রার্থীর জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রার্থীরা জানিয়েছেন- বিএনপিতে এ ধরনের কোনো নিয়ম ছিলো না। নির্বাচনের জন্য সবার অংশগ্রহণ খোলা ছিল। কিন্তু গতকাল ঘোষিত নির্দেশনা অবাক করে দিয়েছে সবাইকে। যেহেতু কেন্দ্রের নির্দেশ সেটি মেনে চলতে হবে। গঠিত নির্বাচন কমিশনের নেতারাও নতুন নির্দেশনা মেনে চলবেন। জেলা বিএনপি’র জন্য গঠিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতারা জানিয়েছেন- কাউন্সিলের জন্য তারা গতকাল থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু করেছেন। গতকালই বেশির ভাগ ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটির জাতীয় পরিচয় পত্র ছবিসহ জমা দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বুধবার নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ এবং সেদিন বিকাল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হবে। বিকাল ৫টার পর মনোনয়নপত্র বাছাই হবে। শুক্রবার বেলা ২ টার মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় নির্ধারণ করা হয়। এরপর ২১শে মার্চ কাউন্সিল সম্পন্ন হবে। আহ্বায়ক কমিটির নেতারা জানিয়েছেন- সিলেট জেলা বিএনপি’র কাউন্সিল এবার উন্মুক্ত স্থানে হতে পারে। সেজন্য সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ প্রথম পছন্দ। এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কাউন্সিলে ভোটার বেশি হওয়ার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তারা ইনডোরে আয়োজন করতে পারছেন না। এদিকে- গতকালের নির্দেশনার পর প্রার্থীদের অনেকেরই মন ভেঙেছে। কারণ- তারা ইতিমধ্যে মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনের জন্য প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। আবার প্রথম শর্ত নিয়েও দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন নেতারা। নতুন নির্দেশনার কারণে জেলার আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে কপাল পুড়তে পারে জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল ও সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতির সভাপতি আবুল কাশেমের। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী খান জামাল ও আবুল কাশেম সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী। জেলা বিএনপি’র এবারের কাউন্সিলে সভাপতি প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন- সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাবেক সভাপতি আবুল কাহ্‌হের শামীম ও যুবদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সহ সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন- সাবেক সাধারন সম্পাদক আলী আহমদ, সিলেট জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান, বিএনপি নেতা কামরুল হাসান শাহীন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও আব্দুল আহাদ খান জামাল। এছাড়া সিনিয়র সহ- সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও প্রার্থী হয়েছেন অনেকেই। তবে- কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন মানবজমিনকে জানিয়েছেন- জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক, সদস্য সচিব কিংবা অঙ্গসংগঠনের দায়িত্বশীল কেউ প্রার্থী হতে আপত্তি নেই। প্রার্থী হওয়ার আগে তাকে আগের পদ ছাড়তে হবে। যদি কেউ সেটি করেন অবশ্যই তিনি কাউন্সিলে প্রার্থী হতে পারবেন।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status