দেশ বিদেশ

সিজিএস-এর সেমিনারে তথ্য

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮৫ ভাগ মামলায় বাদী সরকারদলীয় নেতাকর্মী

স্টাফ রিপোর্টার

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, শুক্রবার, ৯:৩৪ অপরাহ্ন

দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলার ৮৫ শতাংশের বাদী সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা। গতকাল সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্ট্যাডিজের (সিজিএস) এক ওয়েবিনারে এ তথ্য জানানো হয়। গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে ওয়েবিনারে বলা হয়, ২০২০ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় এক হাজার ৫০০-এর বেশি মামলা করা হয়েছে। ২০১৮ সালের মামলার সংখ্যা ছিল ৯২৫টি, ২০১৯ সালে ছিল এক হাজার ১৮৯টি এবং ২০২০ সালে এই আইনের আওতায় মোট দায়েরকৃত মামলা ছিল এক হাজার ১২৮টি। এর ধারাবাহিকতায় সিজিএস ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩০শে জানুয়ারি পর্যন্ত সর্বমোট ৮৩৫টি মামলার বিস্তারিত তথ্যাদি সংগ্রহ করেছে। সিজিএসের গবেষণায় ২১ মাসের মামলা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৮৫ শতাংশ মামলা সরকারি দলের নেতাকর্মীরা করেছে। তার মধ্যে ৯৫টি মামলা প্রধানমন্ত্রীর মানহানির জন্য করেছে, ৫০টি মামলা মন্ত্রীদের মানহানির জন্য করা হয়েছে। সিজিএস-এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন- ২০১৮: চড়া মূল্য দিচ্ছে কারা?’ শীর্ষক ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন সিজিএস-এর চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব বন্ধ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত, মিথ্যা, গুজব ও অপপ্রচার চালানো হয়। কারা এসব গুজব ছড়ায় তার তথ্যও কিছু ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। তাই এসব রোধে ডিজিটাল আইনের দরকার রয়েছে। সারা বিশ্বেই ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে অপব্যবহার করা নিয়ে আইন রয়েছে। এটা যে শুধু বাংলাদেশে আইন হয়েছে বিষয়টা তেমন নয়। দেশের বাইরে থেকে যারা দেশের ভেতরে ডিজিটাল অপরাধ করে তাদের রোধ করতে ও অসামাজিক কার্যকলাপ, অশালীনতা, জঙ্গি সন্ত্রাসবাদকে রোধ করতে এই আইনের প্রয়োজনীয়তা কেউ অস্বীকার করেন না। আইনের অপপ্রয়োগ রোধ করার জন্য প্রতিকার রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সত্য মামলা করার জন্য যেই সাজা মিথ্যা মামলার জন্য একই সাজার বিধান রয়েছে। তবে আইনের অপপ্রয়োগে অতি উৎসাহীদের ভূমিকা অনেক সময় সদিচ্ছাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে সংবাদমাধ্যমে অনেক সমালোচনা করা যাচ্ছে যেটা অতীতে কখনো করা যায়নি। স্বাধীন সংবাদমাধ্যম না থাকলে একটি রাষ্ট্র সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। আমরা চাই দেশে সমালোচনা হোক। বস্তুনিষ্ঠতা হোক। কারণ শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন গণমাধ্যম বিকশিত হলে রাষ্ট্র উপকৃত হবে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ)- সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অনেক রকম ফাঁকফোকর রয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে যেন জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয় সেটা দেখার দায়িত্ব সরকারের। এই আইনের সংকটগুলো চিহ্নিত করে পরিবর্তন করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুই ধরনের অপরাধ রয়েছে। একটা কম্পিউটার রিলেটেড অপরাধ হ্যাকিং করা, কম্পিউটার সিস্টেমে ঢুকে যাওয়া অন্যটি কথা বলার অপরাধ। কম্পিউটার রিলেটেড অপরাধ পৃথিবীর সব দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেই রয়েছে। এগুলো আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। তবে কথা বলার অপরাধের বিধানগুলো কিছু ক্ষেত্রে থাকতে পারে কিন্তু তার আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status