বাংলারজমিন
ঝালকাঠি-নলছিটি উপজেলার ১৯৪ জন গ্রাম পুলিশ বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
২৪ জানুয়ারি ২০২২, সোমবার, ৯:০১ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি ও নলছিটি দুই উপজেলার ১৯৪ জন গ্রাম পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় রাজস্ব খাত অংশের বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় জীবনবাজী রেখে দায়িত্ব পালনকারী এসব গ্রাম পুলিশের নিজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। জেলা সদর উপজেলার ৯৮ জন গ্রাম পুলিশ ১২ মাস ধরে ও নলছিটি উপজেলার ৯৬ জন গ্রাম পুলিশ ৭ মাস ধরে স্থানীয় রাজস্ব খাত অংশের বেতন-ভাতা না পাওয়ায় তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। এ সব গ্রাম পুলিশ ও তাদের পরিবারের কথা বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত তাদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন। জানা গেছে, গ্রাম পুলিশ হিসেবে কর্মরত ইউনিয়ন পর্যায়ের দফাদার-চৌকিদারদের বেতন-ভাতার অর্ধেক সরকারি রাজস্ব খাত থেকে ও বাকি অর্ধেক বেতনসহ ভাতার অর্থ দেয়া হয় উপজেলার স্থানীয় রাজস্ব খাতের ১% অর্থ থেকে। জেলার ৪টি উপজেলার মধ্যে রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলার গ্রাম পুলিশেরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পেলেও ঝালকাঠি ও নলছিটি উপজেলা দু’টির ২১ জন দফাদার ও ১৭৩ জন চৌকিদারসহ ১৯৪ জন গ্রাম পুলিশ তাদের বেতন-ভাতা না পাওয়ায় পরিবার নিয়ে নিদারুণ অর্থাভাবে দিন কাটাচ্ছেন। সদর উপজেলার কয়েকজন গ্রাম পুলিশ জানায়, বিগত ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সদর উপজেলার ৯৮ জন গ্রাম পুলিশের পুরো ১২ মাসের বেতন-ভাতা বাবত ৫২ লাখ ৬৩ হাজার ২শ’ টাকা বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে। এরমধ্যে প্রতি দফাদারের মাসে ৭ হাজার টাকা বেতনের মধ্যে স্থানীয় রাজস্ব খাত অংশের ৩৫শ’ ও ভাতা ১২শ’ টাকাসহ মোট ৪ হাজার ৭শ’ টাকা বকেয়া রয়েছে। একইভাবে প্রতি চৌকিদারের মাসে ৬ হাজার ৫শ’ টাকা বেতনের স্থানীয় রাজস্ব খাত অংশের ৩ হাজার ২৫০ টাকা ও ভাতা ১২শ’ টাকাসহ মোট ৪ হাজার ৪৫০ টাকা পর্যন্ত বকেয়া রয়েছে। এতে গত এক বছরে দফাদার প্রতি ৫৬ হাজার ৪শ’ টাকা ও ১০ জন দফাদারের ১২ মাসে ৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকা বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে। একইভাবে চৌকিদার প্রতি ৫৩ হাজার ৪শ’ টাকা হিসাবে ৮৮ জন চৌকিদারের ১২ মাসে ৪৬ লাখ ৯৯ হাজার ২শ’ টাকা বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে। অন্যদিকে নলছিটি উপজেলা সূত্রে জানা গেছে, নলছিটির ৯৬ জন গ্রাম পুলিশের ২০২১ সালে ৭ মাসের বেতন-ভাতা বাবত মোট ২৮ লাখ ৭৮ হাজার ৫০ টাকা বকেয়া রয়েছে। এরমধ্যে প্রতি দফাদার মাসে ৪ হাজার ৭শ’ টাকা হিসাবে ৭ মাসে ৩২ হাজার ৯শ টাকা করে ১১ জন দফাদারের মোট ২ লাখ ৩০ হাজার ৩শ’ টাকার বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে। আর প্রতি চৌকিদার মাসে ৪ হাজার ৪৫০ টাকা ও ৭ মাসে ৩১ হাজার ১৫০ টাকা হিসাবে ৮৫ জন চৌকিদারের বেতন-ভাতা ২৬ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫০ টাকা বকেয়া রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেকুন্নাহার জানান, গত বছর করনার কারণে স্থানীয় রাজস্ব আয় কম হওয়ায় কিছু টাকা বকেয়া হওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি নেই বরং দ্রুত তাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্থ করেন।