শেষের পাতা

এখনই বাসায় ফিরছেন না খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার

২৩ জানুয়ারি ২০২২, রবিবার, ৯:২৪ অপরাহ্ন

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার স্থায়ী উন্নতি হয়নি। চিকিৎসকের ভাষায়, দু’দিন ভালো থাকলে ৩ দিন খারাপ থাকেন। স্বাস্থ্যের প্যারামিটারগুলো উঠানামা করছে। মাঝে মধ্যে কিছুটা উন্নতি হলেও নানা কারণে তা ধরে রাখতে পারছেন না তিনি। শনিবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য মানবজমিনকে বলেন, করোনা সংক্রমণ ফের বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে রেখে ম্যাডামের চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা শঙ্কা রয়েছে। শনিবার মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক হয়েছে। খালেদা জিয়ার কেবিনে চলাচল একেবারে সীমিত করা হয়েছে। কেবিনে প্রবেশের আগে নার্স ও স্টাফদেরও তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। বাইরে থেকে কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। বোর্ড এখনই হাসপাতাল থেকে খালেদা জিয়াকে ছাড়পত্র দিচ্ছে না। নতুন করে আরও বেশ কয়েকটি টেস্ট দেয়া হয়েছে। মোটামুটি ঝুঁকিমুক্ত হলেই বাসায় যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। আপাতত সপ্তাহখানেক নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তিনি বলেন, প্রথমবার ম্যাডাম করোনা পজেটিভ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে হাসপাতাল থেকেই তিনি আবার করোনা সংক্রমিত হন। এ জন্য এবারো ভয় কাজ করছে। হাসপাতালে প্রচুর কোভিড রোগী আসা-যাওয়া করছে। কেবিনেও নার্স, স্টাফ, আয়া, ক্লিনারসহ অনেকেই যাচ্ছেন। তাদের কাছ থেকে সংক্রমিত হতে পারেন। বোর্ড এ জন্যই খালেদা জিয়াকে বাসায় রেখে চিকিৎসার চিন্তা করেছিল। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা তেমন স্বস্তিদায়ক নয়। আজ ভালো তো কাল খারাপ! সবচেয়ে ভয়ের কারণ রক্তক্ষরণ। যা গতকাল শনিবারও অল্প পরিমাণে হয়েছে। এটি বন্ধ হচ্ছে না কোনোভাবেই। রক্তের হিমোগ্লোবিন হুহু করে কমে যায়। আবার সময় নিয়ে একটু বাড়ে।
ওই চিকিৎসক বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের ডায়াবেটিস কখনো নিয়ন্ত্রণে ছিল না। ইনসুলিন দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে ঝুঁকিমুক্ত বলা যাবে না। এজন্য কেবিনে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সিসিইউ’র সাপোর্টও রাখা হয়েছে। ইলেক্ট্ররাল ইমব্যালেন্স অর্থাৎ খনিজে অসমতা দেখা দিচ্ছে মাঝে মধ্যে। এজন্য শরীর প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে যায়। রুচি কমে যায়। ম্যাডাম হাসপাতালে থাকতে চান না। তিনি বাসায় যেতে চান। আর এই বয়সের একজন মানুষকে টানা হাসপাতালের বিছানায় থাকাও ভীষণ যন্ত্রণার ব্যাপার। চিকিৎসা সম্পূর্ণ না করে বাসায় নিয়ে গেলে তো আবারো হাসপাতালে নিতে হয়। তার জন্য বর্তমানে বারবার আনা-নেয়াও খুব ক্ষতির বিষয়। কারণ চারদিকে করোনা বাড়ছে।
মেডিকেল বোর্ডের আরেকজন চিকিৎসক বলেন, ম্যাডামকে দেশের বাইরে নিয়ে যত দ্রুত চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে, ততই তার জন্য মঙ্গল। দেশে যে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব তা দেয়া হয়েছে। তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে উন্নত সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া ছাড়া এখন কোনো বিকল্প নেই। এটি আমরা পরিবারকে বারবার এড্রেস করেছি।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা জানান, গত ১৫ই জানুয়ারি খালেদা জিয়ার গৃহকর্মী ফাতেমা করোনায় আক্রান্ত হন। তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনা ব্লকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে সে সুস্থ রয়েছে। ফাতেমা করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর বেগম জিয়ারও করোনার নমুনা নেয়া হয়। ফলাফল নেগেটিভ আসে। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় তার পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান শিথি গত ১৬ই জানুয়ারি লন্ডনে চলে গেছেন। এখন বিএনপি নেত্রীর জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের পাশাপাশি তার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ অন্যরা নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। তবে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পরিবার কিংবা দলের নেতাদের সাক্ষাতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status