খেলা

ফিরছেন সিডন্স কিন্তু কাজ করবেন কোথায়!

স্পোর্টস রিপোর্টার

২৩ জানুয়ারি ২০২২, রবিবার, ৮:৫০ অপরাহ্ন

২০১০, অস্ট্রেলিয়ান পত্রিকা সিডনি মর্নিং হেরাল্ডে একটা সাক্ষাৎকারে জেমি সিডন্স বলেন. ‘ডায়নামাইটের মতো কয়েকজন ক্রিকেটার আছে আমার দলে। সাকিব আল হাসান অস্ট্রেলিয়া দলে ছয় নম্বরে ব্যাট করতে পারে, হতে পারে এক নম্বর স্পিনারও। আর শেন ওয়াটসনের সঙ্গে তামিম ইকবাল দিব্যি ওপেন করার সামর্থ্য রাখে।’ তার সেই ভবিষ্যদ্বানী অনেকটাই সত্যি হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে ছাড়িয়ে এই দু’জন এখন জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্বমঞ্চে। কিন্তু তাদের গুরু হিসেবে সেই সিডন্স আর নেই। ২০১১ বিশ্বকাপে টাইগারদের ব্যর্থতার দায় নিয়ে বিদায় জানান সিডন্স। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটাররের ক্যারিয়ার শেষ করে দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। তার কোচিং যুগে (২০০৭-২০১১) ১৯ টেস্টে ২টি জয়, ১৬টি হার ও ১টি ড্র। রঙিন পোশাকে ৮৪ ওয়ানডে থেকে ৩১টি জয়, ৫৩টি হার। আর ১৫ টি-টোয়েন্টিতে ২টি জয় ও ১৩টি হার। সফল বললে ভুল হওয়ার কথা নয়। এরপরও এ দেশের কোচ যাওয়া-আসার  যে সংস্কৃতি তারই বলি হন তিনি। সেই সঙ্গে মাঠে ও বাইরের নানা রাজনীতিও কম নয়। তবে সেই সিডন্সের কাছেই ফিরে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি ভিসা পেয়েছেন। ঢাকায় পা রাখবেন ফেব্রুয়ারির শুরুতেই। তাকে ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে এই কোচ নিজেই জানেন না তার আসলে কাজ কী! এ নিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তাও পোষ্ট করেছেন।

বিসিবি জিমি সিডন্সের সঙ্গে চুক্তি করেছে আগামী দুই বছরের জন্য। বাংলাদেশে আসার জন্য ভিসা হাতে পেয়ে গেছেন তিনি। দ্বিতীয় দফাতেও বাংলাদেশে দারুণ সময় কাটবে এমনটাই প্রত্যাশা তার। তবে তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না তার কাজের ধরনটা আসলে কী! সিডন্স বলেন, ‘আমি জাতীয় দলের ব্যাটারদের সঙ্গে কাজ করবো, পাশাপাশি তরুণ ব্যাটারদের নিয়েও কাজ করবো। আমি শতভাগ নিশ্চিত নই আমার সিংহভাগ সময় কাদের সঙ্গে কাটবে। তবে এটি নিশ্চিত প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করবো।’ সিডন্স বলেন, ‘যেমনটা বললাম, আজকে আমি ভিসা পেয়ে গেছি। এই মাসের শেষদিকের টিকিট করবো। আশা করছি ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকেই কাজ শুরু করতে পারবো। বাংলাদেশে আগেও কাজ করেছি। তখন দারুণ সময় কেটেছে। এবারও ভালো হবে আশা করছি।’ জেমির সম্ভাব্য কাজ নিয়ে বিসিবিতেও আছে ধোঁয়াশা। বিশেষ করে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে বিসিবি ছাঁটাই করছে এই গুঞ্জন চরমে। তাই ফেব্রুয়ারিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিনি কাজ করবেন কিনা তাও নিশ্চিত নয়। আর জেমি সেই সময়েই আসছেন ঢাকায়। তাই ধারণা করা হচ্ছে রাসেল না আসলে হয়তো তার পরিবর্তে জাতীয় দলে কাজ করবেন জেমি।  

জেমি সিডন্স অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন কেবল ১ ওয়ানডেতে। তবে  ছোট্ট খেলোয়াড়ি জীবন শেষে অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের উন্নতিতে কাজ করেছেন কোচ হিসাবে। এবার বাংলাদেশে তিনি প্রধান কোচ হিসেবে না এলেও যতটা জানা গেছে তার কাজ হবে তরুণ ক্রিকেটারদের ব্যাটিংয়ের উন্নতি নিয়ে। জেমিও মুখিয়ে আছেন টাইগার তরুণদের নিয়ে কাজ করতে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে তরুণ প্রতিভাবান ব্যাটারদের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে রয়েছি। যারা জাতীয় দলে খেলছে এবং জুনিয়র ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে আছে। জুনিয়র ক্রিকেটারদের নিজেদের খেলার মান বাড়াতে সাহায্য করতে ভালোবাসি আমি। বাংলাদেশের ভিসা পেয়ে গেছি আমি। আমার পরবর্তী কোচিং অধ্যায় হবে সেখানে। আশা করছি দুই বছর কাজ করবো। অক্টোবরে আবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ফিরবো অস্ট্রেলিয়ায়।’

দূরে থাকলেও বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ভালো ফলো করেন জেমি সিডন্স। তিনি বলেন, ‘সামপ্রতিক সময়ে বেশ কিছু ভালো জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। এছাড়া সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতে পাওয়া জয়টি।  প্রথম ম্যাচে তারা সবকিছুই ভালো করেছে। ব্যাটিং দুর্দান্ত ছিল, বোলিংয়েও ভালো করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে আবার সব উলটে গেলো। আমি জানি না কেনো এমন হয়েছে। তবে এ বিষয়টাই হয়, কিছুটা অধারাবাহিক। আশা করি সেখানে গিয়ে এ বিষয়ে সাহায্য করতে পারবো। তো সপ্তাহখানেকের মধ্যেই সেখানে পৌঁছে যাবো। আমার জন্য শুভকামনা রাখবেন। আমার ইউটিউব চ্যানেলে চোখ রাখুন। বাংলাদেশে কোচিং অভিজ্ঞতার কিছু কিছু অংশ সেখানে আপলোড করবো। যাতে তরুণ ক্রিকেটাররা কিছু পরামর্শ পেতে পারে। পাশাপাশি আমি আমার বাংলাদেশ জীবন নিয়েও কিছু ভিডিও দেবো।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status