বাংলারজমিন
অজ্ঞান পার্টির অভিনব কৌশল
সরাইলে সর্বস্ব খুইয়েছেন আনোয়ারা
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
২১ জানুয়ারি ২০২২, শুক্রবার, ৯:১৮ অপরাহ্ন

সরাইলে সম্প্রতি অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিনব কৌশল প্রয়োগ করে এরা লুটে নিচ্ছে মানুষের টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার। গত সোমবার বিকালে সরাইল সদরের অন্নদা স্কুুলের সামনে আনোয়ারা বেগম (৬০) নামের এক বৃদ্ধাকে কৌশলে মতিভ্রম (বেবুলা) করে স্বর্ণালঙ্কারসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ছিনিয়ে নিয়েছে। সিসি ক্যামেরা থাকায় ভিডিও ফুটেজে অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ছবি ধরা পড়েছে। সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে পরিষ্কারভাবে ভেসে উঠেছে ওই বাহিনীর ছিনতাইয়ের দৃশ্য। পুলিশসহ অনেকেই ধারণা করছেন এরা সরাইলের নয়। পার্শ্ববর্তী কোনো উপজেলা বা অন্য কোথাও থেকে এসে কাজগুলো করছে। এদের টার্গেট বয়স্ক নারী ও পুরুষ। অনেক সময় মধ্যবয়সীরাও এদের কৌশলের শিকার হয়। ভুক্তভোগী আনোয়ারা বেগম ও স্থানীয়রা জানায়, সদর উপজেলার কুট্রাপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা সৈনিক প্রয়াত ওয়াহিদ হোসেন রাধনের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। গত সোমবার বিকালে তিনি ওষুধ ক্রয়ের জন্য বাড়ি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে আরও ৪ যাত্রীসহ সরাইল অন্নদা স্কুল মোড়ে নামেন। যাত্রী ১৩ বছর বয়সের কিশোরটি মায়ের অসুস্থতার কথা বলে আনোয়ারার হাতে একটি রুমাল দিয়ে মোড়ানো একটি প্যাকেট দেয়। এটি হাতে নিয়েই মতিভ্রম হয়ে যান আনোয়ারার। ওই কিশোর আনোয়ারাকে নিয়ে অন্নদা স্কুলের প্রধান ফটকের সামনের মার্কেটের সিঁড়িতে যায়। এ সময় পাহাড়ায় ছিল ২ যুবক। কিশোর ছেলেটি আনোয়ারার নগদ টাকা, হাতের-গলার-কানের সকল স্বর্ণালঙ্কার একে একে খুলে নেয়। কাজ শেষ করে সটকে পড়ে ওই সিন্ডিকেটের সকল সদস্য। অনেকক্ষণ পর আনোয়ারা বুঝতে পারেন অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়েছিলেন তিনি। ততক্ষণে ওনার সবকিছু খুঁইয়ে ফেলেছেন। আনোয়ারার চিৎকারে লোকজন এসে পুরো ঘটনা জানতে পারেন। স্থানীয়রা জানায়, গত ১৫-২০ দিনের মধ্যে এমন আরও কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। সৈয়দটুলা গ্রামের আব্দুর রহমানের স্ত্রী সুরুজ বানুকে এভাবে মতিভ্রম করে বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে ২০ সহস্রাধিক টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে গেছে। কুট্রাপাড়া গ্রামের সাইদ বক্সের স্বজন জনৈক মহিলার স্বর্ণালঙ্কারও একই কায়দায় নিয়েছে। আনোয়ারা বেগমের পরিবারের লোকজন বিষয়টি সরাইল থানাকে অবহিত করেছেন। সিসি ক্যামারায় ধারণকৃত পুরো ঘটনার ভিডিও তারা পুলিশ প্রশাসনকে দিয়েছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি চলছিল। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ এখনো দেয়নি। তবে আমরা খুবই গুরুত্ব সহকারে কাজ করছি। দ্রুতই ব্যবস্থা নেবো।