বিশ্বজমিন
নাগরিকত্ব হারিয়ে বৃটিশ নাগরিকের বাংলাদেশে ৫ বছরের দুর্বিষহ জীবন, অতঃপর মুক্তি
মানবজমিন ডেস্ক
১৯ জানুয়ারি ২০২২, বুধবার, ৯:৪৮ অপরাহ্ন
পাঁচ বছরের দুর্বিষহ জীবন ও আদালতে লড়াইয়ের পর নিজের নাগরিকত্ব ফিরে পেয়েছেন এক বৃটিশ নাগরিক। দেশটির সরকার সন্ত্রাসবাদে যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলে তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দিয়েছিল। অথচ এমন দাবির পক্ষে কোনো ধরনের তথ্য প্রমাণ দেখাতে পারেনি তারা। অবশেষে আদালতে লড়াই করে নাগরিকত্ব ফিরে পেয়েছেন তিনি। বৃটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক রিপোর্টে নাগরিকত্ব হারানোর পর তার 'বিধ্বস্ত' জীবনের গল্প তুলে ধরা হয়েছে।
এতে জানানো হয়, ওই ব্যক্তির জন্ম লন্ডনে হলেও তার স্ত্রী ও সন্তানেরা থাকেন বাংলাদেশে। ২০১৭ সালে তাদের কাছে আসতে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু সে সময় আকস্মিক তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয় বৃটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফলে রাষ্ট্রহীন অবস্থায় গত পাঁচ বছর তিনি বাংলাদেশেই আটকে ছিলেন। বাংলাদেশে বসেই তিনি বৃটিশ আদালতে নাগরিকত্ব ফিরে পেতে লড়াই শুরু করেন। গার্ডিয়ান জানিয়েছে, আদালতের নথিপত্রে তার নাম গোপন রাখা হয়েছে। বৃটিশ সরকার তার নাগরিকত্ব বাতিলের কারণ হিসেবে জানিয়েছিল যে, ওই ব্যক্তি একজন ইসলামপন্থী উগ্রবাদী। তিনি সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে বিদেশে সফর করতে চেয়েছেন। ফলে তাকে বৃটেনের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু তার আইনজীবী ফাহাদ আনসারি জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব বাতিল নিয়ে বৃটিশ সরকার কোনো ব্যাখ্যা কিংবা তার সন্ত্রাসবাদে যুক্ত থাকার পক্ষে নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ প্রদান করতে পারেনি। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে বেআইনি দাবি করে বলেন, এ কারণে তার মক্কেলের জীবন থেকে পাঁচটি বছর হারিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেন ওই ব্যক্তি। এর এক বছর পর তার প্রথম মেয়ের জন্ম হয়। তিনি বৃটেনে কাজ করে বাংলাদেশে স্ত্রীর কাছে অর্থ পাঠাতেন। পর্যাপ্ত আয় না থাকায় তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানকে বৃটেনে নিয়ে আসতে পারছিলেন না। ২০১৭ সালের ১৯শে এপ্রিল তিনি বাংলাদেশ সফর করেন। বাংলাদেশে থাকা অবস্থায়েই ২০১৭ সালের ৩রা জুন তার নাগরিকত্ব বাতিলের নোটিস দেয় বৃটিশ সরকার। এটি পাঠানো হয় লন্ডনে তার মায়ের ঠিকানায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার মা’কে জানায়, তার ছেলে আর বৃটেনে ফিরতে পারবে না। এরপরই নাগরিকত্ব ফিরে পেতে আইনি লড়াই শুরু করেন তিনি এবং এতে জয় পান।
এদিকে নাগরিকত্ব ফিরে পেয়ে বৃটেনে ফিরে গেছেন ওই ব্যক্তি। সেখানে তার বিরুদ্ধে আনা বৃটিশ সরকারের অভিযোগকে ঠুনকো বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত অজ্ঞাত উদ্দেশ্যে অজ্ঞাত এক দেশে সফরের চেষ্টা করেছি আমি। এমন অভিযোগে নিজেকে কীভাবে নির্দোষ প্রমাণ করবো? বৃটিশ সরকার যেখানে গোপন প্রমাণের উপর নির্ভর করছে। সরকার আমার কোন অপরাধের বিষয়ে বলছে আমার কোনো ধারণাই নেই। তিনি আরও বলেন, আমি যদি অপরাধী হই তাহলে আমাকে কেন গ্রেপ্তার বা জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো না? আমাকে কেন এভাবে সাজা দেয়া হলো অথচ আমার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ তারা দেখাতে পারেনি। সরকারকে এখন স্বীকার করতে হবে যে, তারা ভুল করেছে।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কারণে জীবনে কী কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তার বর্ণনা দেন ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমাকে রাষ্ট্রহীন করে দেয়া হয়। এমনকি আমি জানতামও না কী কারণে হঠাৎ করেই আমার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়া হয়েছিল। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। এটা ছিল আমার জীবনের সবথেকে হতাশাজনক সময়। আমি বৃটিশ নাগরিক, এটিই আমার পরিচয়। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, বৃটেনে জন্ম নেয়া ও এখানেই বড় হওয়াই আর যথেষ্ট নয়। আমার পূর্বপুরুষ অন্য দেশের হওয়ায় আমি দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত হয়েছি।
ওই ব্যক্তি যখন বাংলাদেশে ছিলেন তখন তার স্ত্রী আরেকটি সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু সে সময় যেহেতু তিনি রাষ্ট্রহীন ছিলেন তাই তার ওই সন্তানকে বৃটিশ নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। শিগগিরই আদালতে এর শুনানি হবে বলে গার্ডিয়ানের রিপোর্টে জানানো হয়েছে। তার আইনজীবী আনসারি বলেন, আমরা তার সন্তানকে একজন বৃটিশ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি এনে দিতে লড়াই চালিয়ে যাব।
গার্ডিয়ানের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বৃটিশ রাজনীতিবিদরা একটি বিতর্কিত আইন পাশ করতে যাচ্ছে যার অধীনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাউকে না জানিয়েই তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দিতে পারবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এ আইনের কারণে একই অপরাধের জন্য শেতাঙ্গ বৃটিশদের থেকে সেদেশের জাতিগত সংখ্যালঘুদের আলাদা করে দেখা হবে।
এতে জানানো হয়, ওই ব্যক্তির জন্ম লন্ডনে হলেও তার স্ত্রী ও সন্তানেরা থাকেন বাংলাদেশে। ২০১৭ সালে তাদের কাছে আসতে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু সে সময় আকস্মিক তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয় বৃটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফলে রাষ্ট্রহীন অবস্থায় গত পাঁচ বছর তিনি বাংলাদেশেই আটকে ছিলেন। বাংলাদেশে বসেই তিনি বৃটিশ আদালতে নাগরিকত্ব ফিরে পেতে লড়াই শুরু করেন। গার্ডিয়ান জানিয়েছে, আদালতের নথিপত্রে তার নাম গোপন রাখা হয়েছে। বৃটিশ সরকার তার নাগরিকত্ব বাতিলের কারণ হিসেবে জানিয়েছিল যে, ওই ব্যক্তি একজন ইসলামপন্থী উগ্রবাদী। তিনি সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে বিদেশে সফর করতে চেয়েছেন। ফলে তাকে বৃটেনের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু তার আইনজীবী ফাহাদ আনসারি জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব বাতিল নিয়ে বৃটিশ সরকার কোনো ব্যাখ্যা কিংবা তার সন্ত্রাসবাদে যুক্ত থাকার পক্ষে নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ প্রদান করতে পারেনি। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে বেআইনি দাবি করে বলেন, এ কারণে তার মক্কেলের জীবন থেকে পাঁচটি বছর হারিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেন ওই ব্যক্তি। এর এক বছর পর তার প্রথম মেয়ের জন্ম হয়। তিনি বৃটেনে কাজ করে বাংলাদেশে স্ত্রীর কাছে অর্থ পাঠাতেন। পর্যাপ্ত আয় না থাকায় তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানকে বৃটেনে নিয়ে আসতে পারছিলেন না। ২০১৭ সালের ১৯শে এপ্রিল তিনি বাংলাদেশ সফর করেন। বাংলাদেশে থাকা অবস্থায়েই ২০১৭ সালের ৩রা জুন তার নাগরিকত্ব বাতিলের নোটিস দেয় বৃটিশ সরকার। এটি পাঠানো হয় লন্ডনে তার মায়ের ঠিকানায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার মা’কে জানায়, তার ছেলে আর বৃটেনে ফিরতে পারবে না। এরপরই নাগরিকত্ব ফিরে পেতে আইনি লড়াই শুরু করেন তিনি এবং এতে জয় পান।
এদিকে নাগরিকত্ব ফিরে পেয়ে বৃটেনে ফিরে গেছেন ওই ব্যক্তি। সেখানে তার বিরুদ্ধে আনা বৃটিশ সরকারের অভিযোগকে ঠুনকো বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত অজ্ঞাত উদ্দেশ্যে অজ্ঞাত এক দেশে সফরের চেষ্টা করেছি আমি। এমন অভিযোগে নিজেকে কীভাবে নির্দোষ প্রমাণ করবো? বৃটিশ সরকার যেখানে গোপন প্রমাণের উপর নির্ভর করছে। সরকার আমার কোন অপরাধের বিষয়ে বলছে আমার কোনো ধারণাই নেই। তিনি আরও বলেন, আমি যদি অপরাধী হই তাহলে আমাকে কেন গ্রেপ্তার বা জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো না? আমাকে কেন এভাবে সাজা দেয়া হলো অথচ আমার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ তারা দেখাতে পারেনি। সরকারকে এখন স্বীকার করতে হবে যে, তারা ভুল করেছে।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কারণে জীবনে কী কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তার বর্ণনা দেন ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমাকে রাষ্ট্রহীন করে দেয়া হয়। এমনকি আমি জানতামও না কী কারণে হঠাৎ করেই আমার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়া হয়েছিল। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। এটা ছিল আমার জীবনের সবথেকে হতাশাজনক সময়। আমি বৃটিশ নাগরিক, এটিই আমার পরিচয়। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, বৃটেনে জন্ম নেয়া ও এখানেই বড় হওয়াই আর যথেষ্ট নয়। আমার পূর্বপুরুষ অন্য দেশের হওয়ায় আমি দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত হয়েছি।
ওই ব্যক্তি যখন বাংলাদেশে ছিলেন তখন তার স্ত্রী আরেকটি সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু সে সময় যেহেতু তিনি রাষ্ট্রহীন ছিলেন তাই তার ওই সন্তানকে বৃটিশ নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। শিগগিরই আদালতে এর শুনানি হবে বলে গার্ডিয়ানের রিপোর্টে জানানো হয়েছে। তার আইনজীবী আনসারি বলেন, আমরা তার সন্তানকে একজন বৃটিশ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি এনে দিতে লড়াই চালিয়ে যাব।
গার্ডিয়ানের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বৃটিশ রাজনীতিবিদরা একটি বিতর্কিত আইন পাশ করতে যাচ্ছে যার অধীনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাউকে না জানিয়েই তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দিতে পারবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এ আইনের কারণে একই অপরাধের জন্য শেতাঙ্গ বৃটিশদের থেকে সেদেশের জাতিগত সংখ্যালঘুদের আলাদা করে দেখা হবে।