বিশ্বজমিন

ডনের সম্পাদকীয়

সম্পর্ক গড়তে ইরানের বিরুদ্ধে অবরোধ তুলে নিতে হবে

মানবজমিন ডেস্ক

১৮ জানুয়ারি ২০২২, মঙ্গলবার, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন

সম্প্রতি চীন ও ইরানের মধ্যে কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। বেইজিং ও তেহরানের মধ্যে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি দ্বিপক্ষীয় চুক্তির চেয়েও বেশি কিছু। দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে এটি একটি শক্তিশালী প্রতীকি অর্থ প্রকাশ করে, যা যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ব্লকগুলোর কাছে একটি বার্তা দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা ডন-এর এক সম্পাদকীয়তে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, সম্প্রতি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাব্দোল্লাহিয়ান ঘোষণা দিয়েছেন, চীন সফরের পর এই চুক্তি বাস্তবায়নের পর্যায়ে প্রবেশ করেছে।

এই চুক্তিটি ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সময়ে গত বছর মার্চে স্বাক্ষরিত হয়। এতে জোর দেয়া হয়েছে অর্থনীতি, সামরিক এবং নিরাপত্তার বিষয়গুলো। ইরানের রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি এসব অগ্রগতিতে সমর্থন দিয়েছেন। এতে ইঙ্গিত মেলে যে, এই চুক্তি বাস্তব দশায় প্রবেশ করেছে।

ইরানকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। এতে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা ভেঙে ফেলতে এই চুক্তিকে ইরানের জন্য একটি লাইফলাইন হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বেইজিংয়ের কাছে কিন্তু এরই মধ্যে কম দামে তেল বিক্রি শুরু করেছে তেহরান।

দুই দেশের মধ্যে ব্যাপকভিত্তিক অংশীদারিত্ব এটাই ইঙ্গিত দেয় যে, ওয়াশিংটনের অসন্তোষ থাকা সত্ত্বেও উভয় দেশই তাদের সহযোগিতাকে আরো গভীরে নিয়ে যেতে আগ্রহী। ভিয়েনায় আসন্ন পারমাণবিক আলোচানায় এরই মধ্যে ইরানের পক্ষ নিয়েছে চীন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ এই আলোচনায় ইরানের ‘লজিক্যাল’ অবস্থানে সমর্থন দেবে তার দেশ। তিনি আরো বলেছেন, ইরানের মানুষের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকুক এটা আশা করে চীন।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বলয়ের বাইরে, চীন ও ইরানের মধ্যকার এই অংশীদারিত্ব হলো আমেরিকাবিরোধী দুর্বল ব্লকের সহযোগিতার একটি নিদর্শন। এ ক্ষেত্রে মাঝে মাঝেই জোরালো হয়ে ওঠে রাশিয়ার কথা। ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। ঠিক এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী চীনকে বড় হুমকি হিসেবে দেখে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের শাসকরা। ব্লক রাজনীতির এই চতুর খেলায় ইরানকে পা ফেলতে হবে খুবই সতর্কতার সঙ্গে।

পশ্চিমাদের দেয়া নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতি ভেঙে বেরিয়ে আসতে তাদের অর্থনৈতিক লাইফলাইন বিষয়ক সহায়তা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর হলে পশ্চিমা কিছু বন্ধুর মন জয় করতে পারে তেহরান। উপরন্তু, ইরানের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করতে হবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে। যদি তারা তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে আন্তরিক হয়, তাহলে নিষেধাজ্ঞা তুলতে হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status