বাংলারজমিন
ওমিক্রন শনাক্তের কোনো ব্যবস্থা নেই বন্দর নগরীতে
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৮ জানুয়ারি ২০২২, মঙ্গলবার, ৮:০৮ অপরাহ্ন
চট্টগ্রামে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। গত কয়েক মাসের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে এখানে সর্বশেষ গত রোববার (১৬ই জানুয়ারি) ২৪ ঘণ্টায় ৭৪২ জনের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তবে ওমিক্রন পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এখানে করোনার নতুন এই ধরনে কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন কি-না জানা সম্ভব হচ্ছে না। রোববার রাতে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের ১১টি ল্যাবে সর্বমোট ২ হাজার ৮৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭৪২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। নমুনা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। তবে হঠাৎ করে বন্দরনগরীতে এভাবে করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেলেও দৃশ্যত এই ভাইরাসের নতুন ধরন কারও শরীরে প্রবেশ করেনি। জানা যায়, কোভিড জীবাণুর সবচেয়ে বেশি মিউটেট হওয়া সংস্করণ ওমিক্রন। আবার ওমিক্রনের লক্ষণ খুব মৃদু হওয়ায় এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই ওমিক্রন শনাক্তের একমাত্র উপায় হচ্ছে জিনোম সিকোয়েন্সিং। তবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহরে এই সিকোয়েন্সিং এর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এখানে এতো করোনা আক্রান্তের মধ্যে কতোজনের শরীরে ওমিক্রন এসেছে সেটা বুঝা যাচ্ছে না। যে কারণে সারা দেশে রোববার পর্যন্ত ৫৫ জনের শরীরে ওমিক্রন শনাক্ত হলেও চট্টগ্রামে এই সংখ্যা এখনো শূন্যের ঘরেই বলে ধরে নেয়া হয়েছে। তবে সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ওমিক্রন শনাক্তের কোনো ব্যবস্থা না থাকলেও চট্টগ্রাম থেকে করোনা আক্রান্ত কয়েকজনের স্যাম্পল ঢাকার আইইসিডিআরে পাঠানো হয়েছে। যাদের মধ্যে সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য থেকে এসে করোনা আক্রান্ত হওয়া কয়েকজনের স্যাম্পলও রয়েছে। কিন্তু এসবের ফলাফল পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এদিকে গত বছরের ৭ই ডিসেম্বর চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ওমিক্রন শনাক্তের জন্য নিজস্ব উদ্যোগে ১০০টি কীট আনা হয়েছে বলে দাবি করেন। এসব কীট আনা বাবদ এই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের খরচ হয়েছিল ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। একটি কীট দিয়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায় শতভাগ ওমিক্রন শনাক্ত করা যাবে বলেও সে সময় সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। তবে এখনো পর্যন্ত তারা এসব কীটের ব্যবহার করেনি বলে জানা যায়। ওমিক্রন শনাক্তের বিষয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে আমরা কোভিডই শনাক্ত করি। এখানে ওমিক্রন শনাক্তের এখনো কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে আইইডিসিআর বা অধিদপ্তর থেকে যন্ত্রপাতি পাঠালে সেটি এখানে পরীক্ষা করা যাবে। আর এই সাইন্টেফিক বিষয়ে বিস্তারিত জানবেন বিআইটিআইডি এর ডা. শাকিল সাহেব। ওনি এখানকার করোনার ফোকাল পার্সন। আপনি ওনার কাছ সঙ্গে কথা বলেন।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) এর করোনা ল্যাবের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাকিল আহমদ বলেন, ‘ওমিক্রন শনাক্তকরণের জন্য জিনোম সিকোয়েন্সিং করতে হয়। তবে চট্টগ্রামে এর কোনো ব্যবস্থা নেই।
শুধু চট্টগ্রাম কেন, সারা দেশের সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে এই ব্যবস্থা নেই। ঢাকায় মাত্র কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এটি করা যায়। আইইডিসিয়ার তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কয়েকটি স্যাম্পল টেস্ট করাচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকেও কয়েকটি নমুনা আমরা পাঠিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘জিনোম সিকোয়েন্সিং অনেক ব্যয়সাপেক্ষ। প্রতিটি টেস্টে আনুষাঙ্গিক খরচ বাদ দিয়ে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়। যে কারণে এক্সপার্ট থাকা সত্ত্বেও রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে ওমিক্রন টেস্ট করানো সম্ভব হয়না। যদিও গত এক বছর আগে বিআইটিআইডি ও আইইডিসিআর মিলে যৌথভাবে সরকারের কাছে জিনোম সিকোয়েন্সিং এর যন্ত্রাপাতি কেনা বাবদ একটি প্রপোজাল দিয়েছিলাম। তবে এখনো এটি আলোর মুখ দেখেনি।’
শুধু চট্টগ্রাম কেন, সারা দেশের সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে এই ব্যবস্থা নেই। ঢাকায় মাত্র কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এটি করা যায়। আইইডিসিয়ার তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কয়েকটি স্যাম্পল টেস্ট করাচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকেও কয়েকটি নমুনা আমরা পাঠিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘জিনোম সিকোয়েন্সিং অনেক ব্যয়সাপেক্ষ। প্রতিটি টেস্টে আনুষাঙ্গিক খরচ বাদ দিয়ে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়। যে কারণে এক্সপার্ট থাকা সত্ত্বেও রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে ওমিক্রন টেস্ট করানো সম্ভব হয়না। যদিও গত এক বছর আগে বিআইটিআইডি ও আইইডিসিআর মিলে যৌথভাবে সরকারের কাছে জিনোম সিকোয়েন্সিং এর যন্ত্রাপাতি কেনা বাবদ একটি প্রপোজাল দিয়েছিলাম। তবে এখনো এটি আলোর মুখ দেখেনি।’