বাংলারজমিন
গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল
সিঁড়ির নিচে ও রাস্তায় চিকিৎসা, থাকতে হয় নাক চেপে
উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি
১৫ জানুয়ারি ২০২২, শনিবার, ২:৫৯ অপরাহ্ন
কেউ সিঁড়ির নিচে, কেউ বারান্দায়। কেউ অসুস্থ শিশু সন্তানকে বুকে জড়িয়ে মেঝেতে বসে আছেন স্যালাইন হাতে। জায়গা না পেয়ে আবার অনেকেই শিশুর হাতের স্যালাইন নিয়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বাইরের রাস্তায় বসে আছেন। এ অবস্থা গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ।
গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকতেই নজরে পড়বে লাশ কাটা ঘর। লাশ কাটা ঘরের পাশেই ডায়রিয়া ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে মাত্র ১০টি বেড। চাহিদার তুলনায় তা ১০ ভাগের এক ভাগ। ফলে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের ১০ জনের ভাগ্যে বেড জুটলেও অধিকাংশরই কপালে জোটে না।
সিপিবি নেতা মিহির ঘোষ বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থা বেহাল। হাতে স্যালাইন লাগিয়ে শিশুর মা অথবা স্বজনদের কোলে বসে দিনরাত কাটাতে হয় হাসপাতালের মেঝেতে। চারপাশে ময়লা আবর্জনার স্তূপ। দুর্গন্ধে আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকাও কঠিন। তারপরও স্বজনদের জীবন বাঁচাতে অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকতে হয় সিস্টার, নার্স আর ডাক্তারদের অপেক্ষায়। পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কারবারই আলাদা। রোগীদের সাথে আসা স্বজনদের বিপদে থাকতে হয়। তাদের পায়খানা প্রশ্রাবখানায় যেতে হয় দম বন্ধ করে। এমন অবস্থায় নাক মুখ চেপে ধরে থাকেন দাঁড়িয়ে, বসে অথবা পায়ে হেঁটে হেঁটে। অসহায় স্বজনরা হাসপাতালের বারান্দায় তাদের শিশুদের নিয়ে ঠাঁই নেন তবুও।
হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে তার শিশু পুত্রকে চিকিৎসা নিতে এসেছেন দাড়িয়াপুর থেকে মোমেনা বেগম। শীতজনিত রোগে আরও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে আসেন হাসপাতালে। রাত তিনটায় বিপদগ্রস্ত মোমেনা বেগম। এসে দেখেন কেউ নেই। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে এক নারী ঘুমিয়ে আছেন বিছানায়। ডেকে তুলতেই তিনি ক্ষেপে যান। তারপর হাতে ক্যানুলা লাগিয়ে আর স্যালাইন দিয়ে বলেন- যান । কোথায় যাবেন এই গভীর রাতে এই ভেবে মোমেনা তার স্বামীকে নিয়ে বারান্দায় বসে রাত কাটিয়ে দেন। সকালে শিশুর কিছুটা উন্নতি হয়। সকালে দেখা গেলো ওই শিশুকে কোলে নিয়ে সামনের রাস্তায় বসেছেন একটু রোদ পাবার আশায়।
তিনদিন আগে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে বুকে জড়িয়ে ভর্তি হয়েছেন ডায়রিয়া ওয়ার্ডে। নার্সরা নাকি দ্রুত চিকিৎসা দেন শিশুর। তিনদিনে তার ছুটির সময় হয়ে এসেছে। শিশু এখন হাসে খেলে। সে কারণে মা রায়হানা আর বাপ আব্বাসের মুখেও সুখের হাসি। কিন্তু দু:খের সাথে বলেন, ভাই এ কদিন কিভাবে ছিলাম তা বর্ণনা করতে পারবো না। মানুষের যে ব্যবহার এ রকম হতে পারে তা বুঝে গেলাম। ওষুধ সব বাইরে থেকে কিনে হাসপাতালে পেলাম ফ্রি স্যালাইন। পায়খানায় যেতে পারিনি। রোদ নাই, কনকনে ঠান্ডায় একটার পর একটা কাপড় নিয়ে আসতে হয়েছে।
হাসপাতালের কেউ মুখ খুলতে চান না। সাংবাদিকদের কাছে বলেন, কর্তাদের কাছে অনুমতি ছাড়া তারা কথা বলতে পারবেন না। সকালে সাংবাদিক দেখে বেশ তৎপর হয়ে উঠলেন নার্স আরিফা খাতুন। খোঁজ খবর নিতেই বললেন, ভাই ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বিছানা কম। তাই মেঝে, সিঁড়ির নিচে ঠাঁই করে দিতে হয় রোগীদের ।
রোগীর স্বজন হাফিজুর রহমান চোখ লাল লাল করে বললো, ভাই আমার ছেলের জীবন যায় যায় অবস্থা। কিন্তু ওনাদের ডেকে পাওয়া যায় না। একটা স্যালাইন লাগিয়ে দিয়ে দিয়ে বলে গেছে বসে থাকেন।
নার্সরা সারাক্ষণ রোগী সামাল দিতে গিয়ে সেবার উল্টোটা হয়। রোগী আসেন ৪০/৫০ জন কিন্তু জনবল কম থাকায় তারা সাধ্যমতো সেবা দিয়ে থাকেন বলে দাবি করেন ।
গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. তাহেরা আকতার মনি বলেন, আমাদের জনবল কম, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বিছানা মাত্র ১০টি । ফলে আগত রোগীদের সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয় না ।
গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকতেই নজরে পড়বে লাশ কাটা ঘর। লাশ কাটা ঘরের পাশেই ডায়রিয়া ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে মাত্র ১০টি বেড। চাহিদার তুলনায় তা ১০ ভাগের এক ভাগ। ফলে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের ১০ জনের ভাগ্যে বেড জুটলেও অধিকাংশরই কপালে জোটে না।
সিপিবি নেতা মিহির ঘোষ বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থা বেহাল। হাতে স্যালাইন লাগিয়ে শিশুর মা অথবা স্বজনদের কোলে বসে দিনরাত কাটাতে হয় হাসপাতালের মেঝেতে। চারপাশে ময়লা আবর্জনার স্তূপ। দুর্গন্ধে আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকাও কঠিন। তারপরও স্বজনদের জীবন বাঁচাতে অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকতে হয় সিস্টার, নার্স আর ডাক্তারদের অপেক্ষায়। পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের কারবারই আলাদা। রোগীদের সাথে আসা স্বজনদের বিপদে থাকতে হয়। তাদের পায়খানা প্রশ্রাবখানায় যেতে হয় দম বন্ধ করে। এমন অবস্থায় নাক মুখ চেপে ধরে থাকেন দাঁড়িয়ে, বসে অথবা পায়ে হেঁটে হেঁটে। অসহায় স্বজনরা হাসপাতালের বারান্দায় তাদের শিশুদের নিয়ে ঠাঁই নেন তবুও।
হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে তার শিশু পুত্রকে চিকিৎসা নিতে এসেছেন দাড়িয়াপুর থেকে মোমেনা বেগম। শীতজনিত রোগে আরও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে আসেন হাসপাতালে। রাত তিনটায় বিপদগ্রস্ত মোমেনা বেগম। এসে দেখেন কেউ নেই। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে এক নারী ঘুমিয়ে আছেন বিছানায়। ডেকে তুলতেই তিনি ক্ষেপে যান। তারপর হাতে ক্যানুলা লাগিয়ে আর স্যালাইন দিয়ে বলেন- যান । কোথায় যাবেন এই গভীর রাতে এই ভেবে মোমেনা তার স্বামীকে নিয়ে বারান্দায় বসে রাত কাটিয়ে দেন। সকালে শিশুর কিছুটা উন্নতি হয়। সকালে দেখা গেলো ওই শিশুকে কোলে নিয়ে সামনের রাস্তায় বসেছেন একটু রোদ পাবার আশায়।
তিনদিন আগে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে বুকে জড়িয়ে ভর্তি হয়েছেন ডায়রিয়া ওয়ার্ডে। নার্সরা নাকি দ্রুত চিকিৎসা দেন শিশুর। তিনদিনে তার ছুটির সময় হয়ে এসেছে। শিশু এখন হাসে খেলে। সে কারণে মা রায়হানা আর বাপ আব্বাসের মুখেও সুখের হাসি। কিন্তু দু:খের সাথে বলেন, ভাই এ কদিন কিভাবে ছিলাম তা বর্ণনা করতে পারবো না। মানুষের যে ব্যবহার এ রকম হতে পারে তা বুঝে গেলাম। ওষুধ সব বাইরে থেকে কিনে হাসপাতালে পেলাম ফ্রি স্যালাইন। পায়খানায় যেতে পারিনি। রোদ নাই, কনকনে ঠান্ডায় একটার পর একটা কাপড় নিয়ে আসতে হয়েছে।
হাসপাতালের কেউ মুখ খুলতে চান না। সাংবাদিকদের কাছে বলেন, কর্তাদের কাছে অনুমতি ছাড়া তারা কথা বলতে পারবেন না। সকালে সাংবাদিক দেখে বেশ তৎপর হয়ে উঠলেন নার্স আরিফা খাতুন। খোঁজ খবর নিতেই বললেন, ভাই ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বিছানা কম। তাই মেঝে, সিঁড়ির নিচে ঠাঁই করে দিতে হয় রোগীদের ।
রোগীর স্বজন হাফিজুর রহমান চোখ লাল লাল করে বললো, ভাই আমার ছেলের জীবন যায় যায় অবস্থা। কিন্তু ওনাদের ডেকে পাওয়া যায় না। একটা স্যালাইন লাগিয়ে দিয়ে দিয়ে বলে গেছে বসে থাকেন।
নার্সরা সারাক্ষণ রোগী সামাল দিতে গিয়ে সেবার উল্টোটা হয়। রোগী আসেন ৪০/৫০ জন কিন্তু জনবল কম থাকায় তারা সাধ্যমতো সেবা দিয়ে থাকেন বলে দাবি করেন ।
গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. তাহেরা আকতার মনি বলেন, আমাদের জনবল কম, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বিছানা মাত্র ১০টি । ফলে আগত রোগীদের সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয় না ।