এনআইডি যাচাই কপি দেয়ার নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) যাচাই কপি দেয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে অনলাইন যাচাই কপি দেয়ার বিধান না থাকলেও এই বাবদ প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। এই টাকার বিপরীতে কোনো রশিদ দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন প্রার্থীরা।
জানা গেছে, গত বুধবার ছিল ইউপি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ তারিখ। নির্বাচনে ৮ ইউপিতে মোট ৪৫৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। বেশ কয়েকজন প্রার্থী অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম মনোনয়নপত্রের সঙ্গে তাদের এনআইডি কার্ডের অনলাইন যাচাই কপি জমা দিতে বলেন। প্রতিটি যাচাই কপির জন্য তার কার্যালয়ে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দিতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিরাজপুর ইউপি’র সদস্য পদপ্রার্থী বলেন, প্রস্তাবকারী, সমর্থনকারী ও প্রার্থীর নিজের এনআইডির যাচাই কপি সংগ্রহ করতে ৬০০ টাকা দিতে হয়েছে। এই হিসাবে ৪৫৫ জন প্রার্থীর কাছ থেকে শুধু মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার দিন এনআইডি যাচাই কপি বাবদ মোট ২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। প্রার্থীরা জানান, এই টাকার বিপরীতে কোনো রশিদ দেয়া হয়নি। এইভাবে সকল প্রার্থীকে টাকা দিয়ে এনআইডির যাচাই কপি সংগ্রহ করতে বাধ্য করেছে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। এনআইডির প্রতিটি অনলাইন যাচাই কপির জন্য চালানের মাধ্যমে সরকারি নিয়ম মোতাবেক ১১৫ টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হয়। কিন্তু কোনো প্রকার চালান কপি ও  ব্যাংক ড্রাফট ছাড়াই নির্বাচন অফিসের কর্মচারীরা নিজেরাই সার্ভার থেকে যাচাই কপি বের করে ২০০ টাকা করে ৪৫৫ জন প্রার্থীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্বাচন অফিসের এক ব্যক্তি জানান, এনএইডি যাচাই কপি বাবদ ২০০ টাকা নেয়ার জন্য নির্বাচন কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশনা ছিল। এর মধ্যে ১০০ টাকা নির্বাচন অফিসারের এবং বাকি ১০০ টাকা উপজেলা নির্বাচন অফিসের স্ট্যাফদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করা হয়। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, স্মার্ট কার্ডে ১০ সংখ্যা থাকায় ১৩ বা ১৭ সংখ্যার এনআইডি নাম্বারের জন্য যাচাই কপি নিতে বলা হয়েছে। যাচাই কপির জন্য টাকা নেয়ার বিষয়টি তার জানা নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউল হক মীর বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এখন জানলাম। অভিযোগের সত্যতা পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রবিউল আলম বলেন, এনআইডি কার্ডের অনলাইন কপি দিতে বলা হয়নি। শুধু ফটোকপির সঙ্গে ভোটার তালিকার অংশ বিশেষ জমা দেয়ার নিয়ম। কেউ অন্যায়ভাবে টাকা আদায় করে থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, কোম্পানীগঞ্জের ৮টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪৩ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৮৬ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৩২৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তফসিল মোতাবেক সপ্তম ধাপে আগামী ৭ই ফেব্রুয়ারি এই উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে।