দেশ বিদেশ

মুক্তি মিলছে না ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীনের

স্টাফ রিপোর্টার

১৪ জানুয়ারি ২০২২, শুক্রবার, ৮:৫০ অপরাহ্ন

অর্থ পাচারের দুই মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনের রিভিউ খারিজ করে দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। গতকাল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রিভিউ খারিজের এ আদেশ দেন। আদালতে রফিকুল আমীনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী সাঈদ আহমদ। অপরদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, আপিল বিভাগ তাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল। কিন্তু কোনো শর্তই তিনি পূরণ করতে পারেননি। পরবর্তীতে আপিল বিভাগ তার জামিন আবেদন খারিজ করেন। সেই আদেশের বিরুদ্ধে পরে রিভিউ করলে আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার তা খারিজ করে দিয়েছেন। এর ফলে তার জামিন আবেদন খারিজের আদেশই বহাল থাকলো। আর টাকা ফেরত দিতে তার শর্ত সংক্রান্ত যে আদেশ ছিল সেটাও বহাল থাকলো। সর্বোপরি পূর্বের শর্ত পূরণ না করা পর্যন্ত তার কারামুক্তি মিলছে না। অপরদিকে রফিকুল আমীনের আইনজীবী বলেন, যে গাছ বিক্রি করে টাকাটা দিতে চেয়েছিলাম সেই গাছ আর পাইনি। মামলার ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ সাজাই হলো ১২ বছর। অথচ তিনি তার থেকেও বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন। এ অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে জামিন প্রার্থনা করেছিলাম। কিন্তু আদালত আমাদের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।  এর আগে, সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা অর্থপাচারের অভিযোগে ডেসটিনি’র এমডি রফিকুল আমীন, চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দু’টি মামলা করে দুদক। মামলায় রফিকুল আমীনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ১৩ই নভেম্বর শর্তসাপেক্ষে জামিনে মুক্তির আদেশ দেন। ওই আদেশে বলা হয়েছিল, ছয় সপ্তাহের মধ্যে ৩৫ লাখ গাছ বিক্রি করে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা জমা দিতে হবে সরকারি কোষাগারে। ওই অর্থ জমা দেয়ার কপি নিম্নআদালতে দাখিল করলেই জামিন পাবেন ডেসটিনির দুই কর্ণধার রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেন। তবে আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রতিপালন না করায় গতকাল রফিকুল আমীনের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিলো আপিল বিভাগ। নথি থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ৩১শে জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসটিনি গ্রুপের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদক দু’টি মামলা করে। এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ১৯জন এবং ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন লিমিটেডে দুর্নীতির মামলার ৪৬ জনকে আসামি করা হয়। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৮ সাল থেকে ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রজেক্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। যার মধ্যে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী। আর মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ প্রজেক্টের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে। ওই অর্থ আত্মসাতের ফলে সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়েন। পরবর্তীতে বিচারিক আদালত ২০১৬ সালের ২৪শে আগস্ট অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে দুই মামলায় আসামিদের বিচার শুরু করে। তবে অভিযোগ গঠন হওয়ার আগেই ট্রি প্লান্টেশনের অর্থ আত্মসাতের মামলায় পাসপোর্ট জমা দেয়ার শর্তে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান রফিকুল আমীন। কিন্তু দুদক হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলে সে জামিন স্থগিত হয়ে যায়। তবে পরবর্তীতে দুদকের আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৬ সালের ১৩ই নভেম্বর আপিল বিভাগ শর্তসাপেক্ষে রফিকুল আমীনকে জামিন দেন। যেখানে শর্ত দেয়া হয় যে, ছয় সপ্তাহের মধ্যে ট্রি প্ল?ান্টেশন প্রকল্পের গাছ বিক্রি করে ২৮০০ কোটি টাকা অথবা অন্য কোনোভাবে ২৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্তদের পরিশোধ করতে বলা হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status