বাংলারজমিন
‘স্বামী হত্যার বিচার না পেলে আত্মহত্যা করবো’
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
১৩ জানুয়ারি ২০২২, বৃহস্পতিবার, ৮:২১ অপরাহ্ন

আমার স্বামীকে তিন তিনবার হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল। শেষমেশ তারা পরিকল্পিতভাবে গাড়িচাপা দিয়ে তাকে হত্যা করেছে। হত্যা মামলা করেও এখন হুমকির মুখে আছি। হত্যাকারীরা আমাদের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্বামী হত্যার বিচার না পেলে আমি আত্মহত্যা করবো। গতকাল দুপুরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন লক্ষ্মীপুরে হাজেরা বেগম শান্তা নামে এক গৃহবধূ। গত ৬ই জানুয়ারি সন্ধ্যায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চাপা পড়ে বেলাল হোসেনের মৃত্যু হয়। লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বেলাল হোসেন ওইদিন আদালত থেকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে বলেন, এ ঘটনায় সদর থানায় যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তারা মামলা তুলে নিতে নানারকম হুমকি দিচ্ছেন। এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বেলালের মাথা, পিঠ ও বাম পায়ের হাঁটুর উপরসহ মরদেহের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। ঘটনার দুইদিন পর সদর মডেল থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেন শান্তা। মামলার আসামিরা হলো- সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ এলাকার মো. সুমন, তার ভাই রিপন হোসেন, শিপন হোসেন, একই এলাকার বাসিন্দা আলী হোসেন ও চরউভূতা গ্রামের তারেক হোসেন। তাদের সঙ্গে আগে থেকেই পৈতৃক জমি নিয়ে বিরোধ ছিল বেলালের। গত বছর তিনবার প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। তিনি থানায় জিডিও করেছিলেন। শান্তা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর মামলা হলে মরদেহ ময়নাতদন্তের নামে কাটাছেঁড়ার ভয় দেখায় আসামি পক্ষের লোকজন। পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাই। কিন্তু দাফনের আগে গোসল করানোর সময় তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ পরদিন জেলা সদর হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত করে। আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি। নিহত বেলাল সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরউভূতা এলাকার মৃত আবদুল মজিদের ছেলে। তিনি নারিকেল-সুপারির ব্যবসা করতেন। মুনতাহা (৬) ও ইসমাইল হাসান (৩) নামে তার দুই সন্তান রয়েছে। তবে এ বিষয়ে সুমন ও আলী হোসেন জানান, বেলাল সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এর বাইরে তাদের কিছুই জানা নেই। এখন সড়ক দুর্ঘটনাকে হত্যা মামলা দিয়ে তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে পুলিশ প্রশাসনের নিকট দাবি জানান। মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা ও সদর থানার উপ-পরিদর্শক আবদুল মতিন বলেন, নিহতের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এবং ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।