প্রথম পাতা

বিদেশ ফেরতদের সীমাহীন ভোগান্তি

স্টাফ রিপোর্টার

১১ জানুয়ারি ২০২২, মঙ্গলবার, ৯:৪৯ অপরাহ্ন

করোনা পরীক্ষা ও ইমিগ্রেশনে লম্বা লাইন, রাতের ফ্লাইট বাতিল, শ্রমিকদের বসার স্থান সংকটে শাহ্‌জালাল বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। বিশেষ করে দীর্ঘ বিমান ভ্রমণের পর দেশে এসে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন সারতে দীর্ঘ সময় লাগছে। এতে তারা দুর্ভোগে পড়ছেন।
রাতে ৮ ঘণ্টা ফ্লাইট বন্ধ থাকার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিদেশ থেকে আসা যাত্রীরাও। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তির পাশাপাশি বিমানবন্দরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষ করে করোনা পরীক্ষায় লম্বা লাইন, বোর্ডিং পাস ও ইমিগ্রেশনের সময় লম্বা লাইন হওয়ায় যাত্রী জট বাড়ছে।
যাত্রীরা ফ্লাইট থেকে নেমেই করোনা পরীক্ষার জন্য লম্বা লাইন দিচ্ছেন। এতে বিমানবন্দরের লাউঞ্জগুলো যাত্রীতে গিজগিজ করে। আর যারা বহির্গমনে যাচ্ছেন তারা অনেকেই ২ দিন আগে থেকেই বিমানবন্দরে এসে হাজির হচ্ছেন। টার্মিনালের প্রথম তলা এবং দ্বিতীয় তলায় এবং ডমেস্টিক টার্মিনালেও যাত্রী জট লেগে থাকে। যাত্রীদের বিমানবন্দরে বিদায় জানানোর জন্য তাদের সঙ্গে একাধিক স্বজন আসার কারণে বিমানবন্দরের সামনে লোকজনের জটলাও আগের চেয়ে এখন বেশি। রাতে ফ্লাইট বন্ধ থাকার কারণে যে সব যাত্রীর সকালে ফ্লাইট রয়েছে তারা অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত  থেকে আগেই বিমানবন্দরে উপস্থিত হচ্ছেন।
কিছু দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিমানবন্দরে করোনা টেস্ট বাধ্যতামূলক হওয়ায় যাত্রীরা ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা আগেই হাজির হচ্ছেন। অনেকেই বিমানবন্দরের টার্মিনালে রাত যাপন করছেন। তাদের স্বজনেরা আবার বিমানবন্দরের সামনের মূল ফটকে বসে সময় কাটাচ্ছেন। কর্তৃপক্ষ বলছেন, করোনা পরীক্ষায় লম্বা লাইন ও রাতে ফ্লাইট বন্ধ হওয়ার জন্য এ অবস্থা বিরাজ করছে। দিনের এবং রাতের যাত্রীদের চাপের কারণে বিমানবন্দরে যাত্রী জট বেড়েছে।
শাহ্‌জালাল বিমানবন্দর ব্যবহার করে যারাই বিদেশে যাবেন তাদের এবং দেশে আসবেন তাদেরই করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। এছাড়াও শাহ্‌জালাল বিমানবন্দরের সংস্কার কাজের জন্য প্রতিদিন রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ফ্লাইট বন্ধ রেখেছেন কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের মার্চের ১০ তারিখ পর্যন্ত এ ফ্লাইট বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে শাহ্‌জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ কাপ্টেন এএইচএম তৌহিদুল আহসান জানান, ‘তারা বিমানবন্দরের শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন।’
এ বিষয়ে বিমানবন্দরের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জিয়াউল হক পলাশ গতকাল মানবজমিনকে জানান, শাহ্‌জালাল বিমানবন্দর ব্যবহার করে যারাই বিদেশে যাবেন এবং দেশে আসবেন তাদের সবার করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক।  যারা দেশ ছেড়ে বিদেশে যাবেন তাদের প্রায় ১২ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে আসতে হচ্ছে। এতে মানুষের ভিড় বেড়ে যাচ্ছে।
শাহ্‌জালাল বিমানবন্দরে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিমানবন্দরের টার্মিনালের সামনে মানুষের জটলা। গাড়ি রাখার স্থানে লোকজন থাকার কারণে ওই গাড়িগুলো বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের সামনের সড়কে রাখা হয়েছে। হ্যান্ড মাইকে এপিবিএন’র সদস্যরা বার বার সেখান থেকে  লোকজনকে চলে যেতে বলছেন।
সৌদি থেকে আসা নাটোরের লালপুরের বাসিন্দা মো. আবু তালেব জানান, বিমানবন্দরে নেমে নতুন ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। করোনা পরীক্ষার জন্য লম্বা লাইন দিতে হয়। ফ্লাইট বিমানবন্দরে যতো অবতরণ করেছে যাত্রী জট ততো বেড়েছে।
ময়ময়নসিংহ থেকে আসা যাত্রী সবুজ জানান, রাতে ফ্লাইট বন্ধ থাকার কারণে দিনের সব ফ্লাইট বিমানবন্দরে নেমেছে। এতে করে করোনা পরীক্ষায় তাদের লম্বা লাইন দিতে হয়েছে। এছাড়াও তারা ট্রলির সমস্যায় ভুগেছেন। তারা মাথায় করে তাদের মালপত্র বিমানবন্দরের বাইরে নিয়ে এসেছেন।
আরেক যাত্রী জানান, পিসিআর ল্যাবের সংখ্যা আরও বাড়ানো দরকার। তাহলে যাত্রী জট কমবে। লম্বা লাইন হওয়ার কারণে অনেক যাত্রী দাঁড়িয়ে থাকতে অসুস্থ  হয়ে পড়ছেন।
বিমানবন্দরের এপিবিএন’র সদস্য সেলিম জানান, সকালে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ থাকে। এছাড়াও রাতে ফ্লাইট বন্ধ থাকলেও রাতে যাত্রী লাউঞ্জগুলো ভরা থাকে। কারণ সবাই করোনা পরীক্ষায় লম্বা লাইন দিচ্ছে। যাত্রীদের শৃঙ্খলা মানাতে তারা কাজ করছেন।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status