মত-মতান্তর
আমরা কী একটু মানবিক হতে পারি না?
ইমরান আলী
৫ জানুয়ারি ২০২২, বুধবার, ৪:০৮ অপরাহ্ন

নানান ঘটনায়, মৃত্যুর খবরে এমনিতেই কাবু প্রিয় স্বদেশ। কখনো নৌ দুর্ঘটনায়, কখনো সড়কে, কখনো আগুনে, কখনো বা আবার হানাহানিতে। এর বাইরেও চলমান করোনায় গতকাল পর্যন্ত হারিয়েছি আমরা ২৮ হাজারেরও বেশি প্রাণ। তার ওপর যোগ হয়েছে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। আতঙ্ক জনমনে। স্বাস্থ্যের বেহাল দশার খবর নতুন করে লেখার দরকার আর হয় না। সেতো সবারই জানা।
এদিকে আগামী মার্চ-এপ্রিলে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দেশে বড় ধরনের সংক্রমণ ঘটাতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
এর বাইরে পত্রিকার পাতা ওল্টালে নিয়মিত মন খারাপের খবর। ধর্ষণ, হত্যাকাণ্ড, হতাহতসহ আরও কতো রকমের যে খবর মেলে! পাঠকের চোখও বুঝি ক্লান্ত বড্ড। পেটের ভেতর কাঁচি রেখে অপারেশন, হঠাৎ প্রিয়জনের নিখোঁজ হওয়া, নিখোঁজ বাবার ছবি বুকে জড়িয়ে প্রেস ক্লাবে কাঁদতে থাকা ছোট্ট শিশুর চাহনী আমাদের হৃদয়কে কাঁপিয়ে তোলে মাঝে মাঝেই।
লিখে কী আর শেষ করা যায়! তবু অমানবিক সব ঘটনা ঘটে চলে আশে-পাশে। সংবাদমাধ্যমের চেয়ে পাঠকের নজর এখন বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যেখানে মুহূর্তেই ভাইরাল হয় একেকটা ইস্যু।
নতুন বছরের বয়স পাঁচদিনও পেরোয়নি এখনো। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও নতুন বছরকে বরণ করে নেয়। প্রশাসনের বিধিনিষেধ থাকলেও রাজধানীতে আতশবাজি, পটকা ফোটানো হয়েছে। উড়েছে ফানুস। ফানুসের আগুনে আলোকিত রাতের শহর। তবে কী শুধুই আলোকিত হলো? সে আগুনে পুড়েছে অনেক জায়গাও। শুক্রবারের থার্টিফার্স্ট নাইটের মতো এত ফানুস ওড়ানো আগে কখনো দেখেনি ঢাকাবাসী। ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা ছুঁতেই কেঁপে উঠলো গোটা রাজধানী। যেন এক নয়া ঢাকা। কিছু মানুষ আনন্দের সীমা ছাড়িয়ে যেন হয়ে ওঠে বেপোরোয়া। ফানুসের আগুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শহরবাসী।
২রা জানুয়ারি মানবজমিনে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, অতিরিক্ত ফানুস ওড়ানোর প্রতিযোগিতার কারণে ঢাকার ৭টি স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তারমধ্যে ২টি স্থানে ছিল বড় আগুনের ঘটনা। এ ছাড়াও ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, তারা সারা দেশে প্রায় ২০০ স্থানে আগুন লাগার খবর পেয়েছে। জানা যায়, ফায়ার সার্ভিস ও জাতীয় জরুরিসেবা ৯৯৯-এর হটলাইন নম্বরগুলো ব্যস্ত হয়ে পড়ে সেদিন।
আমরা মাঝে মাঝে যেন ভুলে যাই আমাদের দায়িত্ব, বিবেক আর বোধ। কোনটা ন্যায় আর কোনটা অন্যায় সে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে কেউ কেউ। কার কি হলো ভুলে যাই বেমালুম।
গত দুই রাত থেকে ফেসবুকে একটি ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে সবার টাইমলাইনে। এক অসহায় পিতার স্ট্যাটাস। যেখানে তিনি লিখেছেন-
“কি বিকট শব্দে আতশবাজি। আমার ছোট বাচ্চাটি এমনিতেই হার্টের রোগী। আতশবাজির প্রচ- শব্দে শিশু বাচ্চাটি আমার ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে ওঠে। খুব আতঙ্কের মধ্যদিয়ে সময়টা পার করছি। আল্লাহ্তায়ালা আমাদের সন্তানদেরকে বুঝ দান করুক। দোয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।”
ইউসুফ রায়হানের শিশু উমায়েরকে নিয়ে লেখা এই স্ট্যাটাসটি স্বভাবতই সবার চোখকে করেছে অশ্রুসজল।
জন্মগতভাবেই হৃদ্যন্ত্রে ছিদ্র ছিল ৪ মাস বয়সী উমায়েরের। মিরপুরের ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসা হচ্ছিল শিশুটির। গত শনিবার (১লা জানুয়ারি) শ্বাসকষ্টে ভোগা শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন বাবা ইউসুফ রায়হান। হাসপাতালে ভর্তির ঘণ্টা তিনেক পর হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায় ছেলেটি।
ইউসুফ রায়হান গণমাধ্যমকে জানান, বর্ষবরণের রাতে আতশবাজির বিকট শব্দে ভয়ে ছেলেটা বারবার কেঁপে উঠছিল। সারা রাত ঘুমাতে পারেনি। সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ছেলে।
রায়হান তার স্ট্যাটাসে একটি আর্তিও জানিয়েছেন। এই আর্তি কি শুধুই তার একার! এমন আর্তি তো সবারই। আমরা একটুও সচেতন হতে পারছি কি? হার্টের অসুখে ভোগা রোগীদের সে রাত কেমন কেটেছে? কিম্বা যারা বয়সী?
রোজ চোখে পড়ে একেকটা হৃদয়বিদারক দৃশ্যের গল্প। তবু যেন আমাদের মনে দাগ কাটে না। আমরা কী একটু মানবিক হতে পারি না?
এদিকে আগামী মার্চ-এপ্রিলে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দেশে বড় ধরনের সংক্রমণ ঘটাতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
এর বাইরে পত্রিকার পাতা ওল্টালে নিয়মিত মন খারাপের খবর। ধর্ষণ, হত্যাকাণ্ড, হতাহতসহ আরও কতো রকমের যে খবর মেলে! পাঠকের চোখও বুঝি ক্লান্ত বড্ড। পেটের ভেতর কাঁচি রেখে অপারেশন, হঠাৎ প্রিয়জনের নিখোঁজ হওয়া, নিখোঁজ বাবার ছবি বুকে জড়িয়ে প্রেস ক্লাবে কাঁদতে থাকা ছোট্ট শিশুর চাহনী আমাদের হৃদয়কে কাঁপিয়ে তোলে মাঝে মাঝেই।
লিখে কী আর শেষ করা যায়! তবু অমানবিক সব ঘটনা ঘটে চলে আশে-পাশে। সংবাদমাধ্যমের চেয়ে পাঠকের নজর এখন বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যেখানে মুহূর্তেই ভাইরাল হয় একেকটা ইস্যু।
নতুন বছরের বয়স পাঁচদিনও পেরোয়নি এখনো। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও নতুন বছরকে বরণ করে নেয়। প্রশাসনের বিধিনিষেধ থাকলেও রাজধানীতে আতশবাজি, পটকা ফোটানো হয়েছে। উড়েছে ফানুস। ফানুসের আগুনে আলোকিত রাতের শহর। তবে কী শুধুই আলোকিত হলো? সে আগুনে পুড়েছে অনেক জায়গাও। শুক্রবারের থার্টিফার্স্ট নাইটের মতো এত ফানুস ওড়ানো আগে কখনো দেখেনি ঢাকাবাসী। ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা ছুঁতেই কেঁপে উঠলো গোটা রাজধানী। যেন এক নয়া ঢাকা। কিছু মানুষ আনন্দের সীমা ছাড়িয়ে যেন হয়ে ওঠে বেপোরোয়া। ফানুসের আগুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শহরবাসী।
২রা জানুয়ারি মানবজমিনে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, অতিরিক্ত ফানুস ওড়ানোর প্রতিযোগিতার কারণে ঢাকার ৭টি স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তারমধ্যে ২টি স্থানে ছিল বড় আগুনের ঘটনা। এ ছাড়াও ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, তারা সারা দেশে প্রায় ২০০ স্থানে আগুন লাগার খবর পেয়েছে। জানা যায়, ফায়ার সার্ভিস ও জাতীয় জরুরিসেবা ৯৯৯-এর হটলাইন নম্বরগুলো ব্যস্ত হয়ে পড়ে সেদিন।
আমরা মাঝে মাঝে যেন ভুলে যাই আমাদের দায়িত্ব, বিবেক আর বোধ। কোনটা ন্যায় আর কোনটা অন্যায় সে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে কেউ কেউ। কার কি হলো ভুলে যাই বেমালুম।
গত দুই রাত থেকে ফেসবুকে একটি ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে সবার টাইমলাইনে। এক অসহায় পিতার স্ট্যাটাস। যেখানে তিনি লিখেছেন-
“কি বিকট শব্দে আতশবাজি। আমার ছোট বাচ্চাটি এমনিতেই হার্টের রোগী। আতশবাজির প্রচ- শব্দে শিশু বাচ্চাটি আমার ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে ওঠে। খুব আতঙ্কের মধ্যদিয়ে সময়টা পার করছি। আল্লাহ্তায়ালা আমাদের সন্তানদেরকে বুঝ দান করুক। দোয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।”
ইউসুফ রায়হানের শিশু উমায়েরকে নিয়ে লেখা এই স্ট্যাটাসটি স্বভাবতই সবার চোখকে করেছে অশ্রুসজল।
জন্মগতভাবেই হৃদ্যন্ত্রে ছিদ্র ছিল ৪ মাস বয়সী উমায়েরের। মিরপুরের ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসা হচ্ছিল শিশুটির। গত শনিবার (১লা জানুয়ারি) শ্বাসকষ্টে ভোগা শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন বাবা ইউসুফ রায়হান। হাসপাতালে ভর্তির ঘণ্টা তিনেক পর হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায় ছেলেটি।
ইউসুফ রায়হান গণমাধ্যমকে জানান, বর্ষবরণের রাতে আতশবাজির বিকট শব্দে ভয়ে ছেলেটা বারবার কেঁপে উঠছিল। সারা রাত ঘুমাতে পারেনি। সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ছেলে।
রায়হান তার স্ট্যাটাসে একটি আর্তিও জানিয়েছেন। এই আর্তি কি শুধুই তার একার! এমন আর্তি তো সবারই। আমরা একটুও সচেতন হতে পারছি কি? হার্টের অসুখে ভোগা রোগীদের সে রাত কেমন কেটেছে? কিম্বা যারা বয়সী?
রোজ চোখে পড়ে একেকটা হৃদয়বিদারক দৃশ্যের গল্প। তবু যেন আমাদের মনে দাগ কাটে না। আমরা কী একটু মানবিক হতে পারি না?