মত-মতান্তর
আগের বছরের কম্বল গেলো কই?
পিয়াস সরকার
২০২২-০১-০২
তীব্র শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল। মানচিত্রের মতো ছেঁড়া জামাটায় রক্ষা নেই। উত্তরে শীত প্রকট এটা জানা কথা। আর এই উত্তরের মানুষদের জন্য প্রতিবছরই কম্বল উপহার দেন দেশ-বিদেশের মানুষ। কিন্তু প্রতিবছরই কেন কম্বল লাগে তাদের?
রাজধানীর এক স্বনামধন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ৭ বছর ধরে কম্বল দিয়ে আসছে উত্তরাঞ্চলে। আমার মাধ্যমে পরিচিত স্থানে দিয়েছে দু’বার? সংগঠনের এক ভাই প্রশ্ন করলেন- গতবছর কম্বল দিলাম এবছর সেখানে যেয়ে দেখি শীতে কাঁপছে। আগের বছরের কম্বল কই গেলো? এই প্রশ্নের উত্তর মিললো না।
এই প্রশ্নটি ঘুরছিল মাথায়। একটু জানার চেষ্টা করলাম। সংগঠনটি গতবছর কম্বল দিয়েছে লালমনিরহাট জেলার তিস্তা নদী ঘেঁষা এক গ্রামে।
এই গ্রামে শীত আসে, কাঁপিয়ে দিয়ে যায় গ্রামবাসীকে। প্রায় প্রতিবছরই কম্বল পান হতদরিদ্ররা। আর শীত শেষেই বিক্রি করে দেন এই কম্বল। সাহায্যের এই কম্বল তারা মাত্র ৫০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০০ টাকায়। শীত শেষে গ্রামে গ্রামে ভ্রাম্যমাণ ক্রেতারা ছুটে বেড়ান। কেনেন কম্বল।
পরিচিত পাঁচজন কম্বল প্রাপ্তের তথ্য মিললো। যার মধ্যে কথা হয় দু’জনের সঙ্গে। ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা জানান, গেলো বছরের শীতের পর তার মেয়ে সন্তান নিয়ে আসে বাড়িতে। এটাই ছিলো নাতির প্রথম নানা বাড়ি আগমন। বাড়ির মজুত দিয়ে খাবারের জোগার হলেও বিক্রি করে দেন কম্বল, দেড়শ টাকায়। নাতিকে জামা কিনে দেন ৩৫০ টাকায়। বলেন, বাউরে, নাতিক কিচু না দিলি ক্যাংকা দেখায়?
আরেক বৃদ্ধ জানান, পেটের ব্যথায় কাতর হয়ে পরেছিলেন তিনি। পকেটে টাকা না থাকায় ১৮০ টাকা দিয়ে সাহায্যের কম্বল বিক্রি করেন। বলেন, জারের (শীত) চিন্তা বছর পর। আগততো প্যাটের বিষ (ব্যথা) ভালো করান নাগবে।
আর বাকি তিনজনের দু’জনের বাড়ি বন্যায় ভাসিয়ে নেয়। বাধ্য হয়ে বন্যার সময় বিক্রি করে দেন কম্বল। বন্যায় সময় খাবার জোটাতে ১২০ ও ১৩০ টাকায় কম্বল বিক্রি করেন তারা। আর একজন কম্বল বিক্রি করেছেন চাল কেনার জন্য। তিনি বিক্রি করেন ২০০ টাকায়। জানা যায়, এসব এলাকার বাজারে সারা বছর ব্যাপী সাহায্যের কম্বল বেচা কেনা হয়।
শুধু কি শীত? এই অঞ্চলের মানুষের দুঃখটা সারা বছরের। তারা শীতে ঠক ঠকিয়ে কাঁপেন। তিস্তায় মেলে না পানি। ফসল উৎপাদন পুরোপুরি সেচ নির্ভর। এতোটাই রুক্ষ অবস্থা যে নদীর বুকে ফসল চাষে দিতে হয় সেচ। আবার বর্ষায় ভাসিয়ে নিয়ে যায় সব।
প্রতিবছরই তারা তীব্র- শীত, খরা ও বন্যা মোকাবিলা করেন। লড়াইটা তাদের এক মুঠো ভাতের। লড়াইটা তাদের বেঁচে থাকার। গোটা দেশের মতোই এই অঞ্চলেও বাড়ছে জনসংখ্যা। নেই কলকারখানা, হচ্ছে না কর্মসংস্থানের সুযোগ। কৃষিটাই একমাত্র হাতিয়ার। কমছে জমি আছে বন্যা ও খরার আঘাত। দরিদ্র মানুষগুলোর কাছে এক বছরের কম্বল আরেক বছর গায়ে দেয়া বিলাসিতা ছাড়া আর যে কিছুই না।
রাজধানীর এক স্বনামধন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ৭ বছর ধরে কম্বল দিয়ে আসছে উত্তরাঞ্চলে। আমার মাধ্যমে পরিচিত স্থানে দিয়েছে দু’বার? সংগঠনের এক ভাই প্রশ্ন করলেন- গতবছর কম্বল দিলাম এবছর সেখানে যেয়ে দেখি শীতে কাঁপছে। আগের বছরের কম্বল কই গেলো? এই প্রশ্নের উত্তর মিললো না।
এই প্রশ্নটি ঘুরছিল মাথায়। একটু জানার চেষ্টা করলাম। সংগঠনটি গতবছর কম্বল দিয়েছে লালমনিরহাট জেলার তিস্তা নদী ঘেঁষা এক গ্রামে।
এই গ্রামে শীত আসে, কাঁপিয়ে দিয়ে যায় গ্রামবাসীকে। প্রায় প্রতিবছরই কম্বল পান হতদরিদ্ররা। আর শীত শেষেই বিক্রি করে দেন এই কম্বল। সাহায্যের এই কম্বল তারা মাত্র ৫০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০০ টাকায়। শীত শেষে গ্রামে গ্রামে ভ্রাম্যমাণ ক্রেতারা ছুটে বেড়ান। কেনেন কম্বল।
পরিচিত পাঁচজন কম্বল প্রাপ্তের তথ্য মিললো। যার মধ্যে কথা হয় দু’জনের সঙ্গে। ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা জানান, গেলো বছরের শীতের পর তার মেয়ে সন্তান নিয়ে আসে বাড়িতে। এটাই ছিলো নাতির প্রথম নানা বাড়ি আগমন। বাড়ির মজুত দিয়ে খাবারের জোগার হলেও বিক্রি করে দেন কম্বল, দেড়শ টাকায়। নাতিকে জামা কিনে দেন ৩৫০ টাকায়। বলেন, বাউরে, নাতিক কিচু না দিলি ক্যাংকা দেখায়?
আরেক বৃদ্ধ জানান, পেটের ব্যথায় কাতর হয়ে পরেছিলেন তিনি। পকেটে টাকা না থাকায় ১৮০ টাকা দিয়ে সাহায্যের কম্বল বিক্রি করেন। বলেন, জারের (শীত) চিন্তা বছর পর। আগততো প্যাটের বিষ (ব্যথা) ভালো করান নাগবে।
আর বাকি তিনজনের দু’জনের বাড়ি বন্যায় ভাসিয়ে নেয়। বাধ্য হয়ে বন্যার সময় বিক্রি করে দেন কম্বল। বন্যায় সময় খাবার জোটাতে ১২০ ও ১৩০ টাকায় কম্বল বিক্রি করেন তারা। আর একজন কম্বল বিক্রি করেছেন চাল কেনার জন্য। তিনি বিক্রি করেন ২০০ টাকায়। জানা যায়, এসব এলাকার বাজারে সারা বছর ব্যাপী সাহায্যের কম্বল বেচা কেনা হয়।
শুধু কি শীত? এই অঞ্চলের মানুষের দুঃখটা সারা বছরের। তারা শীতে ঠক ঠকিয়ে কাঁপেন। তিস্তায় মেলে না পানি। ফসল উৎপাদন পুরোপুরি সেচ নির্ভর। এতোটাই রুক্ষ অবস্থা যে নদীর বুকে ফসল চাষে দিতে হয় সেচ। আবার বর্ষায় ভাসিয়ে নিয়ে যায় সব।
প্রতিবছরই তারা তীব্র- শীত, খরা ও বন্যা মোকাবিলা করেন। লড়াইটা তাদের এক মুঠো ভাতের। লড়াইটা তাদের বেঁচে থাকার। গোটা দেশের মতোই এই অঞ্চলেও বাড়ছে জনসংখ্যা। নেই কলকারখানা, হচ্ছে না কর্মসংস্থানের সুযোগ। কৃষিটাই একমাত্র হাতিয়ার। কমছে জমি আছে বন্যা ও খরার আঘাত। দরিদ্র মানুষগুলোর কাছে এক বছরের কম্বল আরেক বছর গায়ে দেয়া বিলাসিতা ছাড়া আর যে কিছুই না।