ষোলো আনা

নয়া রূপে জামালপুরের ঐতিহ্যবাহী নকশী শিল্প

৯ ডিসেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৪:৪৩ অপরাহ্ন

জামালপুর জেলার এক ঐতিহ্য বহন করা শিল্প নকশীকাঁথা। নতুন বউ শ্বশুর বাড়ি যাত্রার পূর্বে নকশীকাঁথা দেয়া এই অঞ্চলের পুরনো রেওয়াজ। হারিয়ে যেতে বসেছে এই শিল্প। তবে এখন এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন বাসিন্দারা।

নকশী শিল্পের বাণিজ্যিক প্রসারে দরিদ্র এই অঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্র অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। জেলায় অসংখ্য দরিদ্র বিশেষ করে নারীরা জড়িয়ে পড়েছেন এই শিল্পের সঙ্গে। কিন্তু তৈরি করা নকশীর সঠিক বিপনণ আর পুঁজির অভাবে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন শ্রমের ন্যায্য মজুরি থেকে।

প্রায় হারিয়ে যেতে বসা এই শিল্পের গোড়াপত্তন হয় আশির দশক বা তারও কিছু আগে। বর্তমানে জামালপুর সদরসহ পুরো জেলায় প্রায় ২৫ হাজার দরিদ্র নারী এবং ৫০ হাজার পুরুষ এই পেশায় জড়িত রয়েছেন। ফলে স্বাবলম্বী হতে শুরু করেছেন এই অঞ্চলের দরিদ্র মানুষগুলো। পরিবারের অন্যান্য কাজের পাশাপাশি তারা ঘরে বসেই নকশী কাঁথা, চাঁদর, পাঞ্জাবী, ফতুয়া, কটি, থ্রী-পিস ও ওড়নাসহ নানা রকম নকশী সামগ্রীর সূচিকর্ম করছেন।

এছাড়াও বাড়তি আয়ের জন্য অনেক শহুরে মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহিনীরাও করছেন এই কাজ। কারিগর রেহেনা বেগম বলেন, আমি প্রতি মাসে ৬-৭ টি কাথা সেলাই করি। এরপর তা শহরের পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। কাথা প্রতি আমি ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা পাই। যা আসে তা দিয়ে আমার সংসার সুন্দরভাবে চলে যায়।

শহরের পাড়া মহল্লায় গড়ে উঠেছে এ শিল্পের অসংখ্য ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান। পুরনো ঐতিহ্য ও নকশা অনুকরণ করে গ্রামীণ নারীরা সূঁচ, সুতা এবং রঙের সমন্বয়ে কাঁথাসহ এই সব দ্রব্যে নানা সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলেন তাদের নিপুন হাতে।

জামালপুরের নকশী পণ্যের চাহিদা এখন দেশের মাটি পেরিয়া বাইরেও যাচ্ছে । জামালপুর জেলা শহরেও রয়েছে এ শিল্পের ছোট-বড় অনেক শো-রুম। কিন্তু বিপনন সমস্যা, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা আর পুঁজির অভাবে শ্রমের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এখানকার নকশী শিল্প কর্মীরা। মালিকের দেয়া সামান্য মজুরিতেই খুশি থাকতে হয় কর্মীদের।

লেখক
হুমায়ুন কবির মাসুদ,
সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগ
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status