দেশ বিদেশ

কুয়েটের অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যু জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কার চায় শিক্ষক সমিতি

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে

৬ ডিসেম্বর ২০২১, সোমবার, ৮:৫৫ অপরাহ্ন

অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনের (৩৮) মৃত্যুর পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠা খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এখন বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন এবং ৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শিক্ষক সমিতি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কার দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছে। তারা চলমান ক্লাস বর্জনসহ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন। এদিকে অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় বহিষ্কৃত ৯ শিক্ষার্থীর ৭ জনই ?শাখা ছাত্রলীগের নেতা। এরমধ্যে ৭ জন সম্পাদক ও ২ জন সদস্য পদে রয়েছেন। কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রতীক চন্দ বিশ্বাস বলেন, ‘কুয়েট কর্তৃপক্ষের ৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করাকে আমরা নেতিবাচকভাবে দেখছি। তবে আমাদের প্রধান দাবি ছিল, ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রকৃত অপরাধীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা। সেটা করা হয়নি। তাই কুয়েট শিক্ষক সমিতি আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। গতকাল শিক্ষক ক্লাবে শোকসভা এবং কুয়েট জামে মসজিদে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।’ শিক্ষক ও ছাত্রদের অভিযোগ, কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার লোকজন নিয়ে গত ৩০শে নভেম্বর ড. সেলিমের কক্ষে প্রবেশ করে অশালীন আচরণ এবং তাকে মানসিক নির্যাতন করেন। এর ফলে তিনি ওইদিন বেলা ৩টায় মারা যান ড. সেলিম। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার বিষয়টি ২ ও ৩রা ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৭৬তম জরুরি সভায় উত্থাপন করা হয়। সেখানে সিসিটিভির ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্য পর্যালোচনা করে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে গত শনিবার ৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট। বহিষ্কৃতরা হলেন- কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী সাদমান নাহিয়ান সেজান, সহ-সভাপতি ও সিই বিভাগের শিক্ষার্থী তাহামিদুল হক ইশরাক, কৃষিশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও এলই বিভাগের শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও একই বিভাগের শিক্ষার্থী আ স ম রাগিব আহসান মুন্না, উপ-পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক ও সিই বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও এমই বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান, উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক এমএসই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নাইমুর রহমান অন্তু, সদস্য ও সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রিয়াজ খান নিলয় এবং সদস্য এমই বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ রিফাত। এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
কুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নিবিড় রেজা বলেন, তাদের ৯ জনকে সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়টি জানতে পেরেছি। তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিচারের দাবিতে মাঠে নামবে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। অপরদিকে, অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে দোষীদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারসহ ৪ দফা দাবিতে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেছে শিক্ষক সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি তৈরির জন্য আগামী ১৩ই ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status