বিশ্বজমিন

উত্তেজনার মধ্যেই পুতিন-বাইডেন বৈঠক কাল

মানবজমিন ডেস্ক

৫ ডিসেম্বর ২০২১, রবিবার, ৭:৫১ অপরাহ্ন

ইউক্রেন নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যেই হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বৈঠক। মঙ্গলবার তারা ভিডিওকলের মাধ্যমে যুক্ত হবেন বলে খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এর আগে এই দুই নেতা জেনেভায় মুখোমুখি সংলাপে বসেছিলেন জুন মাসে। সর্বশেষ তাদের মধ্যে ফোনে কথা হয়েছে ৯ই জুলাই। মঙ্গলবারের বৈঠক এমন এক সময়ে হতে যাচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন- যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রমাণ আছে যে, ইউক্রেনে বড় মাত্রায় হামলার পরিকল্পনা আছে রাশিয়ার। তবে এ বিষয়ে পুতিন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা সে সম্পর্কে পরিষ্কার নন ব্লিনকেন।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন কয়েকদিন আগে স্পষ্ট করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালালে রাশিয়াকে কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে। তবে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর এমন ইচ্ছার কথা প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া। পক্ষান্তরে তারা সেনা সমাবেশের জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছে। এমন অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ, হুমকি-পাল্টা হুমকির মধ্য দিয়ে আবর্তিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্ক।
এ অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় একটি বিবৃতি দিয়েছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন পসাকি। তিনি বলেছেন, পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার কর্মকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ তুলে ধরবেন বাইডেন। তিনি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং ভূখণ্ডের অখণ্ডতার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনরুল্লেখ করবেন।
ইউক্রেন জানিয়েছে, সীমান্তে সশস্ত্র যান, ইলেক্ট্রনিক যুদ্ধাস্ত্র এবং ৯৪ হাজার সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে রাশিয়া। এর আগে ইউক্রেনের কাছ থেকে ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া অঞ্চল কেড়ে নেয় রাশিয়া। তারপর থেকে এবারই রাশিয়ার সবচেয়ে বেশি সেনা সমাবেশ ঘটানো হয়েছে সীমান্তে। গোয়েন্দা রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভ বলেছেন, জানুয়ারির শেষের দিকে তার দেশে সামরিক হামলা চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে মস্কো। এরই মধ্যে সীমান্তে রাশিয়ার সেনা সমাবেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উদ্দেশ্যে অত্যন্ত কঠোর বার্তা দিয়েছেন। ইউক্রেনে যদি আগ্রাসন চালায় তাহলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবরোধ দেয়ার বিষয়ে আগেভাগেই আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপিয়ান মিত্ররা। ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য নয়। তাই তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের জাভেলিন নামের ট্যাঙ্কবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রসহ পশ্চিমা অস্ত্রশস্ত্র পেয়েছে। তবে এই আগ্রাসন পরিকল্পনার কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন রাশিয়ার কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, সীমান্তে যেসব সেনা মোতায়েন করা হয়েছে, তা সামরিক মহড়ার জন্য। পক্ষান্তরে ক্রাইমিয়া উপকূলে কৃষ্ণ সাগরে সামরিক মহড়ার মধ্য দিয়ে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ন্যাটো- এমন অভিযোগ মস্কোর। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, অভিন্ন সীমান্তে ইউক্রেন মোতায়েন করেছে এক লাখ ২৫ হাজার সেনা। এই অভিযোগের জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে কিয়েভ। এ সপ্তাহে বৃটেনের সবচেয়ে সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল স্যার নিক কার্টার বলেছেন, এ অঞ্চলে একটি যুদ্ধের আশঙ্কা সম্পর্কে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আশা করেন, রাশিয়ার সঙ্গে যেন যুদ্ধ না হয়। তবে এ জন্য ন্যাটোর প্রস্তুত থাকা উচিত হবে।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা নতুন কিছু নয়। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে রাশিয়া কেড়ে নেয় ক্রাইমিয়া। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহ দেখা দেয়ার সামান্য পরেই এই ঘটনা ঘটায় রাশিয়া। অন্যদিকে সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একজন শক্তিধর বন্ধুর বিরুদ্ধে অবরোধ দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। তার দেশে রাশিয়াপন্থি তিনটি টিভি স্টেশনের সম্প্রচারও বন্ধ করে দিয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status