দেশ বিদেশ
চাকরি প্রার্থীদের ইংরেজি ও যোগাযোগে অদক্ষতাই বেকারত্বের কারণ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৫ ডিসেম্বর ২০২১, রবিবার, ৯:২১ অপরাহ্ন
স্বাধীনতার পর প্রায় সব সূচকসহ শিক্ষার হার বাড়লেও বাড়ছে না কর্মসংস্থান। প্রতি বছর নতুন মুখ যোগ হচ্ছে বেকারত্বের ঘরে। এর কারণ শিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীদের যোগাযোগ ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার অভাব। দেশে প্রতি বছর ১.১৬ শতাংশ পুরুষ এবং ১.০৭ শতাংশ নারী নতুন করে বেকারত্বের ঘরে যুক্ত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ে মূল অর্থনীতিতে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সমপ্রতি ‘স্কিলস গ্যাপ অ্যান্ড ইয়ুথ এমপ্লয়মেন্ট ইন বাংলাদেশ: এন এক্সপ্লোরারি এনালাইসিস’- শীর্ষক এ জরিপ পরিচালনা করে। শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন সিপিডি’র জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহকারী সৈয়দ ইউসুফ সাদাত। দেশের সরকারি বেসরকারি ৪১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন চাকরিজীবী ও চাকরি প্রার্থী ৫০০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে সহযোগিতা করে জার্মানভিত্তিক সংস্থা ফ্রেডরিক এবার্ট স্টিফটাং।
সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শিরীন আখতার এবং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির।
সভায় বক্তারা মূলধারার অর্থনীতিতে অবদান রাখতে অনেকটাই পিছিয়ে বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীরা। কর্মসংস্থানের সুযোগ ও অবস্থান তৈরিতে কারিগরি শিক্ষার দিকে মনোযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন বিশ্লেষকরা।
জরিপের ফলাফল তুলে ধরে ইউসুফ সাদাত জানান, অনলাইনে পরিচালিত এ জরিপে নয়টি বিষয় নিয়ে চাকরি প্রার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। এরমধ্যে ‘যোগাযোগ ও ইংরেজিতে দক্ষতা’ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় বলে দেখা গেছে। এ বিষয়ে চাকরিপ্রার্থীরা মাত্র ৩০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। আর সবোর্চ্চ ৬৪ শতাংশ নম্বর পেয়েছে ‘সৃষ্টিশীলতা’ খাতে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, জরিপে সবচেয়ে কম নম্বর দেয়া হয়েছে সংখ্যা-গাণিতিক দক্ষতায়। এ বিষয়ে মাত্র ২৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীরা বিষয়টিকে গৌণ বলে উল্লেখ করায় আমরা বিষয়টিকে প্রাধান্য দেইনি বলে জানান এ গবেষক।
এছাড়া জরিপে অংশগ্রহণকারীরা দলগত কার্যক্রম ও নেতৃত্বের দক্ষতায় ৫৪, সময় ব্যবস্থাপনায় ৫২, ‘ক্রিটিক্যাল চিন্তা’ দক্ষতায় ৪৮, সমস্যা সমাধান দক্ষতায় ৪৫, কম্পিউটার অক্ষরজ্ঞানে ৪২ এবং ব্যবসায়িক দক্ষতায় ৪১ শতাংশ নম্বর পেয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমাদের কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ প্রসারিত করা উচিত, বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে। চাকরি মেলার আয়োজন করা যেতে পারে যাতে স্নাতক এবং নিয়োগকর্তাদের মধ্যে কার্যকর মিথস্ক্রিয়া ভবিষ্যতে চাকরি প্রার্থীদের আসন্ন শ্রম বাজারে চাহিদার দক্ষতা সম্পর্কে অবহিত করতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শিক্ষার্থীদের তাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে ফিকশন এবং নন-ফিকশন ইংরেজি বই পড়ার মাধ্যমে তাদের যোগাযোগ এবং ইংরেজি ভাষার দক্ষতা বিকাশের জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগ নেয়া উচিত।
আলোচনাকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চাহিদাভিত্তিক দক্ষ জনবল গড়ে তোলার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাই এ জরিপ থেকে সরকার সহযোগিতা নিতে পারবে। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বাজার চাহিদার প্রেক্ষিতে শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
শিরীন আখতার বলেন, আমাদের চাকরির বাজারের জন্য চাহিদাভিত্তিক দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বাছাই করে শিক্ষা ও মানসিক কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত। এরপর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে খাতভিত্তিক পড়াশোনা করিয়ে চাকরির বাজারের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল গড়ে তোলা সম্ভব। তিনি বলেন, এখন বলা হচ্ছে আমাদের যেসব খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ অনেকের, সেগুলোতে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। এখনও দক্ষতা বাড়ানোর সময় আছে।
নিহাদ কবির বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় গলদ আছে। শিক্ষার্থীদের বাছাই করে খাতভিত্তিক পড়াশোনা করানো হচ্ছে না। এখন সবাই সরকারি চাকরি করতে চায়। মানসিকভাবে খাতভিত্তিক পড়াশোনা ও মানসিকভাবে প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা না থাকার কারণেই কেউ শিল্পে কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নেয় না।
সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন জানান, চাকরির বাজারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদই পর্যাপ্ত নয়, দরকার কারিগরি প্রশিক্ষণও। তবে সুযোগ-সুবিধা সরকারি চাকরিতে বেশি থাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদন পড়ছে কম। ফলে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার মুখে পড়ছে এ খাত।
বিডিজবস ডটকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফাহিম মাশরুর বলেন, বর্তমান প্রজন্মের একটা অংশ বেসরকারি সেক্টরে চাকরি করতে রাজি নয়, তারা সরকারি চাকরির আশায় বসে থাকে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সমপ্রতি ‘স্কিলস গ্যাপ অ্যান্ড ইয়ুথ এমপ্লয়মেন্ট ইন বাংলাদেশ: এন এক্সপ্লোরারি এনালাইসিস’- শীর্ষক এ জরিপ পরিচালনা করে। শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এক অনুষ্ঠানে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন সিপিডি’র জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহকারী সৈয়দ ইউসুফ সাদাত। দেশের সরকারি বেসরকারি ৪১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন চাকরিজীবী ও চাকরি প্রার্থী ৫০০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। এতে সহযোগিতা করে জার্মানভিত্তিক সংস্থা ফ্রেডরিক এবার্ট স্টিফটাং।
সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শিরীন আখতার এবং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির।
সভায় বক্তারা মূলধারার অর্থনীতিতে অবদান রাখতে অনেকটাই পিছিয়ে বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীরা। কর্মসংস্থানের সুযোগ ও অবস্থান তৈরিতে কারিগরি শিক্ষার দিকে মনোযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন বিশ্লেষকরা।
জরিপের ফলাফল তুলে ধরে ইউসুফ সাদাত জানান, অনলাইনে পরিচালিত এ জরিপে নয়টি বিষয় নিয়ে চাকরি প্রার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। এরমধ্যে ‘যোগাযোগ ও ইংরেজিতে দক্ষতা’ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় বলে দেখা গেছে। এ বিষয়ে চাকরিপ্রার্থীরা মাত্র ৩০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। আর সবোর্চ্চ ৬৪ শতাংশ নম্বর পেয়েছে ‘সৃষ্টিশীলতা’ খাতে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, জরিপে সবচেয়ে কম নম্বর দেয়া হয়েছে সংখ্যা-গাণিতিক দক্ষতায়। এ বিষয়ে মাত্র ২৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীরা বিষয়টিকে গৌণ বলে উল্লেখ করায় আমরা বিষয়টিকে প্রাধান্য দেইনি বলে জানান এ গবেষক।
এছাড়া জরিপে অংশগ্রহণকারীরা দলগত কার্যক্রম ও নেতৃত্বের দক্ষতায় ৫৪, সময় ব্যবস্থাপনায় ৫২, ‘ক্রিটিক্যাল চিন্তা’ দক্ষতায় ৪৮, সমস্যা সমাধান দক্ষতায় ৪৫, কম্পিউটার অক্ষরজ্ঞানে ৪২ এবং ব্যবসায়িক দক্ষতায় ৪১ শতাংশ নম্বর পেয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমাদের কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ প্রসারিত করা উচিত, বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে। চাকরি মেলার আয়োজন করা যেতে পারে যাতে স্নাতক এবং নিয়োগকর্তাদের মধ্যে কার্যকর মিথস্ক্রিয়া ভবিষ্যতে চাকরি প্রার্থীদের আসন্ন শ্রম বাজারে চাহিদার দক্ষতা সম্পর্কে অবহিত করতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শিক্ষার্থীদের তাদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে ফিকশন এবং নন-ফিকশন ইংরেজি বই পড়ার মাধ্যমে তাদের যোগাযোগ এবং ইংরেজি ভাষার দক্ষতা বিকাশের জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগ নেয়া উচিত।
আলোচনাকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চাহিদাভিত্তিক দক্ষ জনবল গড়ে তোলার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাই এ জরিপ থেকে সরকার সহযোগিতা নিতে পারবে। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বাজার চাহিদার প্রেক্ষিতে শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
শিরীন আখতার বলেন, আমাদের চাকরির বাজারের জন্য চাহিদাভিত্তিক দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বাছাই করে শিক্ষা ও মানসিক কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত। এরপর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে খাতভিত্তিক পড়াশোনা করিয়ে চাকরির বাজারের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল গড়ে তোলা সম্ভব। তিনি বলেন, এখন বলা হচ্ছে আমাদের যেসব খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ অনেকের, সেগুলোতে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। এখনও দক্ষতা বাড়ানোর সময় আছে।
নিহাদ কবির বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় গলদ আছে। শিক্ষার্থীদের বাছাই করে খাতভিত্তিক পড়াশোনা করানো হচ্ছে না। এখন সবাই সরকারি চাকরি করতে চায়। মানসিকভাবে খাতভিত্তিক পড়াশোনা ও মানসিকভাবে প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা না থাকার কারণেই কেউ শিল্পে কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নেয় না।
সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন জানান, চাকরির বাজারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদই পর্যাপ্ত নয়, দরকার কারিগরি প্রশিক্ষণও। তবে সুযোগ-সুবিধা সরকারি চাকরিতে বেশি থাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবেদন পড়ছে কম। ফলে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার মুখে পড়ছে এ খাত।
বিডিজবস ডটকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফাহিম মাশরুর বলেন, বর্তমান প্রজন্মের একটা অংশ বেসরকারি সেক্টরে চাকরি করতে রাজি নয়, তারা সরকারি চাকরির আশায় বসে থাকে।