দেশ বিদেশ
প্রেমিককে বিয়ের চাপ দেয়াই কাল হয় সিলেটের খুশির
স্টাফ রিপোর্টার
৫ ডিসেম্বর ২০২১, রবিবার, ৮:৫২ অপরাহ্ন
দুই বছর আগে লন্ডন প্রবাসী ইউসুফের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বিয়ে হয়েছিল ১৫ বছর বয়সী খুশি বেগমের। ইউসুফ সিলেট শহর এলাকার বাসিন্দা। কিন্তু স্বামীর অবর্তমানে নিজ এলাকা ছাতকের গৌরীপুরের মহিউদ্দিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে খুশির। কিছুদিন পরে সেই সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়। পরে খুশি তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। চতুর মহিউদ্দিন খুশিকে বিয়ে করতে রাজি ছিলেন না। সে বিভিন্ন অজুহাতে খুশিকে বুঝিয়ে রাখতো। নাছোরবান্দা খুশি পিছু হটেননি। তার এক কথা, বিয়ে করতে হবে। শেষ পর্যন্ত মহিউদ্দিন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক রাতে কৌশলে খুশিকে বাড়ি থেকে ডেকে পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেতে নিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় মহিউদ্দিন। ক্লু-লেস এই হত্যাকাণ্ডের ১৬ দিন পর ওই ঘটনার রহস্য উন্মোচনসহ মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, গত ১৭ই নভেম্বর নিখোঁজ হয় খুশি বেগম। নিখোঁজের ৪ দিন পর স্থানীয়রা ২১শে নভেম্বর গ্রামের একটি ধানক্ষেতে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মরদেহ দেখতে পেয়ে তার বাড়িতে খবর দেন। তাৎক্ষণিকভাবে বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি নিখোঁজ খুশির বলে শনাক্ত করেন। এরপর স্থানীয় থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা কবির মিয়া অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় হত্যা মামলা করেন। একপর্যায়ে ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মহিউদ্দিনের সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডু থানাধীন কেডিএস এলাকা থেকে মহিউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার মহিউদ্দিন সিআইডির কাছে স্বীকার করেছে, তার সঙ্গে নিহত খুশি বেগমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বেশ কিছুদিন ধরে খুশি তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল। মহিউদ্দিন বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি পরিবার ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে প্রকাশ করার হুমকি দেয় খুশি। তখন মহিউদ্দিন ১৭ই নভেম্বর রাতে খুশিকে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেতে নিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তা ধর বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কেউ জড়িত কি-না এবং এই কাজে পরোক্ষভাবেও কেউ সহযোগিতা করেছে কি-না এসব বিষয় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে।