বাংলারজমিন

বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়াই ব্রিজ নির্মাণ

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

৪ ডিসেম্বর ২০২১, শনিবার, ৯:২৪ অপরাহ্ন

বরগুনার তালতলীতে সোনাকাটা ইকোপার্কের খালের ওপর বিকল্প সড়ক না করে পুরনো ব্রিজ ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করায় প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকসহ স্থানীয় মানুষ চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। খাল পারাপারের জন্য নৌকা দেয়া হলেও ভোগান্তির শিকার হওয়াতে সোনাকার ইকোপার্কে পর্যটক মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। সরকারের রাজস্ব হাড়াচ্ছে বলে জানান বন বিভাগ। পর্যটকরা ও এলাকাবাসী দ্রুত বিকল্প সড়ক নির্মাণে জোর দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, অসাধারণ একটি পর্যটক স্পর্ট তালতলী উপজেলার টেংরাগিরি ইকোপার্ক ও সোনাকাটা সমুদ্রসৈকত। চার দিকে সবুজ সারি সারি গাছ সামনে বিশাল সমুদ্র সৈকত। সমুদ্র সৈকত দেখতে যেতে হলে একটি খাল পার হয়ে যেতে হয়। এই খালে পুরনো ব্রিজটি ছিল যা চলাচলের অযোগ্য হয়ে ছিল বহু বছল ধরে। তবে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক সৈকতের কাছে যেতে গেলে পায়ে হেঁটে যেতে হইতো। সরাসরি গড়ি নিয়ে সৈকতের কাছে যাওয়ার জন্য নতুন একটি সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ৭২ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতু নির্মাণ করার কাজ পায় আমির ইঞ্জিনিয়ারিং নামের  ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ কারার প্রথম দিকে আগের পুরনো সেতুটি ভেঙে ফেলে। বিকল্প সড়ক না করায় টেংরাগিরি ইকোপার্ক ও সোনাকাটা সমুদ্রসৈকতে হাজার হাজার পর্যটকসহ স্থানীয় মানুষের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। তবে এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মাসিক ১৫শ’ টাকা বেতন দিয়ে খালটি পারাপারের জন্য আলতাফ নামের এক ব্যক্তিকে চুক্তি করেন। তবুও যাত্রীদের জন প্রতি ৫ টাকা দিয়ে পর্যটক ও স্থানীয়দের পারাপার হতে হয়। তবে নৌকাটি ছোট হওয়াতেও পর্যটকরা পারাপারে ঝুঁকি থেকে যায়। যার কারণে টেংরাগিরি ইকোপার্ক ও সোনাকাটা সমুদ্রসৈকতে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এ জন্য প্রতিদিন বনবিভাগ হাড়াচ্ছেন রাজস্ব।  
গতকাল সকালে টেংরাগিরি ইকোপার্ক ও সোনাকাটা সমুদ্রসৈকতে প্রবেশ পথে নির্মাণধীন ব্রিজের কাছে গিয়ে দেখা যায় ৪০-৫০ জন পর্যটক নৌকার খেয়া পারাপারের জন্য অপেক্ষা করছে। নৌকাটি ছোট হওয়াতে ধারণ ক্ষমতা হচ্ছে ২-৩ জন যাত্রী পারাপার করার। তবুও ঝুঁকি নিয়ে ছোট নৌকাতে ৭-৮ জন। এতে দূর থেকে আসা পর্যটকরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এ জন্য পর্যটক বিরক্ত হয়ে চলে যেতেও দেখা যায়।
টেংরাগিরি ইকোপার্ক ও সোনাকাটা সমুদ্রসৈকতে আসা রাসেল, নাবিলা, ঝুমুর ও আল-আমিনসহ একাধিক পর্যটক জানান, এখানে ঘুরতে এসে এখন ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। বনের ভেতরে যেতে হলে এই খালটি পার হতে হয়। কিন্তু এখানে ব্রিজ নির্মাণ করায় বিকল্প ব্যবস্থা না রাখায় আজকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও খেয়া পার হতে পারিনি। কখন পার হতে পারবো জানি না। এভাবে হলে এই ইকোপার্কে কোনো পর্যটক আসবে না। তাই আমাদের দাবি যতদিন ব্রিজ নির্মাণ না হয় ততদিনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হোক।
এ বিষয়ে আমির ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. আমির হোসেনকে একাধিকবার মোবাইল ফোন দিলেও তিনি কলটি রিসিভ করেনি।
তালতলী উপজেলা রেঞ্জ অফিসার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ব্রিজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার বলা হলেও তার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ জন্য এখানে পর্যটক আসে না, তাই সরকারের রাজস্ব কমে যাচ্ছে। দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা করার দাবি করছি।
তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী আহম্মদ আলী বলেন, ওখানে অনেক পানির স্রোত তাই সাঁকো তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে কিন্তু নৌকাটি ছোট তাই একটু সমস্যা হচ্ছে। খুব দ্রুতই বড় নৌকা দেয়া হবে যতদিনে সাঁকো তৈরি না হয়। স্রোত কমলেই সাঁকো তৈরির ব্যবস্থা করা হবে। ব্রিজ নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওসার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status