শেষের পাতা
আরও প্রায় ৩ কোটি টিকা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
কূটনৈতিক রিপোর্টার
৩ ডিসেম্বর ২০২১, শুক্রবার, ৯:২৬ অপরাহ্ন
আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (অ্যামচেম) বাংলাদেশের রজতজয়ন্তীর কেক কাটছেন অতিথিরা
বাংলাদেশকে আরও ২ কোটি ৯০ লাখ টিকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যা দেয়া হবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। টিকা সহায়তাসহ করোনাকালে বাংলাদেশের পাশে শক্তভাবে দাঁড়ানোয় বাইডেন প্রশাসন এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের রজতজয়ন্তী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, করোনার টিকা পেতে যখন বাংলাদেশ সংকটে পড়েছিল, চারদিকে খোঁজ করে কোনো টিকাই যখন আমরা পাচ্ছিলাম না, ঠিক তখন যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে এসে ৫৫ লাখ টিকা দিয়ে আমাদের রক্ষা করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার জন্যও ধন্যবাদ জানান। বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম প্রধান ভূমিকা রেখে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্র এ ইস্যুতে শক্তিশালী সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। ড. মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রধানতম বিনিয়োগকারী। দেশের বিদেশি বিনিয়োগের ২০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের। শুধু পেট্রোলিয়াম খাতে নয়, বিনিয়োগে বৈচিত্র্য আনয়নসহ যুক্তরাষ্ট্রকে নানান ক্ষেত্রে বিনিয়োগে অবদান রাখার অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার বক্তব্য রাখেন। মার্কিন বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আরও বেশি করে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের উত্তম স্থান। আমি আমেরিকান বিনিয়োগকারীদের বলবো আসুন, এখানে এলে ঠকবেন না বরং ভালো ব্যবসা করতে পারবেন। টাকা বানাতে এখানে আসতে পারেন। আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কগুলোতে আপনারা বিনিয়োগ করতে পারেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আমেরিকা থেকে তুলা আমদানি করি। সেই আমদানিতে অনেক ট্যাক্স। ফলে সেই তুলার উৎপাদিত পণ্য আমেরিকান বাজারেও যায়। কিন্তু তাতেও অনেক ট্যাক্স।
আমেরিকা কিন্তু এই ট্যাক্সটা তুলে নিতে পারে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আর বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রধান। আমাদের নর্দার্ন জোনের নদীভাঙন এই সমস্যার অন্যতম কারণ। এই সমস্যার সমাধান আছে আমাদের ডেল্টা প্ল্যানে। যুক্তরাষ্ট্র নদীভাঙন রোধে নদী খনন ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে বিনিয়োগ করতে পারে। এর ফলে উদ্ধার করা জমি শিল্পাঞ্চল, নগর ও পুনঃব্যবহার করা শক্তি উৎপাদনে ব্যবহার করতে পারি। যুক্তরাষ্ট্র এ কাজে বিনিয়োগ করলে দুই দেশই লাভবান হবে। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ নিশ্চিত হওয়া ১০টি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ বন্ধ করেছে। এতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ছিল। যুক্তরাষ্ট্র এখন এ ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদনে বিনিয়োগ করতে পারে। এটা এখন একটি সুযোগ হিসেবে এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি না থাকলেও বাংলাদেশিরা দক্ষ, কুইক লার্নার: মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি না থাকলেও বাংলাদেশের কর্মীরা অত্যন্ত দক্ষ। তারা খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ শিখে নিতে পারেন। তাদেরকে কুইক লার্নার বলে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ এক দশমিক এক মিলিয়ন রোহিঙ্গার বোঝা বহন করে চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বোঝা বহন ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র সব সময়ই এই কঠিন দায়িত্ব পালনে বাংলাদেশের পাশে থেকেছে। জোর গলায় রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে নেয়ার দাবি তুলেছে। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার বাহিনীর অমানবিক নির্যাতনের প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছে। কোভিড-১৯-এর কঠিন সময়ে যুক্তরাষ্ট্র তার বন্ধুত্বের হাত বাংলাদেশের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা সত্যিই খুব জটিল ও কঠিন সময় ছিল। দুর্দিনে পাশে থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বছর আমরা আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পালন করছি। আর আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ২৫ বছর পালন করছে। এটা আমাদের বন্ধুত্বের শক্ত অবস্থান প্রমাণ করে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত যা বললেন: বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার সরকারের টেন্ডারের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের উপরে জোর দেন। একইসঙ্গে সকল ব্যবসার ক্ষেত্রে ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত দৃষ্টির কথাও বলেন তিনি। ব্যবসা পরিচালনায় আইন মেনে চলার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন মিলার। সমাজের ক্ষতি করে এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধেও নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেন তিনি। বলেন, আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ও মার্কিন দূতাবাস এদেশে ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নের স্বপ্ন দেখে যাতে বিনিয়োগ ও উন্নয়ন উৎসাহিত হয়। তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ৭.৯ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে যা ২৫ বছর আগে ছিল মাত্র ১.৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রায় ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে মূলত বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানি করতো এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষিপণ্য ও যন্ত্র আমদানি করতো। এখনো বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রচুর পোশাক রপ্তানি করে এবং যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশের কাছে কৃষিপণ্য বিক্রি করে। তবে একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এখন বিমান, বিদ্যুৎ উৎপাদন যন্ত্র, ড্রেজার আমদানি করে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ২.৩ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে কোভিডের কারণে রপ্তানি কমে যায় ২০২০ সালে। এখন দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য আবারো বাড়ছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর ৩৩ শতাংশ বেশি বাণিজ্য হয়েছে। মিলার বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুধু অর্থনীতির বিষয় নয়, এটি দুই দেশের মধ্যে সংস্কৃতি বিনিময় এবং শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ সহাবস্থানকেও নিশ্চিত করে।
আমেরিকা কিন্তু এই ট্যাক্সটা তুলে নিতে পারে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আর বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রধান। আমাদের নর্দার্ন জোনের নদীভাঙন এই সমস্যার অন্যতম কারণ। এই সমস্যার সমাধান আছে আমাদের ডেল্টা প্ল্যানে। যুক্তরাষ্ট্র নদীভাঙন রোধে নদী খনন ও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে বিনিয়োগ করতে পারে। এর ফলে উদ্ধার করা জমি শিল্পাঞ্চল, নগর ও পুনঃব্যবহার করা শক্তি উৎপাদনে ব্যবহার করতে পারি। যুক্তরাষ্ট্র এ কাজে বিনিয়োগ করলে দুই দেশই লাভবান হবে। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ নিশ্চিত হওয়া ১০টি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ বন্ধ করেছে। এতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ছিল। যুক্তরাষ্ট্র এখন এ ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদনে বিনিয়োগ করতে পারে। এটা এখন একটি সুযোগ হিসেবে এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি না থাকলেও বাংলাদেশিরা দক্ষ, কুইক লার্নার: মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি না থাকলেও বাংলাদেশের কর্মীরা অত্যন্ত দক্ষ। তারা খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ শিখে নিতে পারেন। তাদেরকে কুইক লার্নার বলে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ এক দশমিক এক মিলিয়ন রোহিঙ্গার বোঝা বহন করে চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বোঝা বহন ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র সব সময়ই এই কঠিন দায়িত্ব পালনে বাংলাদেশের পাশে থেকেছে। জোর গলায় রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে নেয়ার দাবি তুলেছে। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার বাহিনীর অমানবিক নির্যাতনের প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছে। কোভিড-১৯-এর কঠিন সময়ে যুক্তরাষ্ট্র তার বন্ধুত্বের হাত বাংলাদেশের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা সত্যিই খুব জটিল ও কঠিন সময় ছিল। দুর্দিনে পাশে থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বছর আমরা আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পালন করছি। আর আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ২৫ বছর পালন করছে। এটা আমাদের বন্ধুত্বের শক্ত অবস্থান প্রমাণ করে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত যা বললেন: বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার সরকারের টেন্ডারের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের উপরে জোর দেন। একইসঙ্গে সকল ব্যবসার ক্ষেত্রে ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত দৃষ্টির কথাও বলেন তিনি। ব্যবসা পরিচালনায় আইন মেনে চলার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন মিলার। সমাজের ক্ষতি করে এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধেও নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেন তিনি। বলেন, আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ও মার্কিন দূতাবাস এদেশে ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নের স্বপ্ন দেখে যাতে বিনিয়োগ ও উন্নয়ন উৎসাহিত হয়। তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ৭.৯ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে যা ২৫ বছর আগে ছিল মাত্র ১.৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রায় ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে মূলত বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানি করতো এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষিপণ্য ও যন্ত্র আমদানি করতো। এখনো বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রচুর পোশাক রপ্তানি করে এবং যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশের কাছে কৃষিপণ্য বিক্রি করে। তবে একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এখন বিমান, বিদ্যুৎ উৎপাদন যন্ত্র, ড্রেজার আমদানি করে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ২.৩ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে কোভিডের কারণে রপ্তানি কমে যায় ২০২০ সালে। এখন দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য আবারো বাড়ছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর ৩৩ শতাংশ বেশি বাণিজ্য হয়েছে। মিলার বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুধু অর্থনীতির বিষয় নয়, এটি দুই দেশের মধ্যে সংস্কৃতি বিনিময় এবং শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ সহাবস্থানকেও নিশ্চিত করে।