খেলা

যেখানে হেরেছে বাংলাদেশ

ইশতিয়াক পারভেজ, চট্টগ্রাম থেকে

১ ডিসেম্বর ২০২১, বুধবার, ৮:১৯ অপরাহ্ন

সাগরিকায়ও বদলায়নি বাংলাদেশের ভাগ্য। টি-টোয়েন্টির পর টেস্টেও পরাজয়ের বৃত্তে বাঁধা রইলো টাইগাররা। পঞ্চম দিন মাত্র ৯৩ রান প্রয়োজন, পাকিস্তান ২ উইকেট হারিয়ে সহজেই পৌঁছে গেল জয়ের বন্দরে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় চক্রে হার দিয়েই শুরু হলো মুমিনুল হক সৌরভদের। এই হারে কোনো লড়াই নেই, প্রতিরোধ নেই! যা ছিল তা দুই একজনের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স। ‘টিম বাংলাদেশ’কে তো খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে দেশের মাটিতে দ্বি-পক্ষীয় সিরিজে টানা হার। প্রশ্ন উঠতেই পারে কেন এমন অসহায় আত্মসমর্পণ? বলার অপেক্ষা রাখে না দলে সিনিয়র ক্রিকেটারদের মধ্যে কোন্দল, কোচের অকার্যকর ভূমিকা, দল নির্বাচনে অদূরদর্শিতা, তরুণ ক্রিকেটারদের ব্যর্থতা আর ইনজুরি তো আছেই। মাঠের ক্রিকেটের নানা ভুল ও এর বাইরের প্রভাব দুটিই বাংলাদেশ দলের ভরাডুবির কারণ। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও তাই হয়েছে। ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক মুুমিনুলও দায়টা দিয়েছেন দুই ইনিংসের ব্যাটিংকেই। তিনি বলেন, ‘পার্থক্য এখানেই গড়ে দিয়েছে। আমাদের ২ ইনিংসেই একই অবস্থা। খেলাতো অর্ধেক ওখানেই শেষ। প্রথম ইনিংসে ৪৯ রানে ৪ উইকেট নেই, দ্বিতীয় ইনিংসেও একই রকম (২৫ রানে ৪ উইকেট)। উপরের দিকে এই অবস্থা হলে গেমে ব্যাক করা কঠিন। দলে ১১ জনের মধ্যে ৬-৭ জন ব্যাটার, সবার তো প্রত্যেক ইনিংসে অবদান রাখা কঠিন। উপরের দিকে যদি একটু দায়িত্ব নিতো তাহলে খেলাটা অন্যরকম হতে পারতো।’ চট্টগ্রাম টেস্টে দল নির্বাচনে বড় ধরনের অদূরদর্শিতা আরও একবার প্রকাশ পেয়েছে। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে ব্যর্থ হয়ে মনোবল হারানো সাইফ হাসানকে খেলানো বার বার প্রশ্ন তৈরি করেছে। দেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল নেই। তাই তরুণ সাদমানের সঙ্গে একজন অভিজ্ঞ ওপেনারের প্রয়োজন ছিল। যেমনটা করেছে পাকিস্তান। প্রায় ৩৫ ছুঁই ছুঁই অভিজ্ঞ ওপেনার আবিদ আলী প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। পরের ইনিংসে ৯১ রান করে আউট হয়েছে। অন্যদিকে তার সঙ্গে ২২ বছরের তরুণ ওপেনার আবদুল্লাহ শফিককে অভিষেক করানো হয়। তিনিও দুই ইনিংসে ফিফটি হাঁকিয়ে দলের আস্থার মান রাখেন। মূলত চট্টগ্রাম টেস্টে দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন দুই দলের ওপেনার ও পেসাররা। যেমন সফরকারীদের দুই ওপেনার তাদের জয়ের নায়ক। প্রথম ইনিংসে তাদের দুই ওপেনারের জুটিতে ১৪৬ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫১ রানের। সেখানে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিতে প্রথম ইনিংসে আসে ১৯ ও দ্বিতীয়টিতে ১৪ রান।
এ ছাড়াও সফরকারীদের দুই পেসার হাসান আলী ও শাহীন শাহ আফ্রিদি দুই ইনিংসে নিয়েছে ৭টি করে উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশে পেসার কোনো উইকেটই পাননি। তবে প্রথম ইনিংসে ইবাদত হোসেনের শিকার তিনটি। গতকাল চট্টগ্রাম টেস্টের ২০৩ রান তাড়ায় শেষ দিনে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল আর ৯৩ রান। দুই ঘণ্টার কম সময়ে তারা পৌঁছে যায় লক্ষ্যে। বাংলাদেশের শেষ দিনের প্রাপ্তি পাকিস্তানের দুই ওপেনারের উইকেট। শতরানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে এদিন খুব বড় হতে পারেনি। দুই ওপেনারের কেউ পাননি ব্যক্তিগত সেঞ্চুরিও। ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও আবিদ আলী থমকে যান ৯ রান দূরে। অভিষিক্ত আব্দুল্লাহ শফিক প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ফিফটি ছোঁয়ার পর যেতে পারেননি শতরান পর্যন্ত। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেকে সেঞ্চুরি করা শফিক টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও পারেননি। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান আবিদকে দ্বিতীয় ইনিংসে থামায় তাইজুলের দুর্দান্ত এক ডেলিভারি। পিচ করে সোজা স্কিড করে আসা বলে এলবিডব্লিউ তিনি ৯১ রানে। তাইজুলের পরের ওভারেই জীবন পান বাবর। এরপর বাকি পথটুকু অনায়াসেই পাড়ি দেন আজহার আলি ও বাবর। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়া আজহার দ্বিতীয় ইনিংসে একটু ব্যাটিং অনুশীলন সেরে নেন। পরের ম্যাচের আগে অনুশীলন ও গুছিয়ে নেয়ার খুব বেশি সুযোগ নেই বাংলাদেশের সামনে। দ্বিতীয় টেস্ট মিরপুরে শনিবার থেকে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status