বাংলারজমিন

কেন্দুয়ায় শিকলবন্দি নারী, চিকিৎসার অভাবে মিলছে না মুক্তি

কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি

৩০ নভেম্বর ২০২১, মঙ্গলবার, ৭:২৭ অপরাহ্ন

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় এক ভিখারিনীর কন্যা স্থানীয় ইউপি সদস্যের লালসার শিকার হয়ে বিচার না পেয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে শিকলবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। প্রয়োজনী চিকিৎসার অভাবে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে শিকলবন্দি মেয়েটির শারীরিক অবস্থা যেমন খারাপের দিকে যাচ্ছে, তেমনি  সুস্থ না হওয়ায় শিকলবন্দি অবস্থা থেকেও মিলছে না মুক্তি। এ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা বাসক এর কেন্দুয়া শাখার কর্মীরা প্রশাসনের নজরে আনলে গত ২৪শে সেপ্টেম্বর কেন্দুয়া থানার নওপাড়া ইউপি সদস্য হানিফ মিয়া ও সহায়তাকারী মহিলা ভরাপাড়া গ্রামের ললিতাকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতনসহ ধর্ষণ আইনে মামলা করেন নির্যাতিতার মা সখিনা বেগম।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বলাইশিমূল ইউপির ভরাপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র সখিনা দুই কিশোর ছেলে ও নির্যাতনে শিকার মেয়েটিকে নিয়ে রাস্তার পাশে একটি কুঁড়েঘর তুলে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রায় দুই বছর আগে মামলার ২নং আসামি ললিতার যোগসাজশে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হানিফ মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। পরে এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে গ্রাম্য সালিশে ৮ হাজার টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করেন এলাকার মাতব্বরা। এ ঘটনার পর থেকেই মেয়েটি ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। তাই পরিবারের লোকজন বাধ্য হয়ে তাকে এখন শিকলবন্দি করে রাখা হয়। মামলা দায়েরের পর পুলিশ  হানিফ ও ললিতাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। এদিকে অর্থাভাবে মেয়েটির সুচিকিৎসা করাতে পারছেন। মাথার যন্ত্রণার কারণে তাকে শিকলবন্দি করে রাখা হয়েছে। মেয়েটির মা সখিনা বলেন, আমি পাড়া-মহল্লায় ভিক্ষা করি আর মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাই। মেয়ের চিকিৎসা করাতে টাকা পাবো কোথা থেকে। বেঁধে না রাখলে সে বাড়িতে থাকে না। আমি সারাদিনের জন্য ভিক্ষা করতে চলে যাই। তাকে দেখবো কে? মেয়েটিকে সুস্থ করার জন্য বিত্তশালী ও মানবিক মানুষের সাহায্য প্রার্থনা করেন তিনি। বিষয়টি বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশন (বাসক) কেন্দুয়া শাখার সভাপতি শাহ আলী তৌফিক রিপন বলেন, চিকিৎসার অভাবে মেয়েটির শারীরিক অবস্থা দিনদিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করলেই রাগান্বিত হয়ে আবোল-তাবোল বলতে থাকে। মেয়েটির পাশে দাঁড়ানো জন্য নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও উপজেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। এ ব্যাপারে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মইনউদ্দিন খন্দকার বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি।  খুব শিগগিরই মেয়েটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। মেয়েটিকে ২টি কম্বল পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানান তিনি। কেন্দুয়া থানার ওসি কাজী শাহ নেওয়াজ জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই মামলা রুজু করে আসামিদের ধরে আদালতে সোপর্দ করি। মামলাটি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status