মত-মতান্তর
কাওরান বাজারের চিঠি
স্বজনহারাদের কান্নার শব্দ আগারগাঁওয়ে পৌঁছায় না!
সাজেদুল হক
২৯ নভেম্বর ২০২১, সোমবার, ১:৩৭ অপরাহ্ন
রক্তপাত এবং বিদ্রোহীদের বিস্ময়কর সাফল্য। এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এটাই এখন পর্যন্ত ট্রেডমার্ক। এ লেখার সময় পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, রোববারের নির্বাচনে সহিংসতায় একজন বিজিবি সদস্যসহ ৯ জন নিহত হয়েছেন।
তবে এ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কী বলা হয়েছে তাতে একবার চোখ বুলানো যাক। সহযোগী দৈনিক প্রথম আলো’র খবর অনুযায়ী, রোববার অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন একটি মডেল হতে পারে বলে মনে করেন ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। গত সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।’ সেসময় পর্যন্ত অবশ্য মৃত্যুর কোনো খবর না পাওয়ার কথাও জানান তিনি।
এরআগের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনগুলো নিয়ে আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার বক্তব্যও দেখেছি। ১৫ই নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি মন্তব্য করেন, নির্বাচনে সেরকম সহিংসতা হচ্ছে না। তার মতে, যেসব এলাকায় সহিংসতা হচ্ছে, এসব এলাকা আগে থেকেই সহিংসতা প্রবণ। ৩০শে ডিসেম্বরের বহুল আলোচিত নির্বাচন নিয়েও তার প্রতিক্রিয়া আমরা স্মরণ করতে পারি। সেসময় তিনি বলেছিলেন, ভোটে তিনি তৃপ্ত-সন্তুষ্ট। ভোটে কোনো অনিয়ম হয়নি। ভোটে তাঁরা লজ্জিত নন। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে।
এটা সত্য, নির্বাচনে সহিংসতা রোধ করা নির্বাচন কমিশনের একার দায়িত্ব নয়। এবং বহু ক্ষেত্রে সেটা সম্ভবও হয় না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কি সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। বিচারের ক্ষেত্রে বলা হয়, বিচার শুধু করলেই হবে না, তা যেন দৃশ্যমান হয়। নির্বাচন কমিশনের ক্ষেত্রে কি সেই চেষ্টা দৃশ্যমান হচ্ছে? সংবিধান অনুযায়ী, অন্য সব কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে বাধ্য। সংবিধান এও বলছে, ‘নির্বাচন কমিশন দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন এবং কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন হইবেন।’ নির্বাচন কমিশন কি স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করছে? পালনের চেষ্টা করছে? দুুঃখজনক হলেও সত্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে তাদের কখনও খুব একটা আগ্রহী মনে হয়নি। মানুষের জীবন নিয়েও নির্বাচন কমিশনকে খুব একটা বিচলিত দেখা যায় না। বরং ঘটনাগুলোর পক্ষে যুক্তি দাঁড় করাতেই ব্যস্ত সময় কাটে তাদের। যার যায় সেই বুঝে। স্বজনহারাদের কান্নার শব্দ হয়তো আগারগাঁওয়ে পৌঁছায় না।
চলমান ইউপি নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে না। কোথাও কোথাও দলটির নেতাকর্মীরা প্রার্থী হচ্ছেন। জয়ও পাচ্ছেন কেউ কেউ। কিন্তু মূল লড়াই হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও দলটির সমর্থক বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে। বিদ্রোহীদের একটি বিপুল অংশ জয়ীও হচ্ছেন। সমানতালে লড়ছেন তারা আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সঙ্গে। কিন্তু বিষয়টি শুধু ব্যালটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। শক্তিপ্রদর্শনের লড়াইতেও নামছেন তারা। হয়তো বড় বড় নেতাদের সমর্থনও ভাগ হয়ে যাচ্ছে। ভাগ হয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও সমর্থন। মাঝখান দিয়ে রক্তাক্ত হচ্ছে ব্যালট।
এটা সত্য মানুষের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির সর্বোত্তম মাধ্যম ব্যালট। কিন্তু রক্তাক্ত ব্যালট গণতন্ত্রের কোনো উজ্জ্বল ছবি নয়। আর মানুষের জীবনের চেয়ে মূল্যবানতো কিছুই নয়।
তবে এ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কী বলা হয়েছে তাতে একবার চোখ বুলানো যাক। সহযোগী দৈনিক প্রথম আলো’র খবর অনুযায়ী, রোববার অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন একটি মডেল হতে পারে বলে মনে করেন ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। গত সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।’ সেসময় পর্যন্ত অবশ্য মৃত্যুর কোনো খবর না পাওয়ার কথাও জানান তিনি।
এরআগের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনগুলো নিয়ে আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার বক্তব্যও দেখেছি। ১৫ই নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি মন্তব্য করেন, নির্বাচনে সেরকম সহিংসতা হচ্ছে না। তার মতে, যেসব এলাকায় সহিংসতা হচ্ছে, এসব এলাকা আগে থেকেই সহিংসতা প্রবণ। ৩০শে ডিসেম্বরের বহুল আলোচিত নির্বাচন নিয়েও তার প্রতিক্রিয়া আমরা স্মরণ করতে পারি। সেসময় তিনি বলেছিলেন, ভোটে তিনি তৃপ্ত-সন্তুষ্ট। ভোটে কোনো অনিয়ম হয়নি। ভোটে তাঁরা লজ্জিত নন। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে।
এটা সত্য, নির্বাচনে সহিংসতা রোধ করা নির্বাচন কমিশনের একার দায়িত্ব নয়। এবং বহু ক্ষেত্রে সেটা সম্ভবও হয় না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কি সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। বিচারের ক্ষেত্রে বলা হয়, বিচার শুধু করলেই হবে না, তা যেন দৃশ্যমান হয়। নির্বাচন কমিশনের ক্ষেত্রে কি সেই চেষ্টা দৃশ্যমান হচ্ছে? সংবিধান অনুযায়ী, অন্য সব কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে বাধ্য। সংবিধান এও বলছে, ‘নির্বাচন কমিশন দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন এবং কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন হইবেন।’ নির্বাচন কমিশন কি স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করছে? পালনের চেষ্টা করছে? দুুঃখজনক হলেও সত্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে তাদের কখনও খুব একটা আগ্রহী মনে হয়নি। মানুষের জীবন নিয়েও নির্বাচন কমিশনকে খুব একটা বিচলিত দেখা যায় না। বরং ঘটনাগুলোর পক্ষে যুক্তি দাঁড় করাতেই ব্যস্ত সময় কাটে তাদের। যার যায় সেই বুঝে। স্বজনহারাদের কান্নার শব্দ হয়তো আগারগাঁওয়ে পৌঁছায় না।
চলমান ইউপি নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে না। কোথাও কোথাও দলটির নেতাকর্মীরা প্রার্থী হচ্ছেন। জয়ও পাচ্ছেন কেউ কেউ। কিন্তু মূল লড়াই হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও দলটির সমর্থক বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে। বিদ্রোহীদের একটি বিপুল অংশ জয়ীও হচ্ছেন। সমানতালে লড়ছেন তারা আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সঙ্গে। কিন্তু বিষয়টি শুধু ব্যালটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। শক্তিপ্রদর্শনের লড়াইতেও নামছেন তারা। হয়তো বড় বড় নেতাদের সমর্থনও ভাগ হয়ে যাচ্ছে। ভাগ হয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও সমর্থন। মাঝখান দিয়ে রক্তাক্ত হচ্ছে ব্যালট।
এটা সত্য মানুষের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির সর্বোত্তম মাধ্যম ব্যালট। কিন্তু রক্তাক্ত ব্যালট গণতন্ত্রের কোনো উজ্জ্বল ছবি নয়। আর মানুষের জীবনের চেয়ে মূল্যবানতো কিছুই নয়।