দেশ বিদেশ

বাস মালিক সমিতির সঙ্গে সরকারের আঁতাত নিয়ে জিএম কাদেরের প্রশ্ন

সংসদ রিপোর্টার

২৯ নভেম্বর ২০২১, সোমবার, ১০:০৪ অপরাহ্ন

 বাস মালিক সমিতির সঙ্গে সরকারের আঁতাত আছে কিনা জানতে চেয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেন, পরিবহন সেক্টর আসলে কে নিয়ন্ত্রণ করছে? সরকার? সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ আছে এখানে? না কি মালিক-শ্রমিক সমিতি করছে? সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা কি এ খাতের নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করছেন? গতকাল জাতীয় সংসদের ১৫তম অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্যে এসব প্রশ্ন রাখেন তিনি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে তার বক্তৃতার সময়ে পাশে বসেছিলেন বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি এবং জাতীয় পার্টির দলীয় সংসদ সদস্য হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা। এ নিয়ে সরকারি দলের কেউ কেউ টিপ্পনি কাটেন। জাপা চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাসের মালিকরা বাসের ভাড়া বৃদ্ধির দাবি করতেই পারেন। এটা স্বাভাবিক। কিন্তু দেশব্যাপী মানুষ অমানবিক নির্যাতনের শিকার হলো। ডিজেলচালিত বাস চলাচল বন্ধ হলো। সেটা হতেই পারে, মানলাম। গ্যাসচালিত বাস বন্ধ হলো কেন? তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ বা সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া সারা দেশে পরিবহন বন্ধ হওয়া স্বাভাবিক নয়। আমাদের বিআরটিএ বলে একটা সংস্থা আছে। যাত্রীদের জিম্মি করে অঘোষিত ধর্মঘট ডেকে যারা দাবি আদায় করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, মালিক সমিতির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ নতুন ভাড়া নির্ধারণ করে। ডিজেলচালিত বাসের জন্য একটা আর গ্যাসের জন্য একটা। কিন্তু নেয়া হচ্ছে একই ভাড়া। একটা অনিয়মের চিত্র দেখা গেল। পত্রিকায় দেখলাম, যাত্রীরা সরকার নির্ধারিত ভাড়া দিয়ে যেতে চাইলে বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার দাবিকে যৌক্তিক আখ্যা দিয়ে সরকারকে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসার আহ্বান জানান তিনি। জ্বালানি তেলে মূল্য বৃদ্ধির সমালোচনা করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে মূল্য বৃদ্ধি খুব বেশি প্রয়োজন ছিল কি? আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে কমানো হয় না। কিন্তু বাড়লে বাড়ানো হয়। করোনার সময় আমরা সেটা করিনি। তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমবে বলে অনেকে মনে করছে। এটি দেশের বাজারে পুনঃনির্ধারণ করা উচিত। গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, আমাদের অনেক সংসদ সদস্য আছে, ১৫-২০-২৫ বছর ধরে আছেন। তারা সৎভাবে কাজ করেন। প্রশাসনের বা অনেক জায়গায় অবসরের পর আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। অনেক দেশে এমপিদের অবসর সহায়তা দেয়া হয়। আমাদের দেশে এ ধরনের ব্যবস্থা করার দাবি করছি। যারা সৎভাবে কাজ করতে চান, তারা মানবেতর জীবনে পড়বে না। তিনি বলেন, ভিআইপি লাউঞ্জ অবসরের পর কর্মকর্তারা ব্যবহার করেন। এমপিরা পারেন না। সচিবদের দেয়া হচ্ছে। অন্যদের দেয়া হচ্ছে। আর্মিদের দেয়া হচ্ছে। এমপিরা পান না। স্থানীয় সরকারে যারা আছেন, তাদেরকেও আর্থিক সহায়তা দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, দারিদ্র্যের হার বাড়ছে, বেকারত্বের হার বাড়ছে। খোলাবাজারে সব পণ্যের দাম বেড়েছে। কোনো যুক্তিসংগত কারণ চোখে পড়েনি। বাজারে কোনো নিয়ন্ত্রণ আছে বলে মনে হয় না। সাধারণ মানুষ কষ্টে দিন অতিবাহিত করছে। তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম নিয়ে অনেক দিন ধরে কথা বলছি। দুর্নীতি দূর হয়েছে, এমন মনে হচ্ছে না। সম্প্রতি কেনাকাটা সংক্রান্ত ১৭টি নথি গায়েব হয়ে গেল। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দেয়া হলো, ফাইল ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। দুর্নীতি ধামাচাপা দেয়া হয়েছে। যেখানে দুর্নীতি হয় সেখানে ফাইল গায়েব করে দিলে আর সাজা হয় না। ফাইল গায়েবে বোঝা যাচ্ছে, দুর্নীতি হচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status