প্রথম পাতা

পাকিস্তানের তৈরি, ভারতে পাচার

জাল রুপির ট্রানজিট পয়েন্ট বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার

২৮ নভেম্বর ২০২১, রবিবার, ৯:২৫ অপরাহ্ন

পাকিস্তানের দুই নাগরিক তৈরি করেন জাল রুপি। মার্বেল পাথরের কন্টেইনারে করে সেই রুপি আসে চট্টগ্রাম বন্দরে। পরে সেগুলো পৌঁছে যায় চক্রের বাংলাদেশি সদস্যদের কাছে। সেই সদস্যরা কৌশলে সেগুলো লুকিয়ে রাখে। সুযোগ-সুবিধামতো সেগুলো সীমান্ত দিয়ে পাচার করা হয় ভারতে। রাজধানীতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৭ কোটি ৩৫ লাখ ভারতীয় জাল রুপিসহ চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গুলশান বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ফাতেমা আক্তার অপি ও শেখ মো. আবু তালেব। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত ও ডেমরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, জাল রুপি তৈরি হয় পাকিস্তানে কিন্তু এর গন্তব্য ভারত। আর দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্রের হাত ধরে এই রুপি পাচারের রুট হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আসাদুজ্জামান বলেন, খিলক্ষেতের বনরূপা আবাসিক এলাকার মেইন গেটের সামনে একজন নারী ভারতীয় জাল রুপিসহ অবস্থান করছে এমন খবর আমাদের কাছে আসে। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে প্রথমে ফাতেমা আক্তার অপিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় অপির কাছ থেকে ৫০ হাজার ভারতীয় জাল রুপি উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে দক্ষিণখান থানার পণ্ডিতপাড়া এলাকার বাসায় অভিযান চালিয়ে আরও ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ভারতীয় জাল রুপি উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে ডেমরার সারুলিয়া এলাকা থেকে জালিয়াত চক্রের অপর সদস্য শেখ মো. আবু তালেবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিসি বলেন, গ্রেপ্তার ফাতেমা আক্তার অপি আন্তর্জাতিক সংঘবদ্ধ ভারতীয় জাল মুদ্রা পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। সে দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান থেকে আন্তর্জাতিক চক্রের মাধ্যমে ভারতীয় জাল মুদ্রা কৌশলে সংগ্রহ করে দেশীয় চক্রের মাধ্যমে বিপণনসহ ভারতে পাচার করতো। গত ২৩শে নভেম্বর গ্রেপ্তার তালেব উদ্ধারকৃত ভারতীয় জাল মুদ্রা ফাতেমা আক্তার অপির কাছে হস্তান্তর করে। তালেব পাকিস্তানি নাগরিক সুলতান ও শফির মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত মার্বেল পাথরের ৫০০টি বস্তার মধ্যে গোলাপি সুতা দ্বারা চিহ্নিত ৯৫টি বস্তার মধ্যে সুকৌশলে ভারতীয় জাল মুদ্রা শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে চক্রটি এই কারবারের সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে ডিসি আসাদুজ্জামান বলেন, ফাতেমাও পাকিস্তানি নাগরিক সুলতান ও শফির কাছ থেকে এসব জাল মুদ্রা সংগ্রহ করতো। ফাতেমা ও তালেব এসব জাল রুপি ঢাকার বাসার পানির ট্যাংকির নিচে বিশেষ কৌশলে লুকিয়ে রাখতো। পরে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে সুযোগ-সুবিধামতো ভারতে পাচার করে দিতো।
ডিসি বলেন, ফাতেমা আক্তার অপির স্বামী দানেশ পাকিস্তানি নাগরিক। অসুস্থ হয়ে তিনি এখন বাসায় থাকেন। তাকে কয়েক বছর আগে ডিবি মতিঝিল বিভাগ গ্রেপ্তার করেছিল। তার নামে দুটি মামলাও আছে। এছাড়া আবু তালেবের পাকিস্তানে যাতায়াত ছিল। স্বামী পাকিস্তানি হওয়াতে ফাতেমাও অনেকবার পাকিস্তান গেছে। তার নামেও মামলা আছে। পাকিস্তান যাওয়ার সূত্রেই অপি ও তালেবের সঙ্গে জাল রুপি চক্রের হোতা সুলতান ও শফির পরিচয় হয়। লোভে পড়ে তারাও এ চক্রে জড়িয়ে পড়ে। গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় আসামিদের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে এনে তাদেরকে আরও বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জাল রুপি অভিযানে নেতৃত্ব দেন গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম ও সহকারী পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবির।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status