অনলাইন
ময়লার গাড়ি চাপায় সংবাদকর্মীর মৃত্যু
চালক ছিলেন মেকানিক, চুরি করতেন দিনে ২০ লিটার তেল
স্টাফ রিপোর্টার
২৭ নভেম্বর ২০২১, শনিবার, ৩:৩৭ অপরাহ্ন
রাজধানীর পান্থপথে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ময়লাবাহী গাড়ির চাপায় সংবাদকর্মী আহসান কবীর খাঁন (৪৬) নিহত হওয়ার ঘটনায় চালক হানিফ ওরফে ফটিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার চাঁদপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-২। হানিফ তেল চুরির বিনিময়ে সিটি করপোরেশনের গাড়ি চালাতেন। প্রতিদিন ১৭ থেকে ২০ লিটার তেল চুরি করতেন।
শনিবার কাওরান বাজার মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মলনে এসব কথা বলেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, বৃৃহস্পতিবার চালক হানিফ পান্থপথ থেকে গাবতলীতে দুইবার ময়লা নিয়ে ডাম্পিং করে। তৃতীয়বার যাওয়ার সময় একটি মোটরসাইকেলকে চাপা দিলে আরোহী আহসান কবীর নিহত হন। ঘটনার পর ভয় পেয়ে হানিফ ও তার সহকারী কামরুল (১০) ভয়ে পালিয়ে যায়। এরপর সেখান থেকে কুমিল্লা হয়ে চাঁদপুরে নানার বাড়িতে আত্মগোপনে যায় হানিফ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-২ হানিফকে ধরতে দেশের বিভিন্নস্থানে অভিযান চালায়। এরপর চাঁদপুর থেকে হানিফকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেপ্তার হানিফকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানায়, তিনি গত ৬-৭ বছর ধরে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্কশপে সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ডিএনসিসির বেতনভুক্ত বা দৈনিক মজুরিভিত্তিকও কর্মচারী না। প্রতিদিন মেকারের সহকারি হিসেবে কাজ করলে কেউ যা বকশিস দিতো, সেটাই তার একমাত্র আয় ছিল। এর বাইরে গত ৩ বছর ধরেই তিনি ডিএনসিসির বিভিন্ন গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ২০১৯ সালে নিজে হালকা যানবাহন পরিচালনার লাইসেন্স পেলেও ময়লাবাহী ট্রাকের মতো ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ছিলো না। এরপরেও গত প্রায় দেড় বছর ধরে তিনি এই ময়লাবাহী ভারী ট্রাক চালাতেন।
র্যাব জানায়, গত কয়েক বছরে সিটি করপোরেশনের কয়েকজনের সঙ্গে তার সখ্যতা হয়। সেই সখ্যতা থেকেই তিনি গাড়ি চালানোর জন্য পেয়ে যান। এজন্য তিনি কোন মাসিক বা দৈনিক হাজিরার বেতন পেতেন না। তবে গাড়ির জন্য বরাদ্দকৃত তেল থেকে প্রতিদিন ১৭-২০ লিটার তেল বাঁচাতে সক্ষম হতেন তিনি। সেই তেল বিক্রির অর্থই ছিলো তার আয়ের উৎস।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হানিফ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমাদের কাছে ২-১ জনের কথা বলেছে। যাদের সঙ্গে সখ্যতার জেরে তিনি গাড়িটি চালানোর জন্য পান। এর মধ্যে ডিএনসিসির স্থায়ী কর্মী এবং মাস্টার রোলের কর্মীও রয়েছে। আমরা বিষয়গুলো যাচাই বাছাই করতে ডিএনসিসির সঙ্গে আলোচনা করবো। তারা নিশ্চই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় রাজধানীর কলাবাগান থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেপ্তার হানিফকে থানায় সোপর্দ করা হবে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাও বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবেন।
সম্প্রতি সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী গাড়ির চাপায় দুইজন নিহতের ঘটনায় ব্যপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনায় জড়িত চালকদের কেউই পেশাদার বা করপোরেশন নির্ধারিত চালক নয়। করপোরেশনের ২-১ জনের যোগসাজশে ময়লাবাহী গাড়ি চালাতেন তারা, আর তাদের আয় বলতে ছিল তেলচুরির অর্থ।
জড়িত চালকদের গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং ওয়ার্কশপের সহকারী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গেই তাদের ঘনিষ্ঠতা হয়। এ সুযোগে তারা ময়লাবাহী গাড়ি চালানোর সুযোগ পায়। এজন্য তাদের কোন বেতন ছিলনা, প্রতিদিন গাড়ির জন্য বরাদ্দকৃত তেল থেকে ১৭-২০ লিটার তেল বিক্রি করাই ছিল তাদের উপার্জন।
গত ২৪ নভেম্বর রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লবাহী গাড়ির ধাক্কায় নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান নিহত হন। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে চালক রাসেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, যিনি ছিলেন প্রকৃতপক্ষে পরিচ্ছন্নতাকর্মী। পরে শুক্রবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে মূলচালক হারুনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩।
নটর ডেম শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ডিএসসিসির ময়লাবাহী গাড়িচালক গ্রেপ্তার হারুনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত দেড় বছর ধরে হারুন গাড়িটি চালালেও তার নামেও গাড়িটি বরাদ্দ নয়। সেও মূল চালক নয়, তার কাছে আমরা লাইসেন্স পাইনি। ঘটনার দিন সে অসুস্থ্য ছিল বলে দাবি করেছে, তাই রাসেলকে সেদিন চালাতে দিয়েছিল বলে জানিয়েছে।
কিন্তু সেদিন ছাড়াও রাসেলকে মাঝে-মধ্যে গাড়ি চালাতে দিতেন হারুন। রাসেল যখন অ্যাক্সিডেন্ট করে তখন অন্যদের মাধ্যমে খবর পায়। পরে সে ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়। সেও গাড়ি চালনোর জন্য ডিএসসিসির কাছ থেকে কোন বেতন পেতেন না। বেচে যাওয়া তেল বিক্রিই তার একমাত্র আয় ছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তাররা জানেনা গাড়িগুলো কার নামে বরাদ্দ। তবে হানিফের কাছ থেকে আমরা ২-১ জনের নাম পেয়েছি। বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাবো। তারা হয়তো এ বিষয়ে বলতে পারবে। প্রতিদিন গাড়ির জন্য বরাদ্দকৃত তেল পুরোটা খরচ হয় না, বেচে যাওয়া তেল বিক্রি করেই তাদের আয়।
শনিবার কাওরান বাজার মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মলনে এসব কথা বলেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, বৃৃহস্পতিবার চালক হানিফ পান্থপথ থেকে গাবতলীতে দুইবার ময়লা নিয়ে ডাম্পিং করে। তৃতীয়বার যাওয়ার সময় একটি মোটরসাইকেলকে চাপা দিলে আরোহী আহসান কবীর নিহত হন। ঘটনার পর ভয় পেয়ে হানিফ ও তার সহকারী কামরুল (১০) ভয়ে পালিয়ে যায়। এরপর সেখান থেকে কুমিল্লা হয়ে চাঁদপুরে নানার বাড়িতে আত্মগোপনে যায় হানিফ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-২ হানিফকে ধরতে দেশের বিভিন্নস্থানে অভিযান চালায়। এরপর চাঁদপুর থেকে হানিফকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেপ্তার হানিফকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানায়, তিনি গত ৬-৭ বছর ধরে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্কশপে সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ডিএনসিসির বেতনভুক্ত বা দৈনিক মজুরিভিত্তিকও কর্মচারী না। প্রতিদিন মেকারের সহকারি হিসেবে কাজ করলে কেউ যা বকশিস দিতো, সেটাই তার একমাত্র আয় ছিল। এর বাইরে গত ৩ বছর ধরেই তিনি ডিএনসিসির বিভিন্ন গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ২০১৯ সালে নিজে হালকা যানবাহন পরিচালনার লাইসেন্স পেলেও ময়লাবাহী ট্রাকের মতো ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ছিলো না। এরপরেও গত প্রায় দেড় বছর ধরে তিনি এই ময়লাবাহী ভারী ট্রাক চালাতেন।
র্যাব জানায়, গত কয়েক বছরে সিটি করপোরেশনের কয়েকজনের সঙ্গে তার সখ্যতা হয়। সেই সখ্যতা থেকেই তিনি গাড়ি চালানোর জন্য পেয়ে যান। এজন্য তিনি কোন মাসিক বা দৈনিক হাজিরার বেতন পেতেন না। তবে গাড়ির জন্য বরাদ্দকৃত তেল থেকে প্রতিদিন ১৭-২০ লিটার তেল বাঁচাতে সক্ষম হতেন তিনি। সেই তেল বিক্রির অর্থই ছিলো তার আয়ের উৎস।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হানিফ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমাদের কাছে ২-১ জনের কথা বলেছে। যাদের সঙ্গে সখ্যতার জেরে তিনি গাড়িটি চালানোর জন্য পান। এর মধ্যে ডিএনসিসির স্থায়ী কর্মী এবং মাস্টার রোলের কর্মীও রয়েছে। আমরা বিষয়গুলো যাচাই বাছাই করতে ডিএনসিসির সঙ্গে আলোচনা করবো। তারা নিশ্চই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় রাজধানীর কলাবাগান থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেপ্তার হানিফকে থানায় সোপর্দ করা হবে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাও বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবেন।
সম্প্রতি সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী গাড়ির চাপায় দুইজন নিহতের ঘটনায় ব্যপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনায় জড়িত চালকদের কেউই পেশাদার বা করপোরেশন নির্ধারিত চালক নয়। করপোরেশনের ২-১ জনের যোগসাজশে ময়লাবাহী গাড়ি চালাতেন তারা, আর তাদের আয় বলতে ছিল তেলচুরির অর্থ।
জড়িত চালকদের গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং ওয়ার্কশপের সহকারী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গেই তাদের ঘনিষ্ঠতা হয়। এ সুযোগে তারা ময়লাবাহী গাড়ি চালানোর সুযোগ পায়। এজন্য তাদের কোন বেতন ছিলনা, প্রতিদিন গাড়ির জন্য বরাদ্দকৃত তেল থেকে ১৭-২০ লিটার তেল বিক্রি করাই ছিল তাদের উপার্জন।
গত ২৪ নভেম্বর রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লবাহী গাড়ির ধাক্কায় নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান নিহত হন। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে চালক রাসেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, যিনি ছিলেন প্রকৃতপক্ষে পরিচ্ছন্নতাকর্মী। পরে শুক্রবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে মূলচালক হারুনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩।
নটর ডেম শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ডিএসসিসির ময়লাবাহী গাড়িচালক গ্রেপ্তার হারুনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত দেড় বছর ধরে হারুন গাড়িটি চালালেও তার নামেও গাড়িটি বরাদ্দ নয়। সেও মূল চালক নয়, তার কাছে আমরা লাইসেন্স পাইনি। ঘটনার দিন সে অসুস্থ্য ছিল বলে দাবি করেছে, তাই রাসেলকে সেদিন চালাতে দিয়েছিল বলে জানিয়েছে।
কিন্তু সেদিন ছাড়াও রাসেলকে মাঝে-মধ্যে গাড়ি চালাতে দিতেন হারুন। রাসেল যখন অ্যাক্সিডেন্ট করে তখন অন্যদের মাধ্যমে খবর পায়। পরে সে ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়। সেও গাড়ি চালনোর জন্য ডিএসসিসির কাছ থেকে কোন বেতন পেতেন না। বেচে যাওয়া তেল বিক্রিই তার একমাত্র আয় ছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তাররা জানেনা গাড়িগুলো কার নামে বরাদ্দ। তবে হানিফের কাছ থেকে আমরা ২-১ জনের নাম পেয়েছি। বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাবো। তারা হয়তো এ বিষয়ে বলতে পারবে। প্রতিদিন গাড়ির জন্য বরাদ্দকৃত তেল পুরোটা খরচ হয় না, বেচে যাওয়া তেল বিক্রি করেই তাদের আয়।