ইতিহাস থেকে
ডাক মাশুল ও সিলমোহর প্রবর্তন যেভাবে-
শামীমুল হক
৪ নভেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৫:৪৪ অপরাহ্ন
১৬৮০ সালে লন্ডনে একটি বেসরকারি ডাক-ব্যবস্থার কথা জানা যায়, তবে এ ডাক-ব্যবস্থা লন্ডন ও ওয়েস্টমিনস্টার শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এর আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল, দিনের চিঠি দিনেই প্রাপকের কাছে বিলি করা। এ সময়ে ডাক-সামগ্রীতে ব্যবহারের জন্য ত্রিকোণাকৃতির আর একটি ‘পেনি পোস্ট পেইড’- সিলমোহর প্রবর্তন করা হয়। এ সিলমোহরে ডাক বাছাই কেন্দ্রের কোড নম্বর দেয়া থাকতো। কোড নম্বরের ভিত্তিতে সংগৃহীত ডাক নিকটবর্তী ডাক বাছাই কেন্দ্রে নিয়ে তা দ্রুত বাছাই করে ওইদিনই বিলি করা হতো। যুগান্তকারী এ ব্যবস্থার প্রবর্তক ছিলেন উইলিয়াম ডাকওয়ারা। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় রাজা চার্লস (১৭১০)-এর সময় প্রতিটি পত্র, প্যাকেট বা পার্শ্বেল এর ওপর দূরত্ব অনুসারে ডাক মাশুল প্রাপকের কাছ থেকে আদায় করা হতো। ১৭৮৪ সালে ডাক পরিবহনের জন্য ডাক গাড়ির প্রচলন করে বৃটিশ সরকার। এতে ডাক ব্যবস্থার যুগান্তকারী পরিবর্তন হয় এবং বৃটিশ জনগণ এ ব্যবস্থার সুফল ভোগ করতে থাকে। বৃটিশ ডাক ব্যবস্থার আর একজন সংস্কারক ছিলেন জন পালমার তিনি বাথ শহরের এক থিয়েটারের ম্যানেজার ছিলেন। তিনি লক্ষ্য করলেন যে, বাথ শহর থেকে সোমবার বিকাল ৪টায় যে চিঠি বেসরকারি ডাকে পোস্ট করা হয় লন্ডনে সেই চিঠি পৌঁছায় পরের দিন সকালে, কিন্তু সরকারি ডাকে সেই চিঠি পৌঁছায় বুধবার দুপুরের পর। ধীরগতির ঘোড়ায় চড়ে যে সরকারি ডাক পরিবহন করা হতো তার পরিবর্তে তিনি দ্রুত হালকা ও সশস্ত্র কোচযোগে ডাক পাঠানোর ওপর জোর দেন এবং ডাক মাশুলের হার বৃদ্ধিরও প্রস্তাব করেন। তিনি ৮০ মাইলের পরিবর্তে ২০ মাইলের ভিত্তিতে ডাক মাশুল নির্ধারণের প্রস্তাব করেন। পালমারের কিছু বন্ধু ছিল সরকারের উঁচু পর্যায়ে। তার বন্ধু উইলিয়াম পিট তখন অর্থ দপ্তরে দায়িত্বে ছিলেন। তার কাছেই পালমার পরিকল্পনা পেশ করেন এবং তিনি তা অনুমোদন করেন। তার এ প্রস্তাব পাসের পর পোস্ট অফিসের ভেতরেই আপত্তি ওঠে। পোস্ট অফিসেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ মনে করেন, এর ফলে তাদের আয় কমে যাবে। কিন্তু পালমার ছিলেন যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। তিনি দাবি করলেন, তার পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি ডাক আদান-প্রদান করা হয় তবে প্যাসেঞ্জার স্টেজ কোচ সার্ভিস তার কোচের কাছে টিকতে পারবে না।
(চলবে)
(চলবে)