অনলাইন

নিহত ছাত্রীর পাশে আহত সেই যুবকের মৃত্যু

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

২০২১-১০-২৮

টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গায় স্কুল ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার হত্যার ঘটনায় আটকৃত মনিরের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাতাপাতালে মৃত্যু হয়। এর আগে গতরাত সাড়ে ৮ টার দিকে হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন হিসাবে তাকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আটক করে র‌্যাব। বিষয়টি দুপুরে র‌্যাব ১২ এর টাঙ্গাইল সিপিসি ৩-র কোম্পানী কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. আবদুল্লাহ আল মানুম নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নিহত সুমাইয়া আক্তার এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ও উপজেলার পালিমা গ্রামের ফেরদৌসের মেয়ে। মনির উপজেলার মশাজান গ্রামের মেহের আলীর ছেলে। বুধবার সকালে সাড়ে ছয়টার দিকে কোচিং সেন্টারে যাওয়ার পথে খুন হন সুমাইয়া।

র‌্যাব কমান্ডার জানান, বুধবার দিনভর গোয়েন্দা তথ্য ও বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ এবং হত্যার আগের নানা ঘটনা পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে মনির জড়িত। পুলিশের কাছে জব্দকৃত হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি মনিরের। এই ছুরি হাতেই নানা কসরত করা অবস্থার বেশ কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রেম সংক্রান্ত বিষয়ে সুমাইয়ার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মনিরের বিভিন্ন বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে তাদের প্রেম সংক্রান্ত বিষয় ও সম্প্রতি সম্পর্ক না থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এই বিষয়ে তিনি আরো বলেন, সুমাইয়া ও মনির পূর্ব পরিচিত। বিভিন্ন সময় মনির সুমাইয়ার সাথে শারীকি সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করে। এতে সাড়া না পেয়ে বল প্রয়োগ ও মানসিক চাপে রাখতো মনির। এ থেকেই তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। পরে কয়েক মাস আগে সুমাইয়া মনিরের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। এতে মনিরের সন্দেহ হয় সুমাইয়া অন্যকারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে। এজন্য ঘটনার পাঁচ দিন আগে সুমাইয়াকে কানে আঘাত করে আহত করে মনির। এ ঘটনা ভিডিও করে বন্ধুদের দেখায়। এরপরেও সুমাইয়া তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। সেই থেকে ক্ষুব্ধ হয় মনির। পরিকল্পনা করে খুন করে আত্মঘাতী হবার। এ বিষয়টিও বিভিন্ন সময় মাদক গ্রহণ শেষে তার বন্ধুদের কাছে জানায়। এ হত্যাকাণ্ডের আগের রাতে ঘাতক মনির প্রচুর পরিমান মাদক গ্রহণ করে। নানা তথ্য উপাত্ত ও ভিডিও ফুটেজ থেকে তা নিশ্চিত হওয়ার দাবিও করেছেন তিনি।

তিনি আরো জানান, এই ঘটনার সঙ্গে আরো কেউ জড়িত কি’না তাও তদন্ত করা হচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে সুমাইয়াকে হত্যা করে সেও আত্মঘাতী হবার চেষ্টা করে। প্রাথমিকভাবে আঘাতের চিহ্ন বা ধরণ দেখে মনে হয়েছিলো তৃতীয় কোন পক্ষ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। পরে হত্যাকাণ্ডের ব্যবহৃত ছুরিটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তা একটি গিয়ার ছুরি। যেটির সুইচ চাপলে বাটের দুই দিকেই সমান অংশ বের হয়। তাই পেটে ছুরি চালাতে গিয়ে ছুরির অপর অংশ ঘাড়ে আঘাত লাগতে পারে।

এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এলেঙ্গা পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকার খোকনের নির্মাণাধীন বাড়ির নীচতলার সিঁড়িকোঠা থেকে সুমাইয়ার মরদেহ ও আহত অবস্থায় মনিরকে উদ্ধার করা হয়।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status