বাংলারজমিন
সেই বৃদ্ধা মাকে বাড়িতে নিলেন সন্তানরা
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
২৭ অক্টোবর ২০২১, বুধবার, ৮:১৭ অপরাহ্ন
ঢাকার ধামরাইয়ে রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধারকৃত সেই বৃদ্ধ মাকে বাধ্য হয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকারসহ সুপ্রতিষ্ঠিত সন্তানরা আশ্রয়স্থল থেকে ঘরে তুলেছেন। গত সোমবার বিকালে পুলিশের ভয়ে বৃদ্ধার ৩ ছেলে এসে তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানা গেছে, ধামরাইয়ের কুশুরা ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের বৃদ্ধ মরিয়ম বেগমের ৮ সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে আক্তার হোসেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। অন্য ছেলেদের মধ্যে আবদুল্লাহ বাকী ব্যবসায়ী, সাখাওয়াত হোসেন সাকি গার্মেন্ট ব্যবসায়ী, ছোট ছেলে ডাক্তার হুমায়ূন কবির শিশু বিশেষজ্ঞ (বিসিএস), জাহাঙ্গীর হোসেন ব্যবসায়ী এবং আলমগীর হোসেন প্রবাসী। প্রবাসী আলমগীর হোসেন ছাড়া অন্য ৫ ছেলে তাদের পরিবার নিয়ে থাকেন ঢাকায়। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। তাদের অবস্থাও মোটামুটি ভালো। কারও সংসারে অভাব অনটন নেই। শুধু বৃদ্ধ মাকে ভরণপোষণ করতে যেন তাদের অভাবের শেষ নেই। প্রত্যেকের ঘরেই আছে শান্তির সুবাতাস। কিন্তু মায়ের অন্তর জ্বালা-যন্ত্রণা আর অশান্তিতে ভরপুর। খেয়ে না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় দিনাতিপাত করছেন এই শতবর্ষী মরিয়ম বেগম। ক্ষুধার যন্ত্রণায় ছটফট করে প্রতিনিয়ত। কোনো ছেলে কিংবা মেয়ের ঘরে আশ্রয় হয়নি শতবর্ষী মরিয়ম বেগমের। কয়েকদিন আগে নিজ বাড়ি থেকে একা একা বের হন মরিয়ম। বৃদ্ধা মরিয়ম বয়সের ভারে ন্যুব্জ হলেও বাড়ি থেকে বের হয়ে বঙ্গবাজারের পাশে রাস্তায় পড়ে গিয়ে হাতে আঘাত পান। পরে ছেলে-মেয়েরা খবর না রাখায় গ্রামবাসী তাকে রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় আব্দুল লতিফের বাড়িতে নিয়ে যান। আব্দুল লতিফ তাকে সেবা ও চিকিৎসা করান। এ ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকরা বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করলে পুলিশসহ প্রশাসনের নজরে আসে। পুলিশ আশ্রয় দাতা আব্দুল লতিফ মিয়ার বাড়িতে যান এবং ঘটনার সত্যতা পান। এ খবর পেয়ে বৃদ্ধার ছেলে জাহাঙ্গীর কবির, ডাক্তার হুমায়ন কবির ও আলমগীর কবির সোমবার বিকালে আব্দুল লতিফ মিয়ার বাড়িতে গিয়ে মাকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। এ সময় মা সন্তানদের দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন।